বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে ঘিরে সরকারের অসংখ্য প্রকল্পের মধ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়েকে ৯ হাজার ফুট দীর্ঘ থেকে ১০ হাজার ৭০০ ফুটে উন্নীত করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৩০০ ফুট রানওয়ে নির্মাণ করা হবে সমুদ্রের ওপর। বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশি ছুঁয়ে বিমান নামবে কক্সবাজারে। দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ের এই প্রকল্পটি আগামীকাল ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে পর্যটন নগরীর বিমানবন্দরটির সক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে।
রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প উদ্বোধনের প্রস্তুতি দেখতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এখন কক্সবাজারে রয়েছেন। গতকাল বিমানবন্দরে তিনি বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক মানের রূপ দেওয়াসহ অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রবিবার প্রধানমন্ত্রী ১০ হাজার ৭০০ ফিট রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় সারা বিশ্ব থেকে যাতে সুপরিসর বড় বিমানগুলো কক্সবাজারে নামতে পারে সেভাবে তৈরি করা হচ্ছে রানওয়ে। বিদেশ থেকে সরাসরি পর্যটকরা কক্সবাজারে এসে এখানকার পাহাড়, সাগরের বিস্তৃত নান্দনিক ও নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে। তিনি বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এই কাজ সম্পন্ন হবে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই রাতেও বিমান ওঠানামা করতে পারবে কক্সবাজার বিমানবন্দরে।
দুই দিনের সফরে কক্সবাজারে অবস্থানকালে প্রতিমন্ত্রী সোনাদিয়া দ্বীপসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট পরিদর্শন ও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সভায় অংশ নেবেন। আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যে ১০ হাজার ৭০০ ফিট রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন- সেই অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী কক্সবাজার প্রান্তে উপস্থিত থাকবেন। দেশের পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ঘিরে চলছে সরকারের নানা পরিকল্পনা। রিজিওনাল হাব হিসেবে এ বিমানবন্দরকে গড়ে তুলতে চায় সরকার। সমুদ্র ঘেঁষে অবতরণ করবে বিমান। ৩০০ ফুট রানওয়ে নির্মাণ করা হবে সমুদ্রের উপরেই। চলছে রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ। কক্সবাজারে রয়েছে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতসহ নানা পর্যটন স্পট। চলছে পর্যটনকেন্দ্রিক নানা উন্নয়ন প্রকল্প। এই সমুদ্র রানীকে বিশ্ব পর্যটকদের কাছে নতুনভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার কাজে হাত দিয়েছে সরকার।
বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ, রানওয়ে সম্প্রসারণ ও শক্তি বৃদ্ধি, এয়ার ফিল্ড গ্রাউন্ড লাইটিং সিস্টেম স্থাপনসহ বেশকিছু কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এখনো চলমান রয়েছে অনেক কাজ। প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ করা হয়। ইতিমধ্যে রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৬৭৭৫ ফুট থেকে ৯ হাজার ফিট এবং প্রস্থ ১২০ ফিট থেকে ২০০ ফিটে উন্নীতকরণ করা হয়েছে। ২০১৭ সালে সম্প্রসারিত রানওয়েতে বিমানের বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ উড্ডয়ন ও অবতরণ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। সে সময়ই এই বিমানবন্দরের রানওয়ে ৯ হাজার ফিট থেকে উন্নীতকরণের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
এই প্রকল্পের আওতায় বিমানবন্দরের রানওয়ে ৯ হাজার ফিট থেকে ১০ হাজার ৭০০ ফিটে উন্নীত হবে। বর্মানে ৯ হাজার ৩০০ ফিট ব্যবহার হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর ১৭০০ ফিট এর কাজ শেষ হলে রানওয়ে দাঁড়াবে ১০ হাজার ৭০০ ফিটে গিয়ে। কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তরিত করার কারণে পর্যটনের সম্ভাবনা যেমন বেড়ে যাবে, তেমনি এলাকার ব্যাপক উন্নতি ঘটবে বলে মনে করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। বিশ্বের উপকূলীয় শহরে অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন বিমানবন্দরগুলোর কাতারে নাম লিখিয়ে দেশকে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধন এবং এভিয়েশন সেক্টরে রিজিওনাল হাব হিসেবে গড়ে তোলাই সরকারের চেষ্টা।