বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : সুফী সাধক হযরত খানজাহান আলী (র) স্মৃতিধন্য উপকূলীয় জেলা বাগেরহাট। গাঢ় সবুজের এ জনপদ ১৯৮৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত হয়। দেশের দুটি বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ও ষাটগম্বুজ এ জেলায় অবস্থিত। প্রায় ১৭ লাখ লোক অধ্যুষিত বাগেরহাটের মোট আয়তন ৫৮৮২.১৮ বর্গ কিলোমিটার।
অপার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও একদা অবহেলিত বাগেরহাট জেলায় এখন প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প চলছে। এরমধ্যে ১৮টি মেগা প্রকল্প রয়েছে। যার অধিকাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ফলে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের জীবন-জীবিকার মানোন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে এ জেলার গুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুই লক্ষাধিক বেকার যুবার কর্মসংস্থান হচ্ছে। আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সমৃদ্ধি আসছে। বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র বার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিনের ভাষায়, ‘শেখ হাসিনার দর্শন সব মানুষের উন্নয়ন’ -এর ধারাবাহিকতায় বাগেরহাট হবে প্রাচ্যের সিঙ্গাপুর।
বাগেরহাটে মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে, খানজাহান আলী বিমান বন্দর, রামপাল তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র, খুলনা-মোংলা রেললাইন, মোংলা বন্দরের উন্নয়ন, খুলনা-মোংলা জাতীয় সড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণ, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, পানগুছি সেতু, মোংলা খাদ্যগুদাম, প্রাণ ফিরে পাওয়া মোংলা-ঘষিয়াখালি আন্তর্জাতিক নৌপথ, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম, শরণখোলা-মোংলা-রামপাল বেড়িবাঁধ, বেপজা, ইপিজেড, ২৫০ শয্যার শেখ রাজিয়া নাসের হাসপাতাল, বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উন্নয়ন, শেখ হেলাল উদ্দিন স্টেডিয়ামের আধুনিকায়ন, চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্র, মেরিন টেকনোলজি ইনস্টিটিউট, পশুর, ভৈরব, চিত্রা নদী ড্রেজিংসহ ৮৩ খাল পুনর্খনন ইত্যাদি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্যের অনন্য নিদর্শন সুন্দরবন ও ষাটগম্বুজ, মোংলা সমুদ্র বন্দর, খানজাহান আলী বিমান বন্দর, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, রেল যোগাযোগ, বিদ্যুত কেন্দ্র এ জেলায় রয়েছে। পদ্মা সেতু, খুলনা-মোংলা রেল যোগাযোগ প্রকল্প, খানজাহান আলী বিমানবন্দর, রামপাল তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ফলে ‘সাদা সোনা’ খ্যাত চিংড়ির বৃহৎ উৎপাদন ক্ষেত্র বাগেরহাট বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রে পরিণত হতে শুরু করেছে।
৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মোংলা-খুলনা রেললাইন ॥ তিন হাজার আটশত কোটি টাকা ব্যয়ে মোংলা থেকে খুলনা রেললাইন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের অধিকাংশ কাজ শেষ হওয়ার পথে। ৬৫.৭৫ কিলোমিটারের এ রেললাইন দ্রুত চালু হবে। তৎকালীন ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা চলমান কাজ পরিদর্শনকালে বলেন, ‘খুলনা-মোংলা রেললাইন ভারত ও বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রকল্প চালু হলে মোংলা বন্দর এবং কলকাতা ১২৭ কিঃ মিঃ দূরত্ব হাতের মুঠোয় আসবে। অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যাপক পরিবর্তন হবে। এলাকার জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। এই এলাকার উন্নয়ন, যোগাযোগ, মোংলা বন্দরের সার্বিক কর্মকান্ডে ব্যপক গতি আসবে। পণ্য পরিবহন বাড়ায় উভয়ে সমৃদ্ধ হবে।’
মৃত মোংলা বন্দর প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর, জাহাজ আগমনে ৭০ বছরের রেকর্ড অতিক্রম ॥ এক সময়ের প্রায় মৃত মোংলা বন্দর এখন দেশের অন্যতম সচল বাণিজ্যিক বন্দরের স্বীকৃতি পাচ্ছে। বর্তমান সরকাররের সময়ে গত একযুগে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বহুমুখী উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ভরাট হওয়া ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নৌরুট ঘষিয়াখালী চ্যানেল এখন সচল। বর্তমানে ৮ থেকে ১০ ড্রাফটের জাহাজ মোংলা বন্দরে ভিড়তে পারছে। প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসায় বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও জাহাজ আগমনে ৭০ বছরের রেকর্ড অতিক্রম করেছে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলা। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক বিভাগের হিসেবে, প্রতিষ্ঠার পর থেকে সব রেকর্ড ভঙ্গ করে মোংলা বন্দরে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৯৭০টি বাণিজ্যিক জাহাজ এসেছে।
