বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক :বাংলাদেশের ইতিহাসের মর্মান্তিকতম ঘটনা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার বিচার হলেও এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ষড়যন্ত্রকারী, দেশীয় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিত নিয়ে কোনো তথ্য উদঘাটিত হয়নি। একটি সাধারণ হত্যাকাণ্ডের মতো এই নৃশংসতম ঘটনার বিচার হলেও এর নেপথ্যের বিষয়গুলো কার্যত উপেক্ষিত থেকে গেছে। দীর্ঘ সময় পরে হলেও বাংলাদেশের জাতির পিতাকে হত্যার দেশীয় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ও প্রেক্ষিতের দিকটি উদঘাটন করার জন্য এক ধরনের দাবি রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। যেহেতু রাষ্ট্রের নির্মাতাকে এরকম একটি নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের যাত্রা শুরুর মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় হত্যা করা হয়েছে, ফলে এই ঘটনার পেছনের দেশীয় রাজনৈতিক মদতদাতা ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচিত হওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশের জন্মলগ্নের ৫০ বছর পরে এই প্রশ্নটি উচ্চারিত হওয়াই স্বাভাবিক এবং এরকম একটি আকাক্সক্ষার পেছনে যথেষ্ট যুক্তিও রয়েছে।
ইতিহাসের জঘন্যতম একটি ঘটনা নিয়ে উত্থাপিত বিষয় অমীমাংসিত রেখে সমাজের অগ্রযাত্রা নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে বাধ্য।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সংগঠিত এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পরপরই এরকম একটি নজিরবিহীন ঘটনার বিচারকাজ আইন করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল এবং সেটি হয়েছিল একটি অবৈধ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। পৃথিবীর যে কোনো সভ্য রাষ্ট্রে যে কোনো অপরাধের জন্য প্রত্যেক নাগরিকের বিচার পাওয়ার অধিকার
রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে জাতির পিতাকে হত্যার বিচারের পথ রুদ্ধ করা হয়েছিল একটি কুখ্যাত অধ্যাদেশ জারি করে। সভ্যতার ইতিহাসে এটা অত্যন্ত নজিরবিহীন একটি ঘটনা। একজন রাষ্ট্রপ্রধানকে হত্যার জন্য যারা দায়ী, তাদের কোনো বিচার করা যাবে না- পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নজির হয়তো নেই। ফলে এই হত্যাকাণ্ড এবং খুনিদের রেহাই দেয়ার মধ্য দিয়ে একটি চক্রান্তকারী গোষ্ঠী যে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিল, সেটা স্পষ্টতই প্রমাণিত হয় এবং এটাও বাস্তবতা যে এই চক্রান্ত কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ বা কোনো একটি ছোট শক্তির পক্ষে সম্ভব ছিল না। এর পেছনে বড় দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা জড়িত ছিল এবং এই সত্যটা হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী বাস্তবতাই স্পষ্ট করে দিয়েছে। যেসব দেশ বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের পরে স্বীকৃতি দেয়নি, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর স্বীকৃতি দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড পরবর্তী সরকারকে তারা নানা সহায়তা দিয়েছে। ফলে বোঝা যায়, এই ষড়যন্ত্র একদিনে হয়নি। পুরো হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি একটি দীর্ঘ সময় নিয়ে করা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক চক্রের সুকৌশলী চক্রান্তের ফসল।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের খুনিদের বিচার বন্ধ করতে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল হত্যাকাণ্ড পরবর্তী খন্দকার মোশতাক আহমেদের অবৈধ সরকার এবং এই অধ্যাদেশকে আইনি বৈধতা দেয়া হয়েছিল খন্দকার মোশতাকের উত্তরসূরি সেনাশাসক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ১৯৭৯ সালের পার্লামেন্টে। সেনাশাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান, স্বৈরাচারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামল ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের জন্য অনুকূল সময়। তারা সেই সময় রাষ্ট্রের আশ্রয়-প্রশ্রয় পেয়েছে। রাজনৈতিক দল গঠন করেছে, এমনকি জাতীয় সংসদের আসন পর্যন্ত তারা দখল করতে সক্ষম হয়েছে। তাদের এই কর্মকাণ্ডে দেশীয় শাসকগোষ্ঠীর সহযোগিতা যেমন ছিল, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গোষ্ঠীর সমর্থনও ছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে একটি বৈরী সময়কে বিচার উপযোগী করে তৈরি করার জন্য দীর্ঘ সময় নিতে হয়েছিল।
