পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহর উপজেলায় উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ছেলে অফিসে ঢুকে মারধর করেছেন তার বৃদ্ধ বাবাকে। বাবাকে লাথি মারাসহ লাঞ্ছিত করার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে ভুক্তভোগী বাবা আলহাজ্ব আতাউর রহমান বাদি হয়ে চাটমোহর থানায় মামলা করেছেন। এর আগে সেদিন সকালে ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত ছেলে মজনুর রহমানকে আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, চাটমোহর সরকারি আরসিএন অ্যান্ড বিএসএন মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার ট্রেড ইন্সট্রাক্টর মজনুর সকালে তার বাবা আতাউর রহমানের চাকরিস্থল মহেলা ডাকঘরে যায়। ডাকঘরে ঢুকে বাবাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে অফিসের কাগজপত্র তছনছ করে ডাকঘরের মোবাইল ফোনটি বাবার কাছ থেকে জোর করে ছিনিয়ে নেন। সেই সময় বাবার সাথে হাতাহাতি হয়। মারধরও করে ছেলে।
পরে মোবাইল ফোনটি নিয়ে মোটরসাইকেলে উঠতে চাইলে বাবা বাধা দেন। তখন তিনি বাবাকে স্বজোরে ডান পা দিয়ে লাথি মারেন। এসময় বাবার সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি ও ধস্তাধস্তিও হয়। পরে আশপাশের লোকজন এসে মজনুরকে পিটুনি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সড়িয়ে দেন। ঘটনার পর আতাউর রহমানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তিনি থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। এর পরে পুলিশ মজনুরকে ধরে থানায় নিয়ে আসে। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উভয়ই থানায় অবস্থান করেন। পরে ছেলের নামে মামলা করেন বাবা।
চেতনায় চাটমোহর নামে ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিলে মুহুর্তেই ভাইরাল হয়। ছেলের বিরুদ্ধে শুরু হয় মন্তব্য। তারা লেখেন, শিক্ষক যদি এমন হয় তাহলে ছাত্রছাত্রীদের কি শিক্ষা দিবে? এই ধরনের শিক্ষকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অবিলম্বে বিতাড়িত করা হোক। এটা পুরো শিক্ষক সমাজের জন্য কলংক। এছাড়াও চারিত্রিক বিষয়েও অনেকে মন্তব্য করেন।
ভুক্তভোগী বাবা আতাউর রহমান বলেন, এমনভাবে আমাকে মারধর ও লাঞ্চিত করেছে যে বাধ্য হয়েই আইনের দারস্থ হয়েছি।
চাটমোহর সরকারি আরসিএন অ্যান্ড বিএসএন উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছালাম বলেন, বিষয়টি খুবই লজ্জাকর ও দুঃখজনক। একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এমন আচরণ কাম্য নয়। বিষয়টি আমি ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি। ইউএনও স্যার আমাকে মামলার কাগজপত্র জমা দিতে বলেছেন।
চাটমোহর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ছেলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রুজু হয়েছে। ছেলেকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈকত ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে তার বাবা অভিযোগ দিয়েছেন। মামলার কাগজপত্র হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিষয়টি শিক্ষক সমাজের জন্য বিব্রতকর বলে জানান তিনি।