বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করল দেড়শ বছরের পুরোনো ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদটি। জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর ২০২১ সালের ‘এশিয়া-প্যাসিফিক অ্যাওয়ার্ডস ফর কালচারাল হেরিটেজ কনজারভেশন’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে মসজিদটি। বাংলাদেশসহ ৬টি দেশের ৯টি প্রকল্প বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এবার পুরস্কার পেয়েছে। এর মধ্যে ‘অ্যাওয়ার্ড অব মেরিট’ ক্যাটাগরিতে স্বীকৃতি পেয়েছে দোলেশ্বর মসজিদটি।
১৮৬৮ সালে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত। তখনকার জনসংখ্যা বিবেচনায় এটি ছোট আকারে নির্মাণ করা হয়েছিল। এর পর মসজিদটি একাধিকবার সম্প্রসারণ করা হয়। কালের পরিক্রমায় এ মসজিদের অবকাঠামো ক্ষয়িষুষ্ণ হয়ে পড়ে। কয়েক বছর আগে মসজিদটি সংস্কার করে পুরোনো রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। স্থপতি আবু সাঈদ এম আহমেদ সংস্কার কাজের নেতৃত্ব দেন। ২০১৮ সালে তা শেষ হয়। পরে ইউনেস্কোর স্বীকৃতির জন্য স্থপতি সাঈদ আহমেদ আবেদন করেন।
স্থপতি আবু সাঈদ বলেন, বাংলাদেশে সাধারণত পুরোনো মসজিদ ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে পুরোনোটা রেখে নতুনটা তৈরি করা হয়েছে এবং পুরোনোটাকে আদি অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দেড়শ বছর আগে চুন-সুরকি দিয়ে এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। এটিকে পুরোনো রূপ দিতে তাই চুন-সুরকি দিয়ে সংস্কার করতে হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সেকালে এ মসজিদটি নির্মাণের সঙ্গে তার পূর্বপুরুষরা জড়িত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, পুরোনো মসজিদের পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে নতুন একটি মসজিদ। পুরোনো মসজিদটি আগের নকশায় সংস্কার করে লাইব্রেরি এবং মক্তবে রূপান্তর করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লি ও পর্যটক ঘুরতে আসেন এ মসজিদে। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শিশির বলেন, মসিজদটি সংস্কার হওয়ার পর দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠলে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনায় আসে। তখন থেকে মসজিদটি দেখতে দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ আসতে থাকেন।
মসজিদের সভাপতি প্রিন্সিপাল মাসউদ হাসান বলেন, প্রাচীনকালে নির্মিত মসজিদটি দীর্ঘ দিন থেকে কেরানীগঞ্জবাসীর কাছে সুপরিচিত। তারা মিডিয়ার মাধ্যমে ইউনেস্কোর পুরস্কার পাওয়ার খবর জেনেছেন। এতে তারা আনন্দিত। মসজিদটি নিয়ে কেরানীগঞ্জবাসী সত্যিই গর্ব করতে পারেন।
বিবিসি জানায়, বাংলাদেশ ছাড়াও এবার ভারত, চীন, জাপান, মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ডের বিভিন্ন স্থাপনা ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে। গত ১ ডিসেম্বর পুরস্কারজয়ীদের নাম ঘোষণা করে সংস্থাটি। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, এসব স্থাপনার মাধ্যমে ঐতিহ্যের যে বৈচিত্র্য ধরে রাখা হয়েছে, সেটি সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। যেসব স্থাপনা পুরস্কার পেয়েছে সেগুলোতে টেকসই উন্নয়নের নানা দিক রয়েছে। জানা গেছে, পুরোনো স্থাপনাগুলোর সংরক্ষণ ঠিকমতো হয়েছে কিনা, সেটি বিশ্নেষণ করে ইউনেস্কোর বিশেষজ্ঞ কমিটি পুরস্কারজয়ীদের নাম ঘোষণা করে।