বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম অঞ্চলে আগাম শীতকালীন শাক-সবজি চাষের ধুম ভালো দাম পেয়ে চাষির মুখে হাসি প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে ৭ লাখ টন উৎপাদনের সম্ভাবনা মিশ্র বাগানে হরেক সুমিষ্ট ফলের সুবাস পাহাড়ে
কঠোর শ্রম-ঘামের বিনিময়ে জমিতে ফল-ফসল, শাক-সবজি চাষাবাদের মাধ্যমে জনগণকে খাদ্য জোগান দেন দেশের কর্মবীর কৃষক। প্রধান ফসল উঠতি আমনের পরিচর্যা চলছে। এর পাশাপাশি বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে হরেক জাতের শীতকালীন শাক-সবজির চাষের ধুম পড়ে গেছে। শীতের সবজি আগাম বাজারে বিকিকিনি শুরু হয়েছে। বেশি দাম হাতে পেয়ে খুশি চাষী। ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, শিম, টমেটো, বরবটি, ঢেঁড়শ, বেগুন, ঝিঙে, পটল, কাকরোল, শশা, চিচিঙ্গা, গাজর, ক্ষীরা, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, কচুমুখী, পালং শাক, কপিশাক, সজনে, ডাটা, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা, ব্রুকলি, লেটুস পাতা প্রভৃতি এখন মিলছে হাট-বাজারে। কৃষিবিদ ও চাষিরা জানান, গ্রীষ্ম বা বর্ষাকালীন ও শরৎকালীন সবজির সমারোহ থাকতেই শীতকালীন শাক-সবজি বাজারে আগাম এসে গেছে।
পাহাড়ি, টিলাময়, উপত্যকা, ঢালু, উঁচু-নিচু, সমতল, বেলে দো-আঁশ, লবণাক্তÑ চট্টগ্রাম অঞ্চলের মাটির বৈশিষ্ট্য দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় বৈচিত্র্যে ভরা এবং উর্বর। ভূমিরূপ বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী হরেক ধরনের ফল-ফসল, শাক-সবজি আবাদ ও উৎপাদন হচ্ছে। সব মিলিয়ে শীতকালীন আগাম সবজি বিপ্লব চলছে এ অঞ্চলের বিস্তীর্ণ পাহাড়-সমতলে। কোথাও পুষ্ট-পরিপক্ক শাক-সবজি ক্ষেত থেকে তুলে এনে হাট-বাজারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কোথাও পানি, সার দেয়া, আগাছামুক্ত করাসহ যত্ন হাতে উঠতি সবজি মাঠের পরিচর্যা করছেন কৃষক। আবার কোথাও বীজ বা চারা রোপণ করা হচ্ছে। এ মুহূর্তে কৃষকের দম ফেলার ফুরসৎ নেই।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. মনজুরুল হুদা গতকাল শুক্রবার দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ভালো বাজারদরের আশায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষাবাদ ব্যাপক আকারে হচ্ছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলের আওতায় ৫টি জেলায় (চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর) গত বছর ২৮ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়। এবার ৩০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে শীতকালীন সবজি চাষাবাদ হচ্ছে। এতে ৫ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি সবজি উৎপাদনের টার্গেট রয়েছে। তিনি জানান, নভেম্বর মাস পর্যন্ত চলবে সবজি চাষাবাদ। বিষমুক্ত সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের রাঙ্গামাটিস্থ পার্বত্য অঞ্চলের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নাসিম জানান, পার্বত্য অঞ্চলের তিনটি জেলায় (রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি) ৯ হাজার ৬৬৪ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ হচ্ছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন। সব মিলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে ৭ লাখ টন সবজি উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যার মূল্য কয়েক শ’ কোটি টাকা।