যা গত অর্থবছরের থেকে ৬৭টি বেশি। গত ৭ জুলাই ১২০ কোটি টাকা মূল্যের মোবাইল হারবার ক্রেন মোংলা বন্দরে পৌঁছায়। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আধুনিকায়ন করতে নতুন নতুন যন্ত্রাংশ সংযোজন এবং অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বন্দর উন্নয়নে ৭শ’ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ইনারবার ড্রেজিংসহ অনেক কাজ চলমান রয়েছে। এসব কাজ শেষ হলে বন্দরের সক্ষমতা আরও অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে।
বর্তমান কেসিসি মেয়র মোংলা-রামপালের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, বিএনপি-জামায়াত আমলে মোংলা বন্দরকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আর বতর্মান সরকারের আমলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক ইচ্ছায় সেই মোংলা বন্দর এখন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রসঙ্গত ১৯৫০ সালে ব্রিটিশ বাণিজ্যিক জাহাজ দ্য সিটি অব লায়ন্স সুন্দরবনের মধ্যে পশুর নদীর জয়মনিরগোল নামক স্থানে নোঙ্গর করে মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠার সূচনা হয়।
রামপাল তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র ॥ বাগেরহটের অন্যতম মেগা প্রকল্প ‘রামপাল তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র’। জেলার রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা ও রাজনগর ইউনিয়নের কৈগর্দ্দাশকাঠি-সাপমারী মৌজায় পশুর নদীর তীরে ১৮৩৪ একর জমির ওপর এই বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানির উদ্যোগে ১৩২০ মেগাওয়াট এই মৈত্রী সুপার থারমাল পাওয়ার বিদ্যুত কেন্দ্রের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬শ’ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে এখানে বিদ্যুত উৎপাদন শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। উৎপাদিত বিদ্যুতের ১০০ ভাগ বাংলাদেশের উন্নয়নে ব্যবহৃত হবে।
খানজাহান আলী বিমান বন্দর ॥ বাগেরহাটের রামপালের ফয়লায় ১৯৯৪ সালে জামায়াত-বিএনপি জোট সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরহুম মোস্তাফিজুর রহমান ৯৪ একর জমি অধিগ্রহণ করে সে সময়ে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দিয়ে খানজাহান আলী বিমান বন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করান। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোংলা বন্দর সচল রাখতে এ বিমানবন্দরের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে গুরুত্ব দেন। ফয়লা নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু এনে বিমানবন্দরের জন্য আধিগ্রহণকৃত জমি ভরাট করা হয়। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার পুনরায় ক্ষমতায় এসে এ বিমানবন্দরের কাজ বন্ধ করে দেয়। এরপর আবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে এ বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নয়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত অগ্রাধিকার প্রকল্পের গুরুত্ব দেয়া হয়। খানজাহান আলী পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিকমানের বিমানবন্দরের জন্য নতুন করে ৫৩৬ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের তিনগুণ বেশি মূল্য ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়।
