বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : এক সময়ের প্রাচ্যের ড্যান্ডিখ্যাত নারায়ণগঞ্জ। নারায়ণগঞ্জ বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী বন্দর। এ জেলাটি ঢাকা হতে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরে এবং ঢাকা শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত। নারায়ণগঞ্জ ১৯৪৭ সালে মহকুমায় এবং ১৯৮৪ সালে জেলায় উন্নীত করা হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলার অভ্যন্তর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর নাম শীতলক্ষ্যা। শীতলক্ষ্যা নদীটি দেশের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নদী। এর দু’পাড়েই বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্প নগরী নারায়ণগঞ্জ গড়ে উঠেছে। শীতলক্ষ্যার দুই পাড়ে বিবিধ প্রকৃতির শিল্প প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ নগরীতে বিসিক শিল্পাঞ্চল ছাড়াও রফতানিমুখী নীট গার্মেন্টস শিল্পের অবস্থান। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে রয়েছে আদমজী ইপিজেড। সমগ্র নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীসহ ৫টি উপজেলায় নানাবিধ গার্মেন্টস এবং গার্মেন্টস সম্পর্কিত শিল্প এবং স্পিনিং ফ্যাক্টরিতে সমৃদ্ধ হয়েছে। আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জে রয়েছে তাঁতশিল্প। এছাড়া নদীর আশপাশে জাহাজ নির্মাণ ও মেরামত শিল্প দেশের অর্থনীতিতে আশাব্যঞ্জক খাত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ ও হরিপুর বিদ্যুত কেন্দ্র, ডকইয়ার্ড, সাইলো ইত্যাদি নারায়ণগঞ্জ নগরীকে শিল্প সমৃদ্ধ করে তুলেছে।
জেলার ৫টি সংসদীয় আসনেই আওয়ীমী লীগের আমলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে জেলার সর্বত্র। সময়ের ব্যবধানে উন্নয়নের মহাযজ্ঞে পাল্টে গেছে জেলার চালচিত্র।
ডিএনডি প্রকল্প ॥ ১৯৬২-১৯৬৮ সালে মূলত সেচ ও পানি নিষ্কাশন কাজের সুবিধার জন্য ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) এলাকার নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পটি গৃহীত হয়। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, অপর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থপনা, অবৈধ দখলদারিত্ব ও জনগণের অসচেতন মনোভাবের কারণে বর্জ্য ও আবর্জনার পরিপূর্ণ সেচ খালসমূহের পানি প্রবাহ কার্যত বন্ধ হয়েছিল। সমস্যাসমূহের সমাধানকল্পে ৫৫৮ কোটি ১৯ লাখ ৭৮ হাজার ব্যয়ে ডিএনডি এলাকার নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন (২য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত একনেক সভায় উত্থাপিত হয় এবং প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। পরে এটি বাস্তবায়নের জন্য ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পরে ২০১৭ সালের ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী উক্ত প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগ্রেড এর অধীনে ১৯ ইসিবি উক্ত প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু করে। কিন্তু বাস্তব অবস্থায় প্রেক্ষিতে প্রকল্পের দীর্ঘমেয়াদী সুফলের জন্য প্রকল্পের ডিপিপি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের মেয়াদ ৩ বছর বৃদ্ধিসহ প্রকল্পের ব্যয় ১২৯৯ কোটি টাকা নির্ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক উক্ত প্রকল্পের আরডিপিপি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় অনুমোদিত হয়।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১০ মেগা প্রকল্প ॥ নারায়ণগঞ্জ বাংলাদেশের একটি অতি পুরাতন ঐতিহ্যবাহী বন্দর নগরী। নারায়ণগঞ্জ নগরীর গুরুত্ব বিবেচনা করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালে ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ ও কদমরসুল এই ৩টি পৌরসভা নিয়ে ৭২ দশমিক ৪৩ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশেনের অধীনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলেই ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন আরসিটি রাস্তা, কালভার্ট, আরসিসি ড্রেনসহ রাস্তা, এলইডি স্ট্রিট লাইট স্থাপনসহ নানা ধরনের উন্নয়ন কাজ শেষ হয়েছে এবং চলমানও রয়েছে।
কদমরসুল ব্রিজ নির্মাণ ॥ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নগরীর ৫নং গুদারাঘাট হতে পূর্ব পাড়ে মদনগঞ্জ ঘাট এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। ব্রিজটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলে কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ ব্যবস্থাপনা ॥ ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ ও অপসারণ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্প ৯নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনকে টেকসই, আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব নগরীতে গঠন করার লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য স্থায়ী ডাম্পিং গ্রাউন্ড স্থাপনের নিমিত্ত জনগুরুত্ব অনুধাবন করে জালকুড়ি মৌজায় ২৩ দশমিক ২৯ একর জমি অধিগ্রহণের নিমিত্ত ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের নিকট প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়। যা একনেক কর্তৃক ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর অনুমোদিত হয়। এটি শতভাগ সরকারী সহায়তাপুষ্ট বিনিয়োগ প্রকল্প। প্রাথমিকভাবে প্রকল্পের মোট ব্যয় ছিল ১৯১ কোটি ১৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