মধ্যপ্রাচ্যে চট্টগ্রামের বিষমুক্ত অর্গানিক তাজা শাক-সবজি, ফল-মূল রফতানি নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও বাড়ছে। ইউরোপ, আমেরিকার বিভিন্ন দেশেও আছে চাহিদা। মধ্যপ্রাচ্যে সবজি রফতানিতে আয় আসছে বার্ষিক প্রায় ৩০ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম ফ্রেশ ভেজিটেবলস অ্যান্ড ফ্রুটস এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মাহবুব রানা জানান, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্রেইট চার্জ, ভাড়া-মাসুল হ্রাস এবং কার্গো বিমান সুবিধা বাড়ানো হলে তাজা ফল ও সবজি রফতানির বাজার আরো প্রসারিত হবে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শাক-সবজি উৎপাদনে বিশে^ তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। সবজি উৎপাদনে চট্টগ্রামের প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ, যা জাতীয় প্রবৃদ্ধির চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি। সবজি উৎপাদনে চট্টগ্রামে বিপ্লব ঘটছে। করোনা মহামারীকালে কারো সাহায্য ছাড়াই কৃষকেরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আত্মবিশসে বলীয়ান হয়ে বৃদ্ধি-কৌশল-অভিজ্ঞতাগুলোকে কাজে লাগিয়ে ফলমূল, সবজি ফলাচ্ছেন। আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকায় এবং ভেজা ও উর্বর জমিতে বাম্পার ফলনে কৃষি বিভাগ আশাবাদী। পাহাড়-সমতলে মিশ্র বাগানে উৎপাদিত শাক-সবজির পাশাপাশি পেঁপে, কলা, আনারস, সফেদা, বাদাম, কাজু বাদাম, কাঠ বাদাম, জলপাই, লেবু, বারি জাতের মাল্টা, কমলা, আতা, বিদেশি ড্রাগন ফল, স্ট্রবেরি ইত্যাদি সুমিষ্ট ফল সুবাস ছড়াচ্ছে সারাবছর। ভালো দাম পেয়ে চাষির মুখে হাসি।
তবে অনেক এলাকা থেকে জানা যায়, কৃষক ও ক্রেতার মাঝখানে একটি মধ্যস্বত্ত্বভোগী, ফড়িয়া চক্র যথেচ্ছ মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে। এরফলে কৃষক ও ক্রেতা উভয়ে ন্যায্য দামে বেচাকেনা থেকে বঞ্চিত হয়ে ঠকছেন। আজ শনিবার আশি^ন মাস শেষ হচ্ছে। কার্তিক অর্থাৎ হেমন্ত ঋতু শুরু আগামীকাল রোববার। বিশেষত জুম ফল-ফসলের সঙ্গে শীতের আগাম সবজি তোলার বাড়তি আনন্দে পাহাড়ে পাহাড়ে কৃষক-কিষাণীর মাঝে নবান্নের প্রস্তুতি চলছে। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন তুলে ধরা হলো।
বান্দরবান থেকে মো. সাদাত উল্লাহ জানান, এ বনভূমির কৃষি-খামারে ব্যাপক সফলতা আসছে। কম খরচে স্বল্প সময়ে কৃষিপণ্য আবাদ ও ফলন অধিক লাভজনক হওয়ায় আগাম শীতকালীন সবজি উৎপাদনের ‘কারখানা’ বলা যায় বান্দরবান জেলাকে। সাঙ্গু, মাতামুহুরী নদীপাড়ের চর ও পলিমাটির উর্বর জমিতে ব্যাপকহারে শীতকালীন সবজির চাষাবাদ হচ্ছে। থানচি, রুমা, আলীকদম, লামা ও বান্দরবান সদরে হরেক জাতের শাক-সবজির চাষ হচ্ছে। ঢালু, উঁচু-নিচু জমিতে এবং পাহাড়ের জুম চাষের সাথেও মিশ্র সবজি চাষ হচ্ছে। বান্দরবান বাজারের সবজি বিক্রেতা এনামুল হক জানান, শীতকালীন সবজি ব্যাপকভাবে বাজারে না আসার কারণে দাম একটু বেশি। বান্দরবান কৃষি বিভাগ জানায়, জেলায় সবজিসহ কৃষিখাতে বিপ্লব সৃষ্টির লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান। জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবরিজী ইনকিলাবকে জানান, বান্দরবান কৃষি বিভাগকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। যাতে বান্দরবান জেলাকে কৃষিতে আধুনিক জেলায় উন্নীত করা যায়।
