বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কোভিড ফিল্ড হাসপাতালের উদ্বোধন হয়েছে। শনিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি জানান, প্রথমে ৩৫৭ শয্যা নিয়ে হাসপাতালটি চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করলেও পর্যায়ক্রমে তা ১ হাজার শয্যায় উন্নীত করা হবে। এ সময় চীন থেকে সিনোফার্মের মোট সাড়ে সাত কোটি ডোজের টিকা আসবে বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের দেড় কোটি ডোজ টিকার চুক্তি হয়েছে। এরইমধ্যে তারা টিকা পাঠানোও শুরু করেছে। আমরা চীন থেকে আরও ছয় কোটি ডোজ টিকা আনতে চুক্তি করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাহিদ মালেক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সার্বিক সহযোগিতায় নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ২০ দিনের মাথায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কোভিড ফিল্ড হাসাপাতাল চালু করা হলো। তিনি বলেন, হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির চাইতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য এর উৎস স্থান সমূহে নজরদারি বাড়াতে হবে। জনগণকে তাদের জীবন রক্ষার জন্য মাস্ক পরাসহ সকল ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করতে হবে।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সারাদেশের মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। চীন থেকে ছয় কোটি ডোজ টিকার মধ্যে দুই কোটি ডোজ করে অক্টোবর ও নবেম্বর মাসে চার কোটি ডোজ আসবে। এর আগেও আসবে, তবে কিছুটা কম করে। আগস্টে কিছুটা কম টিকা আসবে। ফিল্ড হাসপাতাল প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, এ ফিল্ড হাসপাতালটি আপাতত ৩৫৭টি শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছে। এরমধ্যে ৪০টি আইসিইউ, বাকিগুলোতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, করোনা চিকিৎসার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা এই ফিল্ড হাসপাতালে আছে। তবে সব রোগীকে এখানে ভর্তি করা হবে না। নতুন রোগী ও মুমূর্ষু রোগীরা এখানে আসবে, তাদের চিকিৎসা দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা মহামারী মোকাবেলায় ইতোমধ্যে ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রম, করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কার্যক্রম, কেবিন ব্লক ও বেতার ভবনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ অতিক্রম করছে। ভারতের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সমগ্র দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। দিন দিন রোগীর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা হিসেবে জীবন বাজি রেখে নিরলসভাবে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয় করোনা মহামারী মোকাবেলায় সরকারের সঙ্গে সমান তালে কাজ করে যাচ্ছেন।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুদীর্ঘ সংগ্রামী জীবনের অনন্য সাধারণ সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের সমর্থন ও নিঃস্বার্থপর সহযোগিতা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনসহ সকল অর্জনের প্রধান শক্তি হিসেবে কাজ করেছে বঙ্গবন্ধুর জীবন সঙ্গিনী হিসেবে বঙ্গমাতার আজীবন ত্যাগী মানসিকতা, বঙ্গবন্ধুকে সমর্থন দিয়ে যাওয়া ও সহযোগিতা করা। বঙ্গমাতার জন্মদিনকে সামনে রেখে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জীবন রক্ষার্থে চালু করা হলো বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন সেন্টারে কোভিড ফিল্ড হাসপাতাল। এই হাসপাতালটি চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে করোনা মহামারীর এই দুঃসময়ে হাজার হাজার রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।