এ বিষয়ে বাগেরহাট সদর আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময় বলেন, মোংলা বন্দরকে কেন্দ্র করে এখানে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে। চ্যানেল চালু হয়েছে, সাইলো হয়েছে, অর্থনৈতিক জোন হয়েছে, ১৮টি এলপিজি গ্যাস ফ্যাক্টরি হচ্ছে, খুলনা-মোংলা রেললাইন হচ্ছে, ইপিজেড হয়েছে। বর্তমানে মোংলায় বিদেশীরা যারা আসেন তারা দিনে দিনে কাজ করে যাতে ফিরে যেতে পারেন এ জন্য এ বিমান বন্দর চালু খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ এ বন্দরের কাজ দ্রুত শেষ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন সুরক্ষায় ২শ’ কোটি টাকার প্রকল্প ॥ বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের বৃহৎ অংশ বাগেরহাট জেলার অন্তর্গত। একদা এ বন ছিল লুটেরা ও দস্যুদের অভয়ারণ্য। বন্যপ্রাণী শিকার ও বনজসম্পদ লুট ছিল প্রায় নিত্যনৈমিত্যিক ঘটনা। বনজীবী এমনকি বনকর্মী ও বনসংলগ্ন এলাকাবাসী ছিলেন জিম্মি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই দৃশ্যপট পরিবর্তন হতে শুরু করে। একে এক সাঁড়াশি অভিযানের মুখে ১৭টি সশস্ত্র দস্যুবাহিনী বিপুল পরিমাণ অস্ত্র- গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে জনকণ্ঠকে জানান, বিশ্বখ্যাত এ ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ সুরক্ষাসহ ইকোট্যুরিজম উন্নয়নে গত একযুগে সরকার বহুমুখী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যার ফলে সুন্দরবনে অবৈধভাবে গাছ কাটা, বন্যপ্রাণী শিকার প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া সুন্দরবনে পর্যটন বিকাশে পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণ, গবেষণা এবং বনজীবীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এখনও প্রায় ২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প চলমান রয়েছে বলে।
সুন্দরবনের সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় ১শ’ ৫৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে অবকাঠামো নির্মাণ ও গবেষণার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। টেকসই বন ব্যবস্থাপনাই এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। এছাড়া ১শ’ ২৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘সিলস প্রকল্প’ আওতায় ২০১০ থেকে ’১৫ সালের মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কার, বন নির্ভরশীল মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রশিক্ষণসহ নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়।
সুন্দরবনে ইকোট্যুরিজম সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে ২৫ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। যার আওতায় করমজল, দুবলা, হারবারিয়া, কটকা ও কচিখালীতে ৫টি ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রের উন্নয়ন করা হচ্ছে। এছাড়া পূর্ব বিভাগের আন্দারমানিক ও শরণখোলার আলীবান্দায় নতুন দুটি পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।
বণ্যপ্রাণী, বনজীবী ও বনকর্মীদের তীব্র পানীয়-জলের সঙ্কট নিরসনে টেকসই বন ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮০ টি পুকুর পুনর্খনন, ৪টি নতুন খনন এবং ৭০টি পাকা ঘাট নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে পূর্ব বিভাগে রয়েছে ৫০ টি পুনর্খনন ও ৩টি নতুন খনন। একাজের ৫০ শতাংশ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের ডিএফও মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান।
এ বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার জনকণ্ঠকে বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন জীববৈচিত্র্যের আধার। মায়ের মতো নানা দুর্যোগের হাত থেকে সুন্দরবন আমাদের সুরক্ষা দেয়। এ বন আমাদের গর্ব। তাই সুন্দরবনের টেকসই উন্নয়নসহ আধুনিক ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক বলে তিনি উল্লেখ করেন।
১০৭৪ পরিবারকে জমিসহ ঘর প্রদান ॥ প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপ ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’ সম্পর্কে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে একসঙ্গে এত ভূমিহীন মানুষকে জমিসহ ঘর দেয়ার ঘটনা বিরল। আমি ব্যক্তিগতভাবে বাগেরহাট জেলায় প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে নির্মাণ হওয়া ঘর পরিদর্শন করেছি। উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা ঘরে বসবাস করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সবাই ঘর পেয়ে খুশি এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি। বাগেরহাট জেলার নয়টি উপজেলায় প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জমিসহ ১ হাজার ৭৪টি ঘর প্রদান করা হয়েছে।