১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬- এই দীর্ঘ ২১ বছরে তৎকালীন সরকারগুলোর পৃষ্ঠপোষকতায় বঙ্গবন্ধুর খুনিরা দেশে এবং বিদেশে অনেকখানি শিকড় গেড়ে বসেছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করা ও একটি গ্রহণযোগ্য বিচারের কাজ শুরু করাই ছিল প্রধান চ্যালেঞ্জ। ফলে বাস্তবিক অর্থে এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রাজনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিতের দিকটি সেইভাবে গুরুত্বের সঙ্গে উঠে আসেনি। অনেকেই মনে করেন, কোনো বিতর্ক সৃষ্টির যাতে সুযোগ তৈরি না হয়, সেজন্য আওয়ামী লীগ একটি সাধারণ হত্যাকাণ্ডের মতো প্রচলিত প্রক্রিয়ায় বিচার কাজটি করতে চেয়েছিল। ফলে দীর্ঘ সময় নিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের কাজটি সম্পন্ন হলেও এর দেশীয় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিতের দিকটি বিচারের অনুসন্ধানের মধ্যে উঠে আসেনি এবং বিচারকাজেও এই দুটি বিষয় প্রাধান্য পায়নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও দেশীয় রাজনীতিতে যে ধরনের পরিবর্তন চলে এসেছে, তাতে এই ধরনের একটি অনুসন্ধানী প্রত্যাশার মধ্যে যথেষ্ট যুক্তিগ্রাহ্যতা রয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরপরই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দেশগুলোর উল্লাস এবং মুক্তিযুদ্ধের মৌল চেতনাকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য দেশীয় রাজনীতির যে মেরুকরণ ঘটেছে, তাতে অবশ্যই এই দুটি বিষয়কে সামনে রেখে একটি তদন্ত হওয়া জরুরি। বাংলাদেশের কোন কোন রাজনৈতিক শক্তি গোপনে গোপনে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের চক্রান্তে ইন্দন দিয়েছে বা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিল এবং দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা হত্যাকারীদের দিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের জাল কিভাবে বিস্তার করেছিল-তা উদঘাটিত হওয়া প্রয়োজন।
সত্তরের দশকে বিশ্বজুড়ে স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে একান্তভাবে নিজস্ব সাংস্কৃতিক চিন্তা নিয়ে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির জন্য যে জাতিরাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছিলেন, তা ছিল সেই সময়কার বিশ্ব রাজনৈতিক প্রবাহে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। সমাজতান্ত্রিক চিন্তার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের দারিদ্র্যপীড়িত ও ভঙ্গুর অর্থনীতির বেড়াজালে আবদ্ধ মানুষের মুক্তির জন্য একটি শাসন ব্যবস্থা দেয়া ছিল বঙ্গবন্ধুর মূল লক্ষ্য। যে কারণে স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রা শুরুর অল্পদিন পরেই যে সংবিধান রচিত হয়েছিল সেখানে সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রাধান্য পেয়েছিল। কিন্তু স্নায়ুযুদ্ধের অপরপক্ষ, যারা পুঁজিবাদী শাসন ব্যবস্থায় বিশ্বাস করেন, তাদের জন্য বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ছিল একটি হুমকি এবং রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ফলে মুক্তিযুদ্ধে এই চিন্তার সমর্থকরা পরাজিত হলেও বঙ্গবন্ধুকে হত্যা ও অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং সমাজতান্ত্রিক চিন্তা নিয়ে জন্ম নেয়া বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের পর পরই। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের উন্মোচন করা দলিল, বিভিন্ন বিদেশি গবেষকদের লেখা ও পর্যবেক্ষণে দেশীয় রাজনৈতিক প্রেক্ষিত ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিষয়টা উঠে আসলেও এ নিয়ে বাংলাদেশের কোনো স্তরে কোনো বস্তুনিষ্ঠ গবেষণা হয়নি। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মামলার তদন্ত চলাকালে এই বিষয়টিকে সামনে নিয়ে না আসায় যেসব হত্যাকারী ধরা পড়েছিল, তাদের কাছ থেকে এ বিষয়ে তথ্য আদায় করা হয়নি।
