বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ পরিশোধে গ্রাহকদের দেওয়া বিশেষ সুবিধার সময় বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত ঋণের কিস্তির অন্তত ৫০ শতাংশ জমা দিয়েই নিয়মিত গ্রাহক থাকা যাবে। কেউ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন না।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ ‘ঋণ শ্রেণিকরণ প্রসঙ্গে’ শিরোনামে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সম্প্রতি ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রেও ২৫ শতাংশ ঋণের কিস্তি পরিশোধে সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর আগে গত বছরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে ২০২০ সালের পুরো সময় ঋণ পরিশোধ না করে খেলাপিমুক্ত থাকার সুযোগ পান গ্রাহকরা। পরে করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে গতিশীল রাখতে চলতি বছরের জুনে ঋণের কিস্তির নূ্যনতম ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বা গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এ বছর ৩১ আগস্টের মধ্যে পরিশোধ করলে ওই সময় ঋণ শ্রেণিকরণ করা যাবে না বলে নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সুযোগ আবারও চার মাস বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তির ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এ বছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করলে ওই সময়ে ঋণ শ্রেণিকরণ করা যাবে না। অর্থাৎ ঋণের কিস্তি ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০০ টাকা হলে ৫০ টাকা পরিশোধ করলেই এ বছর গ্রাহক নিয়মিত হয়ে যাবে।
এ ছাড়া কিস্তির অবশিষ্ট অংশ ঋণের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী এক বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ঋণের হিসাবগুলো সুদ মুনাফা শুধু আদায় সাপেক্ষে আয় খাতে স্থানান্তর করা যাবে। ঋণের সুদ হিসাব চলমান নীতিমালায় অনুসরণ করতে হবে। এ সময় কোনো দন্ড সুদ বা অতিরিক্ত ফি আদায় করা যাবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের নেতিবাচক প্রভাব প্রলম্বিত হওয়ায় চলমান অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের গতিশীলতা বজায় রাখা এবং বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের গতিধারা স্বাভাবিক রাখার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও রপ্তানি বাণিজ্য সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সম্পদের মান দুর্বল হয়ে পড়েছে। গত বছরের তুলনায় মোট খেলাপিঋণ ৬৪ শতাংশ বেড়ে ১০ হাজার ৫০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ৯টি প্রতিষ্ঠানের খেলাপিঋণের পরিমাণ ১৫ শতাংশের বেশি। আর ১২ প্রতিষ্ঠান ১০ শতাংশের ওপর এবং ১৫ প্রতিষ্ঠান ৫ শতাংশের নিচে সীমাবদ্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, আর্থিক খাতে খেলাপি বৃদ্ধি পেয়েছে, লোকসান বেড়েছে প্রভিশনও ঘাটতিও যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। যা মুনাফা অর্জনকে প্রভাবিত করেছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, করোনার পরিস্থিতির অবনতির প্রেক্ষিতে দেশব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দা যাচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধের চাপ কমাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।