কদমরসুল অঞ্চলে কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ ॥ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন গত ২০২০ সালের ২১ জুলাই ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কদমরসুল অঞ্চলে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্প’ প্রস্তাব (উচ্চ) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করে। যার প্রস্তাবিত প্রকল্প ব্যয় ৩০১ কোটি ৩৫ লাখ ২১ হাজার টাকা। ২০২০ সালের ২০ অক্টোরব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় শতভাগ সরকারী ব্যয়ে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়।
শীতলক্ষ্যা থেকে ধলেশ্বরী নদী পর্যন্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও শোভাবর্ধনকরণ ॥ বাবুরাইল খালটি নারায়ণগঞ্জ নগরীর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ধলেশ্বরী পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার বিস্তৃত একটি সংযোগ খাল। খালটি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০১৪-১৫ সালে ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বাবুরাইল খাল পুনরুদ্ধারসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও শোভাবর্ধন ও আলোকিতকরণ (শীতলক্ষ্যা নদী হতে ধলেশ্বরী নদী পর্যন্ত)’ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্দেশে বিশ্ব ব্যাংকের নিকট প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে ২০১৮ সালে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ১৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বর্তমানে প্রকল্পটির উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
পরিচ্ছন্ন কর্মী নিবাস নির্মাণ ॥ সিটি কর্পোরেশনে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের জন্য পরিচ্ছন্ন কর্মী নিবাস নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২০১৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে পরিচ্ছন্ন কর্মী নিবাস নির্মাণ’ প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ১ জুলাই ২০১৭ হতে ৩০ জুন ২০২২ পর্যন্ত। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৫৪০টি পরিবারের জন্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭টি ১০ তলা বিশিষ্ট ভবনে ৫৪৯টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ খাল পুনঃখনন ও সৌন্দর্যবর্ধন কাজ ॥ ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ডিএনডি সেচ প্রকল্প গ্রহণ করা হয় এবং এ প্রকল্পে প্রয়োজনীয় পানি সংরক্ষণের জন্য আদমজি ইপিজেড হতে ডেমরা সড়ক পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার জলাধার নির্মাণ করা হয়। বিলুপ্ত জলাধারটি উদ্ধার ও নির্মল পরিবেশ ফিরিয়ে আনার প্রয়াসে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী সিটি গবর্নেন্স প্রকল্পের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সিদ্ধিরগঞ্জ লেক (শিমরাইল হতে ভাঙ্গারপুল পর্যন্ত) পুনঃখননসহ খালের পশ্চিম পাড়ে রাস্তা, ড্রেন, ব্রিজ, ওয়াকওয়ে, ল্যান্ডস্কেপিংসহ সৌন্দর্যবর্ধন শীর্ষক প্রকল্পটি গ্রহণ করেন এবং ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তার স্থাপন করেন।
১০ তলা ভিত বিশিষ্ট নগর ভবন নির্মাণ ॥ নগরবাসীকে উন্নত সেবা প্রদানের নিমিত্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু উন্নত কর্মপরিবেশ না থাকায় সেবা প্রদান ব্যাহত হচ্ছিল। সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হলে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব অফিস ভবন নির্মিত হবে, সম্প্রসারিত কর্মস্থল তৈরি হবে, নাগরিক সেবার মান বৃদ্ধি পাবে এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনকে একটি উত্তম সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করা সম্ভব হবে।
৫৪ কোটি টাকায় ১৬নং ওয়ার্ডে শেখ রাসেল পার্ক নির্মাণ ॥ পরিবেশবান্ধব ঘনসবুজ ঘেরা ছায়া ঢাকা, নির্মল পানি সমৃদ্ধ লেক বেষ্টিত জীমখানায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সর্বকনিষ্ঠ ছেলের নামে শেখ রাসেলটি পার্ক এখন নগরীর অন্যতম দর্শনীয় স্থান। পার্কটি নারায়ণগঞ্জ নগরবাসীর একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র। প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বিপুল সংখ্যক লোক এখানে প্রকৃতির নির্মল পরিবেশ উপভোগ করার জন্য আগমন করে।
