নিজস্ব প্রতিনিধি : প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসি)-এর উদ্যোগে এবং বাংলাদেশস্থ সুইজারল্যান্ড দূতাবাস এর সহায়তায় পিআইবি-এর সম্মেলন কক্ষে এসডিজি-১৬ নিয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় পিআইবি, তথ্য অধিদপ্তর (পিআইডি) ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এর মোট ৩৬জন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বা এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান নিয়ামক হলো জনগণের অংশগ্রহণ। এসডিজি অর্জন করতে হলে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় সকল অংশীজনদের সম্পৃক্ত করতে হবে। অভীষ্ট ১৬ অর্জনে সফল হলে অন্যান্য অভীষ্টসমূহ অর্জন অনেকাংশেই সহজ হবে।
‘শান্তি, ন্যায়বিচার ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান’ প্রতিটিই উন্নয়নের অন্যান্য সূচকের সাথে ইতিবাচকভাবে সম্পর্কিত। অভীষ্ট ১৬-এর সাথে জড়িত সকল ধারণাগত বিষয়সমূহ বাংলাদেশের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ নয়। এক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনসহ সকলকে একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা তৈরি করতে হবে। যেমন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে যদি ‘শান্তি, ন্যায়বিচার ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান’ করাকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয় তাহলে বাংলাদেশের সকল মানুষের উন্নয়ন করা সহজ হবে। বাংলাদেশের জন্য এসডিজি ১৬ এর বিভিন্ন লক্ষ্য ও বিষয়গুলোতে জনগণকে সম্পৃক্ত করা জরুরি। তাই এক্ষেত্রে সময়োপযোগী অগ্রাধিকার ঠিক করার সুযোগ রয়েছে।
এসডিজি ১৬ বাস্তবায়নে তথ্য অবহিতকরণ এবং জনমত গঠনে গণমাধ্যমের ভূমিকাও অপরিসীম। তথ্যের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সর্বোপরি জনগণ ও রাষ্ট্রের মধ্যে সেতুবন্ধন স্থাপনে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার বিষয়টি প্রতিফলনের ওপর গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ১৬.১০.১ এবং ১৬.১০.২ অর্জন জোরালোকরণ এবং এসডিজি প্রোগ্রেস রিপোর্ট, ভলান্টারি ন্যাশনাল রিভিউ (ভিএনআর)-তে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) সহ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানসমূহের ভূমিকাকে আরো দৃশ্যমান করার লক্ষ্যে আজ ২০ ডিসেম্বর, ২০২১ ‘এসডিজি ১৬.১০.১ এবং ১৬.১০.২ বাস্তবায়ন, বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভার উদ্দেশ্য এসডিজি ১৬.১০.১ এবং ১৬.১০.২ বাস্তবায়নের ভ‚মিকা রাখা এবং এসডিজি অগ্রগতি প্রতিবেদন এবং ভলান্টিারি ন্যাশনাল রিভিউ (ভিএনআর) তে পিআইবি’র কার্যক্রমকে তুলে ধরার জন্য কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন। সভায় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব জাফর ওয়াজেদ, মহাপরিচালক, পিআইবি। জনাব জাফর ওয়াজেদ তার বক্তব্যে বলেন-চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে মিডিয়া, তথ্য এবং বিনোদন জগতে যে ধরনের পরিবর্তন এসেছে তা মোকাবেলা করতে এবং এসডিজি ১৬.১০.১ এবং ১৬.১০.২ বাস্তবায়নে গণমাধ্যমকর্মী, সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠাসমূহের যেমন পেশা দক্ষতা উন্নয়ন এবং নৈতিকতা অক্ষুন্ন রাখার ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে। তেমনি মিডিয়া হাউজের কর্মপরিবেশ এবং নীতিমালাও অনুকূল থাকতে হবে।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনাব এইচএম বজলুর রহমান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বিএনএনআরসি। উপস্থাপনায় তিনি পিআইবিসহ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রমকে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রার সাথে সম্পৃক্তকরণের পাশাপাশি এসডিজি অগ্রগতি প্রতিবেদন এবং ভলান্টিারি ন্যাশনাল রিভিউ (ভিএনআর) -তে দৃশ্যমান করার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন।
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন জনাব মোহাম্মাদ আফরাজুর রহমান, পরিচালক (অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণ), পিআইবি। তিনি সরকারের গৃহিত বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং পিআইবি এর কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা করেন। এসডিজি বাস্তবায়নে কাউকে পেছনে না ফেলে না রেখে কাজ করে এগিয়ে যেতে হবে। জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলে উল্লেখিত গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে যে চ্যলেঞ্জগুলো রয়েছে সেগুলোর ওপর কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনসিডিসি-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার জনাব শহীদুল ইসলাম শোভন বলেন, শক্তিশালী ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের সিনিয়র উপ প্রধান তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল জলিল বলেন, সাংবাদিকদের জন্য একটি কোড অব কন্ডাক্ট এবং উপযুক্ত কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জগুলোকে মেকাবেলা করে এসডিজি-১৬ বাস্তবায়নে সবাই ভূমিকা রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জনাব শাহ আলম, প্রশিক্ষক, পিআইবি।