সওজ’র ৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ॥ গত একযুগে বাগেরহাটে সড়ক নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়নে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফরিদ উদ্দিন জনকণ্ঠকে জানান, ইতোমধ্যে ১৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নওয়াপাড়া-বাগেরহাট-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন কাজ শেষ হয়েছে। ৯শ’ ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বহু প্রত্যাশিত পানগুছি নদীর ওপর ১৪শ’ মিটার দৈর্ঘ্যরে ‘পানগুছি সেতু’ ইতোমধ্যে অনুমোদন হয়েছে। শীঘ্রই এর কাজ শুরু হবে। প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা-মোংলা জাতীয় সড়কের সাড়ে ৩০ কিঃমিঃ ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প (কুদির বটতলা থেকে দ্বিগরাজ) এখন প্রক্রিয়াধীন। ৪৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৩.৮২৮ কিঃমিঃ বাগেরহাট-রামপাল-মোংলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্পটি ইতোমধ্যে গত ১০ আগস্ট একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। এখন দরপত্র আহ্বানের প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নয়ন প্রকল্প খুলনা জোন-এর আওতায় বাগেরহাট সড়ক বিভাগের অধীনে ৯৯৫.৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৩.০৩৯ কিঃমিঃ দৈর্ঘ্যরে রূপসা-ফকিরহাট-বাগেরহাট ও সাইনবোর্ড-মোরেলগঞ্জ-রায়েন্দা-শরণখোলা-বগী আঞ্চলিক মহাসড়ক ২টির প্রকল্প সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ কাজও দ্রুত শুরু হবে। এছাড়া ৩০৭.৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৭.২৫ কিঃমিঃ দৈর্ঘ্যরে মোংলা-জয়মনির ঘোল-জিসি-চিলা-জিসি-বৌদ্যমারী বাজার জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ প্রকল্পটিও অনুরূপ প্রক্রিয়াধীন। এ কাজ আগামী ৬ মাসের মধ্যে শুরু হবে বলে তিন আশাবাদী।
‘পানগুছি সেতু’ নির্মাণ প্রসঙ্গে মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন বলেন, পানগুছি নদীর ওপর সেতু নির্মাণ ছিল বাগেরহাটবাসীর অর্ধশতাব্দীর দাবি। এই দাবি পূরণে সম্প্রতি ৯শ’ ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সেতুর নির্মাণ কাজ ত্বরান্বিত হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি তিনি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তিনি শরণখোলা-মোরেলগঞ্জের উন্নয়নে বহুমুখী প্রকল্প গ্রহণ করায় সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এলজিইডির ১৩৭৫ কিঃমিঃ রাস্তা নির্মাণ ॥ পল্লী সড়ক শুধু সড়কই নয়-কর্মসংস্থান, জীবিকা ও উন্নততর জীবনের অবলম্বন। পল্লী সড়কের হাত ধরেই আসে কৃষি উৎপাদন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে প্রবেশগম্যতা, দারিদ্রমুক্তি এবং সর্বোপরি মানব উন্নয়ন। এ লক্ষ্যে বাগেরহাট এলজিইডির উন্নয়নে সুফল ভোগ করছেন জেলায় সাড়ে ১৫ লাখ প্রান্তিক মানুষ, যা অভূতপূর্ব। বাগেরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জি এম মুজিবর রহমান জানান, বাগেরহাট এলজিইডি বর্তমান সরকারের সময় জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ১৫৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন করেছে। জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল ও নিরবছিন্ন রাখতে ১০৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩৭৫ কিঃমিঃ সড়ক নির্মাণ এবং প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫০০ কিঃমিঃ সড়ক মেরামত করা হয়েছে।
এ ছাড়া এ সময়ে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৫০০ মিঃ দৈর্ঘ্যের ১৪৯টি সড়ক সেতু নির্মাণ এবং ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৬টি হাট-বাজার নির্মাণ করা হয়েছে। ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০টি ভূমি অফিস নির্মাণ, ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪৩টি ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন করা হয়েছে। ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অফিস, মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, লাইব্রেরিসম্বলিত ৫ তলা ভিত্তির ৯টি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা হয়। এ ছাড়া ভূমিহীন ও অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৭৩টি ‘বীর নিবাস’ হয়েছে। ২১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে রামপাল তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের সংযোগ সড়ক নির্মাণ।
