নিজস্ব প্রতিনিধি : পাবনা- ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (১৯৮৬-৮৮, ১৯৮৮-৯০) ও পাবনা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান (১৯৮৮-৯০), পাবনা জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি ও জাতীয় পার্টির উপদেষ্টামণ্ডলীর সাবেক সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন সন্টু আজ সকাল ১০টার দিকে পাবনার শিমলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর এবং তিনি স্ত্রী এবং দুই ছেলে – তৌহিদ হোসেন রনি ও তৌফিক হোসেন বনি; দুই মেয়ে – শারমিন হেলেন ও শাওমিন হেলেন সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেলেন। আজ বাদ মাগরিব পাবনার ঐতিহাসিক চাঁপা মসজিদে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এবং তাঁকে পাবনার আরিফপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে চির নিদ্রায় সমাহিত করা হবে। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আমিন।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের উদ্দেশে মকবুল হোসেন সন্টু ভারত যান এবং সেখানকার বিহার রাজ্যের চাকুলিয়াতে গেরিলা প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে দেশে ফিরে ৭ নম্বর সেক্টরের অধীন রাজশাহী অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সংঘটিত সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। পাবনার সুজানগর থানা দখলের ৫২ ঘন্টার যুদ্ধে তিনি অত্যন্ত সাহসিকতা ও বীরত্বের পরিচয় দেন। দেশ স্বাধীন হলে প্রায় ৪ হাজার মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে পাবনার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যে মিলিশিয়া ক্যাম্প গঠন করা হয় মকবুল হোসেন সন্টু সেই ক্যাম্পের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৪ সালে মকবুল হোসেন সন্টু জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন এবং ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে পাবনা-২ আসন (সুজানগর) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে তিনি পাবনা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে জাতীয় পার্টির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মনোনীত হয়ে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেন।
মকবুল হোসেন সন্টু ১৯৪৩ সালের ৩ জুন পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার মাঝপাড়া জন্মগ্রহণ করেন। পিতা একেএম মনসুর আলী ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। পাঁচ ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে মকবুল হোসেন সন্টু পঞ্চম এবং ভাইদের মধ্যে চতুর্থ। আর এম একাডেমি, পাবনা থেকে ১৯৬৩ সালে এসএসসি এবং পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে ১৯৬৫ ও ১৯৭২ সালে যথাক্রমে এইচএসসি ও স্নাতক পাস করা মকবুল হোসেন সন্টু ছাত্রজীবনে ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ১৯৬৮ সালে মিলনায়তন সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৬৭-র ভুট্টা আন্দোলন এবং ৬৯-র গণ-অভ্যুত্থানে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন এবং পুলিশি নির্যাতন ও কারাবরণ করেন তিনি।