বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বহুমাত্রিক গবেষণা চলমান রাখার প্রত্যাশা

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বহুমাত্রিক গবেষণার যে বলিষ্ঠ ধারা সূচিত হয়েছে, তা স্বাচ্ছন্দ্য গতিতে চলমান থাকবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের জাজেস স্পোর্টস কমপ্লেক্সে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রকাশিত মুজিববর্ষ স্মারকগ্রন্থ ও স্মরণিকা ‘বঙ্গবন্ধু ও বিচার বিভাগ’ ও ‘ন্যায়কণ্ঠ’র মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জীবনে মামলা, আদালত, নির্যাতনমূলক গ্রেফতার তথা পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক আরোপিত আইনি অভিঘাতের ওপর বিশ্লেষণধর্মী উল্লেখযোগ্য আলাদা কোনও সংকলন ছিল না। এই গ্রন্থ সেই শূন্যতা কিছুটা হলেও দূর করতে সক্ষম হবে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বহুমাত্রিক গবেষণার যে বলিষ্ঠ ধারা সূচিত হয়েছে, তা স্বাচ্ছন্দ্য গতিতে চলমান থাকবে বলে আমি একান্তচিত্তে প্রত্যাশা করি। বঙ্গবন্ধুর কর্ম ও জীবনাদর্শ আমাদের চিরন্তন প্রেরণার উৎস।’

তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে উর্বর ক্ষেত্র বঙ্গবন্ধু প্রস্তুত করেছিলেন, তার প্রধান মাধ্যম ছিল বাংলা ভাষা। তার লালিত স্বপ্ন ছিল আদালতে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠা করা। স্মারকগ্রন্থে বঙ্গবন্ধুর বহুমাত্রিক ঘটনাবহুল জীবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উচ্চ আদালতের মোট ৯টি রায় বাংলায় অনূদিত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়টির বঙ্গানুবাদও এই স্মারকগ্রন্থে সংযোজন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে আবর্তিত রায়গুলোর বাংলা অনুবাদ তাঁর স্মৃতির প্রতি আমাদের কিন্তু শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ মাত্র।’

করোনাকালে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে আদালত পরিচালনার নতুন আইন করার বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ উদ্যোগ এবং সর্বোচ্চ আন্তরিকতার ফসল হচ্ছে আদালত কর্তৃক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ, তথা আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০। যা বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। ভার্চুয়াল কোর্ট শুরুর সময়কালে আপিল বিভাগে মামলা বিচারাধীন ছিল ২৪ হাজার ৩৫৬টি, বর্তমানে বিচারাধীন আছে ১৫ হাজার ৫৫৬টি। হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কনফার্ম এর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ১২৫টি আপিল ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে আপিল বিভাগ নিষ্পত্তি করে. যা থেকে ভার্চুয়াল কোর্টের সাফল্য সহজে অনুমেয়।’

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি, ভার্চুয়াল এবং ফিজিক্যাল কোর্টের মাধ্যমে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব। বিচার বিভাগকে ডিজিটাইজেশন করার নিমিত্তে গৃহীত ‘মিশন ডিজিটাল জুডিসিয়ারি, ২০২১’ এবং ‘ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইনমন্ত্রী, আইসিটি উপদেষ্টা এবং তথ্য ও যোগাযোগ বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিমন্ত্রীর নিরন্তর প্রচেষ্টা সত্যিই প্রশংসনীয়। এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে বিচার বিভাগে যুগান্তকারী সংস্কার সাধিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’’

গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের জাজেস স্পোর্টস কমপ্লেক্স থেকে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন— প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম প্রমুখ।

এসময় অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্ট আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিনসহ ডেপুটি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বহুমাত্রিক গবেষণা চলমান রাখার প্রত্যাশা
Comments (0)
Add Comment