বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে সংযোগ জোরদারে সম্মত হওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ বিমান ভারতের চেন্নাই হয়ে মালদ্বীপের সাথে বিমান যোগাযোগ চালু করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স চেন্নাই হয়ে মালদ্বীপের সাথে ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছে। আমরা আশা করি যে ফ্লাইট চালুর ফলে দু’দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ এবং পর্যটন সহযোগিতা আদান-প্রদান বৃদ্ধি পাবে।’
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলার ফ্লাইট শুরুর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট বাড়নো হয়েছে।
তিনি বলেন, সংলাপের সময় তারা দুই দেশের মধ্যে বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, যুব ও খেলাধুলা, মৎস্য ও কৃষি খাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যু রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।
বৈঠকে তারা বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে যোগ্য স্বাস্থ্য পেশাজীবী নিয়োগের বিষয়ে সমঝোতা স্মারক, বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক এবং দ্বৈত কর এড়ানো এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে কর ও আয় সংক্রান্ত বিষয়ে চুক্তি এবং চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্যসেবা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক বিষয়ে আলোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের পূর্ববর্তী সিদ্ধান্তসমূহ পর্যন্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছি এবং ফলাফল সন্তোষজনক পেয়েছি।’ তিনি বলেন, তারা উভয় দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে এমন অনথিভুক্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়মিতকরণের বিষয়েও আলোচনা করেছেন। তারা বহুপক্ষীয় ফোরামে সহযোগিতা, একে অপরের প্রার্থীদের সমর্থন এবং সন্ত্রাস দমনে সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা করেছেন। তার সরকার তার দেশের মাটি ব্যবহার করে বাংলাদেশসহ অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকা-ের অনুমতি দেবে না। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টও আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সমৃদ্ধি, স্থিতিশীলতা ও শান্তি নিশ্চিত করতে সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করার অঙ্গীকার করেন। প্রেসিডেন্ট সালিহ বলেন, তার সরকার রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
তিনি কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন সহায়তার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান এবং মালদ্বীপের নাগরিকদের জন্য আগমনের পর ভিসা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগ কামনা করেন। মালদ্বীপের শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশকে একটি কাক্সিক্ষত গন্তব্য উল্লেখ কওে প্রেসিডেন্ট সলিহ প্রধানমন্ত্রীকে এসব শিক্ষার্থীদের জন্য পূর্ণ মেয়াদি ভিসা দেওয়ার আহ্বান জানান।
আলোচনাকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনীম প্রমুখ বাংলাদেশ পক্ষে উপস্থিত ছিলেন। মালদ্বীপের পক্ষে ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল নাসিম, অর্থমন্ত্রী ইবরাহিম আমীর, স্বাস্থ্যমন্ত্রী আহমেদ নাসিম, শিক্ষামন্ত্রী আসিয়া নাসির, অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রী উজ ফাইয়াজ ইসমাইল এবং পরিবেশ ও জ্বালানি মন্ত্রী সোরিক ইবরাহিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।