দীর্ঘ প্রত্যাশিত ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ॥ ১৭ লাখ লোক অধ্যুষিত বাগেরহাটবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল পূর্ণাঙ্গ ২৫০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণ। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে। ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে শেখ রাজিয়া নাসের হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ শয্যার আইসিইউ বেড এবং ২০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিটের কাজ চলমান। এখানে অত্যাধুনিক আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে আধুনিক মর্গ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ট্যাঙ্কসহ সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই লাইন স্থাপন করা হয়েছে। আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপনের কাজও প্রক্রিয়াধীন। এ বিষয়ে বাগেরহাটের সদ্য বিদায়ী সিভিল সার্জন কে এম হুমায়ূন কবির বলেন, এসব কাজ সম্পন্নের মধ্য দিয়ে বাগেরহাট জেলাবাসীর স্বাস্থ্যসেবার মান আরও উন্নত হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি জেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সচল থাকায় তৃণমূূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি উপজেলায় আধুনিক এ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ এবং ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন স্থাপন করা হয়েছে।
বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট নিরসনে বহুমুখী প্রকল্প ॥ উপকূলীয় লবণাক্ত অঞ্চল হওয়ায় এ জেলায় সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কট ছিল। দূষিত পানি পান করায় ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিসসহ পানিবাহিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব ছিল মানুষের নিত্যসঙ্গী। বর্তমান সরকারের আমলে এ ভোগান্তি নিরসনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর বহুমুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত মল্লিক জনকণ্ঠকে জানান, জানুয়ারি ২০০৯ হতে জুন ২০২১ পর্যন্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে ৪৭ কোটি ২৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬ হাজার ৯৮১টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। ৪০ কোটি ১৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ৯ হাজার ৭৯০টি রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং স্থাপন করা হয়েছে। ৫২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩শ’ ২৬ টি এস.এস.টি এবং ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬৪৩ টি.পি.এস.এফ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ৭৭ লাখ ৪৮ হাজার টাকা ব্যয়ে ১০৬টি সোলার পি. এস.এফ স্থাপন করা হয়। এই সকল পানির উৎস স্থাপনের ফলে সুবিধাবঞ্চিত প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার জনগোষ্ঠী নিরাপদ সুপেয় খাবার পানি সুবিধার আওতায় এসেছেন। পানিবাহিত রোগ-ব্যাধি হ্রাস পেয়েছে।
দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় ৩শ’ ৪৪ সাইক্লোন শেল্টার ॥ উপকূলীয় দুর্যোগপ্রবণ এ জেলায় সিডর, আইলা, আমফান, ইয়াস মানুষের নিত্যসঙ্গী। কেবল সিডরের সময় এ জেলায় সরকারী হিসাব মতে প্রায় ৩ হাজার মানুষ মারা যান। এ অবস্থায় বর্তমান সরকারের আমলে সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণে স্থানীয় সরকার বিভাগ, এলজিইডি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর এবং বিভিন্ন এনজিও সচেষ্ট হয়। প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে জেলায় ৩শ’ ৪৪ টি সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হয়েছে। এসব সাইক্লোন শেল্টারে ২ লাখ ৮ হাজার ৪৩০ জন দুর্যোগের সময় নিরাপদ আশ্রয় নিতে পারেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় আরও সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জেলার শতভাগ গ্রামে বিদ্যুত ॥ বাগেরহাট জেলার দুর্গম গ্রামাঞ্চলেও বিদ্যুত পৌঁছেছে। দিনমজুর ও কৃষক পরিবারের ঘরগুলোও এখন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছে। বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুতের জি.এম মোঃ জাকির হোসেন জনকণ্ঠকে জানান, জেলার শতভাগ গ্রামের বাড়ি বিদ্যুত সংযোগ ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছে। বর্তমান সরকারের গত একযুগে ৮৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৯৯ টি গ্রামে ৪৩৪৮ কিঃমিঃ বিদ্যুত লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৩৬৪ টি পরিবার নতুন করে বিদ্যুত সংযোগ পেয়ে আলোকিত হয়েছেন।