এলইডি স্ট্রিট লাইট স্থাপন ॥ ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নারায়ণগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ ও কদমরসুল অঞ্চলে এলইডি স্ট্রিট লাইট স্থাপনের জন্য প্রায় ৪৬ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। আলী আহম্মদ চুনকা সিটি পাঠাগার ও মিলনায়তন নির্মাণ ॥ আলী আহম্মদ চুনকা সিটি পাঠাগার ও মিলনায়তনটি নারায়ণগঞ্জ নগরীর ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন একটি প্রতিষ্ঠান, যা ১৯২৯ সালে পৌর পাঠাগার নামে প্রতিষ্ঠিত হয়।
‘বীরপ্রতীক গাজী সেতু’ ॥ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া-দড়িকান্দি এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে ‘বীরপ্রতীক গাজী সেতু’ নামের সেতুটি ৭৪ কোটি ৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটি বর্তমান পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের নামে করা হয়েছে। ২০২০ সালের ২২ নবেম্বর বেলা ১১টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি উদ্বোধন করেন।
রূপগঞ্জের ভুলতা ফ্লাইওভার ॥ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় ভুলতা-গাউছিয়া ফ্লাইওভারটি ৩৫৩ কোটি ৩৬ লাখ ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। চারলেন বিশিষ্ট ফ্লাইওভারটি ১ দশমিক ২৩৮ কিলোমিটার লম্বা। যার উভয় গার্ডার অভ্যন্তরে চারলেন বিশিষ্ট। এ ফ্লাইওভারটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ উদ্বোধন করেন।
শীতলক্ষ্যা তৃতীয় সেতু ॥ নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার চরসৈয়দপুর এলাকায় নির্মিত হচ্ছে শীতলক্ষ্যা তৃতীয় সেতু। এ সেতুটির প্রকল্প ব্যয় এখন প্রায় সাড়ে ৬শ’ কোটি টাকা। এ সেতুটি চালু হলে সড়ক যোগাযোগে যুগান্তকারী সাফল্য এনে দিবে। এই সেতু ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দূরত্ব কমিয়ে দেবে ৯ কিলোমিটার। শুধু দূরত্বই কমছে না এর ফলে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের কয়েক পয়েন্টের যানজটও হ্রাস পাবে। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা জানান চলতি বছরের ডিসেম্বরে সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হতে পারে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু ॥ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুর ও সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতুটি ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন। দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯৫০ কোটি টাকা।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্বিতীয় মেঘনা সেতু ॥ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মেঘনা এলাকায় দ্বিতীয় মেঘনা সেতু ২০১৯ সালের ২৫ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। এই সেতুটি নির্মাণের ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৭শ’ ৫০ কোটি টাকা। এ সেতুটি চার লেন বিশিষ্ট এবং ১৭ দশমিক ৭৫ মিটার প্রস্থেও সেতুতে দেড় মিটার ফুটপাথ রাখা হয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেন থেকে আট লেনে উন্নীতকরণ ॥ শেখ হাসিনার সরকারেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী থেকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের কাঁচপুর সেতু পর্যন্ত দেশের একমাত্র আট লেনের মহাসড়ক তৈরি করেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যানজট কমাতে ২০১১ সালের জুলাই মাসে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের কাঁচপুর সেতু পর্যন্ত আট লেন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট এটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়।
১১৩ কোটি টাকায় চাষাঢ়া-খাঁনপুর-হাজীগঞ্জ-গোদনাইল-আদমজী ইপিজেড সড়ক নির্মাণ ॥ পুরাতন নারায়ণগঞ্জ-শিমরাইল-ডেমরা সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে আদমজী ইপিজেড। এখানে প্রায় ৭০ হাজার শ্রমিক কাজ করছে। প্রতিনিয়ত এ সড়কটি দিয়ে শ্রমিকরা আসা-যাওয়া করায় করছে। এ ছাড়াও এ সড়কের পাশে সিদ্ধিরগঞ্জে গড়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জ সাইলো (খাদ্য গুদাম), গোদনাইলে গঠে উঠেছে পদ্মা ওয়েল কোম্পানির ডিপো ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম কর্পোরোশনের ডিপো।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্করোডটি (চাষাঢ়া-সাইনবোর্ড) ৬ লেনে উন্নীতকরণ ॥ শিল্পাঞ্চল নারায়ণগঞ্জ শহরে যাতায়াতের অন্যতম সড়ক হচ্ছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্করোড। এ সড়কটি দিয়ে শহরবাসীসহ অন্যান্য আশপাশের লোকজন ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করছে। এ ছাড়াও এ সড়কের আশপাশে রয়েছে সরকারী প্রায় সকল অফিস আদালত।
আশ্রয়ণের প্রকল্পে ঘর বিতরণ ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের ৬১২ ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে নতুন ঘর বিতরণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে জমি-ঘর নেই এমন পরিবারকে দুই শতাংশ খাস জমিতে সরকারী খরচে দুই কক্ষের আধাপাকা ঘর তৈরি করে দেয়া হয়েছে। জেলার ৬১২টি পরিবারের জন্য রূপগঞ্জ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ৪৯৮টি জমি ও ঘর দেয়া হয়েছে।