বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশই সম্পর্কটাকে আরও এগিয়ে নিতে চায় । শিগগিরই পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের প্রস্তাব ভারতের

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক :বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশই সম্পর্কটাকে আরও এগিয়ে নিতে চায়। তাই করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মতো চ্যালেঞ্জকে একসঙ্গে মোকাবিলার পাশাপাশি করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী ভারত। এ ছাড়া শিগগিরই পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের আয়োজন করার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর দেশের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলাকে ঢাকায় পাঠিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সম্পর্ক আরও জোরদারের বার্তা দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভারতের এক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সৌজন্য সাক্ষাতের পর রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকার কয়েকটি গণমাধ্যমের সঙ্গে ওই কূটনীতিক কথা বলেন। এই সফর নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস বলেন,‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কটা বিশেষ আর অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ।ভারতের পররাষ্ট্রসচিবকে করোনা মহামারির এই সময়ে অনানুষ্ঠানিক এ সফরে পাঠিয়ে সম্পর্কের গভীরতার বার্তা পাঠালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।’ ভারতীয় কূটনৈতিক সূত্রটি জানায়, গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা ওই আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। উন্নয়ন সহযোগিতা, দুই দেশের মধ্যে অতীতে চালু থাকা নানা ধরনের সংযুক্তি আবার চালু করা, কোভিড–পরবর্তী সময়ে অর্থনীতিকে চাঙা করা, একসঙ্গে কোভিড মোকাবিলা করা, ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে সহায়তা, যৌথভাবে মুজিব বর্ষ উদ্‌যাপন—এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সূত্রটি জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নেতৃত্বে যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) শেষ বৈঠকটি হয়েছিল গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় ভার্চ্যুয়াল ফরম্যাটে খুব শিগগির বৈঠক আয়োজনের প্রস্তাব ভারত দিয়েছে। কারণ, জেসিসির আয়োজন করা গেলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব কটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যায়। ওটা যেহেতু সমন্বিত একটি কাঠামো, তাই সব বিষয়ে আলোচনা হবে। দুই মন্ত্রীর সুবিধাজনক সময়ে এটির আয়োজন করা হবে। বিশেষ করে ভারতের সহায়তায় পরিচালিত প্রকল্পগুলো কোন অবস্থায় আছে, সেটা ভারত বিস্তারিতভাবে দেখতে চায়। সূত্রটি জানিয়েছে, আলোচনায় ভারত ব্যবসায়ী, রোগী ও সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ট্রাভেল বাবল বা এয়ার বাবল চালুর প্রস্তাব দিয়েছে। এটা হলো তৃতীয় কোনো দেশকে যুক্ত না করে দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনা। ফ্রান্স, জার্মানি, মালদ্বীপ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত—এই চার দেশের সঙ্গে ভারত এটি করেছে। কোভিডের কারণে আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধের প্রেক্ষাপটে এটি হয়েছে। এটা হলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও রোগীরা এর সুফল পাবেন। ভারতের এই প্রস্তাব নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করে এটি চূড়ান্ত করবে।

মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভারতের সহযোগিতার প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। তখন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে জানান, ভারত নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের পক্ষে। সূত্রটি জানিয়েছে, ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের ঢাকা সফরটি ছিল অনানুষ্ঠানিক। আর এই সফরে নির্ধারিত কোনো আলোচ্যসূচি ছিল না। তবে গণমাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে নানা জল্পনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সূত্রটি জানায়, দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে কোনো অস্বস্তি নেই। তাই ওই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনায় হয়নি। এমনকি ভারতের সঙ্গে তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলোর সাম্প্রতিক সম্পর্কের দোলাচল নিয়েও কোনো কথা হয়নি। এক ঘণ্টার বেশি আলোচনা হয়েছে। আগামী বছর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর। একই সঙ্গে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর। দুই দেশের সম্পর্ক অনেক বেশি বহুমাত্রিক। তাই আগামী কয়েক বছরের সম্পর্কোন্নয়নের পথনকশা তৈরি করার কথা ভাবা হচ্ছে।

আপডেট নিউজ বাংলাদেশনরেন্দ্র মোদিপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাবাংলাদেশবাংলাদেশ আপডেট নিউজবাংলাদেশ ও ভারতবাংলাদেশ ও ভারত—দুই দেশই সম্পর্কটাকে আরও এগিয়ে নিতে চায়ভারতভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিশিগগিরই পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের প্রস্তাব ভারতেরশেখ হাসিনাহর্ষ বর্ধন শ্রিংলা
Comments (0)
Add Comment