বাগেরহাট ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুল কুমার স্বর্ণকার জানান, বর্তমান সরকারের আমলে ওজোপাডিকোর অধীনে নতুন ট্রান্সফরমার ও প্রিপেইড মিটার স্থাপনসহ বিদ্যুত লাইনের মেরামত সংস্কার ও সম্প্রসারণে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। যার ফলে বর্তমানে লোডশেডিং নেই।
ক্রীড়া অঙ্গনেও অভূতপূর্ব উন্নয়ন ॥ ক্রীড়া অঙ্গনেও এ সরকার আমলে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। ‘শেখ হেলাল উদ্দিন স্টেডিয়াম’ নির্মাণকালে নতুন ভবন, গ্যালারি, মাঠ সংস্কার, জমি অধিগ্রহণ বাবদ ১৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়। পূর্ণাঙ্গ আধুনিক স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য বর্তমানে প্রায় ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে বলে বাগেরহাট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমান জনকণ্ঠকে জানান। তার ভাষায়, এ কাজ সম্পন্ন হলে বাগেরহাটে খেলাধুলার মান অনেক উন্নত হবে। আগামী প্রজন্ম খেলাধুলার অনেক বেশি সুযোগ পাবে, যা মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ গঠনে সহায়ক হবে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, ‘শেখ হেলাল উদ্দিন স্টেডিয়ামকে’ পূর্ণাঙ্গ আধুনিক স্টেডিয়াম করার পাশাপাশি জেলার প্রতিটি উপজেলায় একটি করে ‘শহীদ শেখ রাসেল স্টেডিয়াম’ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।
২৩৭ কোটি টাকার গণপূর্তের উন্নয়ন ॥ বাগেরহাট গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফতেহ আজম খান জনকণ্ঠকে জানান, বর্তমান সরকারের সময়ে ২৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এরমধ্যে জেলার ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি স্থাপন, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, সারভার স্টেশন স্থাপন, সদর হাসপাতালকে ১শ’ শয্যা হতে ২শ’ ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ, জেলা পুলিশ অফিস ভবন নির্মাণ, ৫ টি থানা ভবন নির্মাণ, পাসপোর্ট অফিস নির্মাণ, মোংলা শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র স্থাপন, ৭ টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ এবং মোংলা কোস্টগার্ডের নির্মাণ কাজ রয়েছে।
শিক্ষা প্রকৌশলের ৫শ’ কোটি টাকার উন্নয়ন ॥ বাগেরহাট জেলা শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাফিজ আক্তার জানান, ৪শ’ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বর্তমান সরকারের আমলে এ জেলায় শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের আওতায় নানামুখী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ও চলমান রয়েছে। এরমধ্যে ৪০টি নির্বাচিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন, ৪০টি নির্বাচিত বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উর্ধমুখী সম্প্রসারণ কাজ, জেলা সদরে সরকারী পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজসমূহের উন্নয়ন, নির্বাচিত মাদ্রাসাসমূহের একাডেমিক ভবন নির্মাণ, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে নির্বাচিত কলেজসমূহের উন্নয়ন, রাজস্ব খাতের সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের মেরামত ও সংস্কার কাজ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসবাবপত্র সরবরাহ, ২টি টেকনিক্যাল কলেজ নির্মাণ, সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের উন্নয়ন ইত্যাদি।
বাগেরহাট জেলাব্যাপী বর্তমান সরকারের আমলে অভূতপূর্ব উন্নয়নের ধারাবাহিকতা সম্পর্কে বাগেরহাট সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশা বলেন, অপার সম্ভাবন থাকা সত্ত্বেও বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে বাগেরহাটের উন্নয়ন চরম উপেক্ষিত হয়েছে। তার ভাষায়, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে এই জনপদ আগামী দিনগুলোতে উন্নতির সোপানে অবস্থান করতে চলেছে। এ জেলার বেকার যুবশক্তি ৩০/৪০ হাজার টাকার চাকরির জন্য আর বহির্মুখী হবে না। নিজ জেলাতেই কর্মসংস্থান হবে। বরং অন্যত্র থেকে এখানে মানুষ কাজের জন্য আসবেন।’