এটা বাস্তবতা যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী শক্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং পাকিস্তানের সেই সময়কার সহযোগী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলেও মনেপ্রাণে বাংলাদেশকে রাষ্ট্র হিসেবেই তারা গ্রহণ করতে পারেনি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের পরবর্তী সময়ে যে বক্তব্য, তাতে সেটা স্পষ্ট। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ভূমিকা নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের পক্ষে ভূমিকা গ্রহণকারী চীন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি। উল্টো জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ নিয়ে উত্থাপিত প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ক্রমাগত ভেটো দিয়ে বাংলাদেশের সদস্যপদ পাওয়া বিলম্বিত করেছে। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দেশ ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারেনি। সৌদি আরব ও সুদান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরের দিন। ফলে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর মেরুকরণ নানা ধরনের পর্যালোচনার দাবি রাখে।
অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড পরবর্তী ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক শক্তিগুলো বাংলাদেশ থেকে যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে, তাতে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে এই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পৃক্ততা নিয়েও বিশ্লেষণ হতে পারে।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, দণ্ডপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর কয়েকজন হত্যাকারী এখনো পর্যন্ত পলাতক। কোন কোন হত্যাকারীর অবস্থান কোথায়, সে সম্পর্কেও কোনো তথ্য এখনো পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের কেউ কেউ পাকিস্তানে অপ্রকাশ্যে এবং কেউ কেউ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় প্রকাশ্যে অবস্থান করছেন বলে তথ্য জানা থাকা সত্ত্বেও তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার যথাযথ উদ্যোগের অভাব আছে বলে অনেকেই মনে করেন।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালনকালে এসব হত্যাকারীকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি আলোচনায় আসলেও পরবর্তী সময়ে এই বিষয় নিয়ে আর কোনো অগ্রগতি দেখা যায় না। ফলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের রায় বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার এক যুগ পরও কোনো কোনো হত্যাকারী এখনো বহাল তবিয়তে বিদেশেই হয়ে গেছে। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সামগ্রিক বিষয়টি তদন্তের জন্য আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায় থেকে একটি তদন্ত কমিশন গঠিত হওয়ার দাবি উঠলেও রাষ্ট্র এখনো পর্যন্ত সেই উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ফলে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যায় দেশীয় রাজনৈতিক প্রেক্ষিত ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিষয়টি উন্মোচনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত এই বিষয়টি অনুদ্ঘাটিত থেকে যাবে বলেই মনে হয়। কারণ দেশের মানুষের বিশ্বাস বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড একটি সাধারণ হত্যাকাণ্ড নয়, ৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ চেতনা নিয়ে বাংলাদেশের উদ্ভবকে বিনষ্ট করা এবং তার জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে চিরতরে এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়া এই হত্যাকাণ্ডের একমাত্র ও অন্যতম উদ্দেশ্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে এই, স্বাধীন বাংলাদেশের ৫০ বছর পরেও জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের চক্রান্তকারী দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক অপশক্তিগুলো আড়ালেই থেকে গেল।