বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : খুব শীঘ্রই সারাদেশে বাণিজ্যিকভাবে ফাইভজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল রেডিসনে টেলিটকের মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক ফাইভজি নেটওয়ার্ক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেয়া ভিডিওবার্তায় এ কথা বলেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় পঞ্চম ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসে রবিবার রেডিসন ব্লুতে আয়োজিত ‘নিউ ইরা উইথ ফাইভজি’ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই সেবার উদ্বোধন করেন।
টেলিটকের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ধানমন্ডি-৩২, বাংলাদেশ সচিবালয়, মানিক মিয়া এভিনিউ এবং ঢাকার বাইরে সাভার ও টুঙ্গিপাড়ায় এই সেবা পাওয়া যাবে। হুয়াওয়ে এবং নোকিয়ার সহযোগিতায় এই সেবা চালু করা হচ্ছে। বিশ্বের নবম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ফাইভজি সেবা চালু হলো বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে এখন সীমিত আকারে ফাইভজি চালু হলেও খুব শীঘ্রই বাণিজ্যিকভাবে সারাদেশে সম্প্রসারিত হবে। ’
বিশ্বের সর্বাধুনিক মোবাইল নেটওয়ার্ক ফাইভজি প্রযুক্তি পরীক্ষামূলকভাবে চালুর জন্য ডাক ও টেলিযোগ বিভাগ এবং টেলিটককে ধন্যবাদ দেন প্রধানমন্ত্রী। এ উপলক্ষে দেশবাসীকেও আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতেন সেই সোনার বাংলার আধুনিক রূপ হলো বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ। এই উদ্যোগের সুফল জনগণ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সারাদেশে ফোরজি নেটওয়ার্ক চালু হয়েছে। প্রতিটি গ্রাম থেকে শুরু করে পার্বত্য এলাকা, সুন্দরবন, গহীন অরণ্য, হাওড়-বাঁওড় এলাকা, সমস্ত এলাকাতে ফোরজি নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ফলে সব শ্রেণী-পেশার মানুষ ডিজিটাল সেবা গ্রহণ করতে পারছেন। এটি কৃষি-শিল্প-বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা সর্বত্রই অভাবনীয় সাড়া ফেলেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, উচ্চগতির নেটওয়ার্কের বদলতে দেশে প্রচুর ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। দেশের যুব সমাজের একটি বিরাট অংশ ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসে আয়ের সুযোগ পাচ্ছে। ফলে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন আরও বেগবান হবে। ফাইভজি প্রযুক্তির মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বাস্তবায়নে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সরকার প্রধান।
তিনি বলেন, দেশের যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রা ও জীবন মান আরও উন্নত করতে সক্ষম হবে।
ফাইভজি প্রযুক্তি সেবা কেবল গ্রাহকদের জন্য মোবাইল ব্রডব্যান্ড ও ভয়েস কলের প্রযুক্তি নয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আইওটি, রোবোটিক্স, বিগডাটা, ব্লকচেন, আইওটি প্রযুক্তির আইওটি, হিউম্যান টু মেশিন, মেশিন টু মেশিন ইত্যাদি প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে ক্রিটিক্যাল মিশন সার্ভিস, স্মার্ট গ্রিড, স্মার্ট সিটি, স্মার্ট হোম, স্মার্ট ফ্যাক্টরি সুবিধা পাওয়া যাবে।
এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল গ্রাহকরা অধিকতর উন্নত গুণগত মানের ভয়েস কল ও ফোরজি থেকে বহুগুণ দ্রুত মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে সক্ষম হবে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ঢাকায় বসে প্রত্যন্ত অঞ্চলে রোগীর রোবট সার্জারি করা যাবে। ড্রাইভারবিহীন গাড়ি চালানো যাবে, স্মার্ট ফ্যাক্টরি স্থাপনের মাধ্যমে অটোনোমাস উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা যাবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ, টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মোঃ খলিলুর রহমান, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাহাব উদ্দিন।
এছাড়া হুয়াওয়ের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট সাইমন লিন এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ঝ্যাং ঝেংজুন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। বাংলাদেশ ও ফাইভজি উন্মোচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে অভিনন্দন জানান তারা।