খাগড়াছড়ি থেকে মো. ইব্রাহিম শেখ জানান, এ জেলার ৯টি উপজেলায় পুরোদমে আগাম শীতকালীন শাক-সবজি চাষে ব্যস্ত চাষিরা। সবজি ক্ষেতের সযত্নে পরিচর্যার সাথে পাহাড়ি পল্লীগুলোতে হেমন্তের নবান্ন উৎসবের প্রস্তুতিও চলছে। আগাম শীতকালীন সবজি চাষাবাদ করছেন বেশি লাভের আশায়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সবজি চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ঢাকায়ও ক্রেতাদের চাহিদা মেটাবে। পাহাড়ের বিষমুক্ত সবজি যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যেও। খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া, পানছড়ি, তবলছড়ি, তাইদং, মোল্লা বাজার, বেলছড়ি, সুকনাছড়ি, মাইসছড়িসহ কয়েকটিগ্রামে ঘুরে দেখা গেছে দিনমজুরদের সাথে সবজি চাষিরা ক্ষেত পরিচর্যা, রোগ-বালাই দমন করে অধিক ফলনের আশায় হাড়ভাঙা পরিশ্রম করছেন। মাটিরাঙ্গার গোমতি এলাকার জুমচাষি অনন্ত ত্রিপুরা জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার পাহাড়ে জুমের ফলন ভালো হয়েছে। জুমে হলুদ, মারফা, আদা, মরিচ, কচু, মিষ্টি কুমড়া, তিল, ভুট্টা, শিম, বরবটিসহ প্রায় ৪০ জাতের শাক-সবজি চাষাবাদ হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মুর্ত্তুজা আলী জানান, জুমচাষিদের আধুনিক পদ্ধতিতে শাক-সবজি চাষে উৎসাহিত করছি। সবজি সংরক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, সহজ শর্তে ব্যাংকঋণ পেলে কৃষকরা আরও বেশি ভূমিকা রাখবেন।
কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি) থেকে কবির হোসেন জানান, রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাইয়ের উঁচু ও পাহাড়ের ঢালুতে জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজি চারা, বীজ রোপন ও পরিচার্যায় কৃষক পরিবারগুলো ব্যস্ত। বাণিজ্যিক চাষ হচ্ছে শাক-সবজির। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, যে কোন ফল-ফসল বা সবজি আগাম চাষাাবাদে ফলন এলে বাজারে চাহিদা বেশি থাকে। মুনাফাও আসে বেশি। ওয়াগ্গা এলাকার এনামুল হক বাচ্চু জানান তিনি পাহাড়ি জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করেছেন। সকাল-বিকাল খাটছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা থোয়াইনু চিং মারমা জানান, নভেম্বর মাসে আবহাওয়া ভালো থাকলে সবজির উৎপাদন ভালো হবে।
পটিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে এস কে এম নুর হোসেন জানান, উপজেলার খরনা, কচুয়াই, হাইদগাঁও, কেলিশহর ইউনিয়নে বিভিন্ন শীতকালীন সবজি আবাদ চলছে। বাজারে আগাম বিক্রয়ও শুরু হয়ে গেছে। কমলমুন্সির হাট পাইকারি সবজি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আগাম শীতকালীন সবজি বাজারে উঠলেও চাষীরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। কচুয়াই এলাকার চাষী আহম্মদ নূর জানান, খুচরা ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে সবজি কম দামে কিনে নিচ্ছেন। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে অবস্থিত পটিয়ায় শাকসবজির প্রধান পাইকারি আড়ত কমলমুন্সির হাটে ভোর ৬টা থেকে বিকিকিনি শুরু হয়। হাটের ইজারাদার রফিক আহম্মদ জানান, প্রতিদিন প্রায় ৫ লাখ টাকার শাক-সবজি এখানে ক্রয়-বিক্রয় হয়। পটিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্পনা রহমান জানান, সবজি চাষের উপযোগী এলাকাগুলোতে চাষীদের নতুন উন্নত জাতের সবজি উৎপাদনে সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) থেকে আসলাম পারভেজ জানান, আগাম শীতকালীন সবজি আবাদ ও উৎপাদনে কৃষকদের এখন নাওয়া-খাওয়ার যেন সময় নেই। হালদার নদীপাড়ে ও চরসমূহ শীতের সবজি উৎপাদনের উর্বর এলাকা। হালদার বালুচরের মরিচ, পুতি বেগুন, ঢাউস বড় মুলার সুনাম দেশ জোড়া। উপজেলার পশ্চিমে পাহাড়ের পাদদেশে প্রচুর সবজি উৎপন্ন হয়। উৎপাদিত আগাম সবজি হাটবাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। দামও ভাল পাচ্ছেন। দেওয়ান নগরের প্রবীণ কৃষক মো. আলতাফ হোসেন জানান তার মোট চার কানি ফসলি জমির মধ্যে দুই কানিতে আগাম শীতকালীন সবজির চাষ করেছেন।
ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) থেকে সৈয়দ জাহেদুল্লাহ কুরাইশী জানান, শীতের আগাম সবজি চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা। কারণ বাজারে যত আগে তোলা যায় ততই বেশি টাকা আয় আসছে। এ বছর বৈরি আবহাওয়া, করোনা পরিস্থিতিতেও আগাম সবজি চাষে পিছপা হননি এলাকার কৃষকগণ। উপজেলার মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া হালদা ও ধুরুং নদী এবং ফটিকছড়ি, সর্ত্তা ও গজারিয়া খালের দুই কূল জুড়ে বাগানবাজার, নারায়ণহাট, ভূজপুর, হারুয়ালছড়ি, পাইন্দং, কাঞ্চননগর, ফটিকছড়ি পৌর এলাকার চেউঙ্গারকূল, উত্তর ধুরুং, সুন্দরপুর, সুয়াবিল, কুম্বারপাড়া, চরগাঁপাড়া, রোসাংগিরি, খিরাম, ধর্মপুরসহ প্রায় প্রতিটি এলাকার মাঠ আগাম শীতের সবজিতে ভরে গেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, এখানকার কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজি চাষে এগিয়ে। কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কেবিএম ওমর ফারুক তুহিন জানান, উপজেলায় এবার ৩ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
সীতাকুণ্ড চট্টগ্রাম থেকে শেখ সালাউদ্দিন জানান, সীতাকুণ্ড দেশের অন্যতম প্রধান সবজি উৎপাদন এলাকা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা এমনকি বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। সাপ্তাহিক হাটে শত শত পাইকার আসছেন। পৌর এলাকার মোহন্তের হাটে সবজি ক্রেতা মোহাম্মদ আলী বলেন, শীতকালীন নতুন সবজির দাম একটু বেশি। বড় দারোগারহাট থেকে ভাটিয়ারী, সলিমপুর পর্যন্ত সারি সারি সবজি ক্ষেতের সমারোহ। গুলিয়াখালীর প্রবীণ কৃষক মো. আবু তাহের জানান, চলতি মৌসুমে তিন একর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন। সীতাকুণ্ড উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাবিবুল্লাহ জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫ হাজার ৩ শত হেক্টর জমিতে ১৮ হাজার ৬৫০ জন কৃষক শীতকালীন বিভিন্ন রকম সবজির আবাদ করেছেন। সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৯৮ হাজার ৯৮০ টন।
মীরসরাই থেকে ইমাম হোসেন জানান, আগাম শীতের সবজি চাষে কৃষক যেমনি লাভবান হচ্ছেন তেমনি ক্রেতারা পাচ্ছেন আগাম স্বাদ। উঁচু জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজি আবাদে কৃষক পরিবারগুলোর ভাগ্য খুলে গেছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আগাম সবজি চাষের দেখা মিলেছে উপজেলার দুর্গাপুর, চৈতন্যহাট, করেরহাট, খৈয়াছরা, কমলদহ, আবুরহাট, আবুতোরাব, মঘাদিয়া, তালবাড়িয়া, মস্তাননগর, আমবাড়িয়া, ওয়াহেদপুর, হিঙ্গুলীসহ বিভিন্ন এলাকায়। নয়দুয়ারিয়া গ্রামের কৃষক এমরান হোসেন জানান, শীতকালীন সবজির আগাম চাষে বেশি মুনাফা পাওয়া যায়। আধুনিক পদ্ধতিতে কীটনাশক তথা বিষমুক্ত সবজি চাষ সম্ভব। উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার কাজী নুরুল আলম বলেন, শীতের সবজির আগাম চাষাবাদে কৃষক সবচেয়ে বেশি লাভবান হন।