বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ এখন এমন এক পর্যায়ে, যেখানে হেনরি কিসিঞ্জারের সেই ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ তকমা নিরর্থক। শুধু নিরর্থক নয়, বাংলাদেশের দ্রুত উন্নয়ন বিবেচনায় এটাও বলা যায়, কিসিঞ্জার সেদিন তকমাটি কোনো যুক্তি ছাড়া অযথাই দিয়েছিলেন। কারণ সেই বাংলাদেশ এখন বিশ্ববাণিজ্যের অন্যতম এক অংশীদার হয়ে উঠছে।
দেশটি ইতোমধ্যেই ভারতের রপ্তানি বাণিজ্যে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলেছে। তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরে (২০২১-২২) যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনকে পেছনে ফেলে ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম রপ্তানি অংশীদার হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। খবর দ্য পলিসি টাইমসের
অথচ ভারত থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে গত ২০১৯-২০ অর্থবছরেও বাংলাদেশ ছিল নবম অবস্থানে। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও আমদানি আরও বেড়ে গত অর্থবছরে সেই অবস্থান এসে দাঁড়ায় পঞ্চমে। এবার এই অর্থবছরে সেটি চতুর্থ অবস্থানে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতে মূলত এপ্রিলে শুরু হয় অর্থবছর। সে হিসেবে চলতি অর্থ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত সাত মাসে বাংলাদেশ থেকে ভারতের রপ্তানি আয় গত অর্থবছরের (২০২০-২১) একই সময়ের তুলনায় ৮১ শতাংশ বেড়ে ৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। যা টাকার পরিমাণে দাঁড়ায় প্রায় পৌনে আটশ’ কোটি।
পলিসি টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সাত মাসে ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানি করা প্রধান পণ্যগুলোর মধ্যে ছিল তুলা (২১০ কোটি ডলার), শস্যবীজ (১৩০ কোটি ডলার), বিদ্যুৎ ও জ্বালানি (৬০ কোটি ডলার), গাড়ির যন্ত্রাংশ (৫০ কোটি ডলার) ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি (৪০ কোটি ডলার)।
ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের (এফআইইও) মহাপরিচালক ও প্রধান নির্বাহী অজয় সাহাই বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অন্যান্য দেশকে করোনাভাইরাসের কারণে কঠোর বিধিনিষেধের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। সে তুলনায় বাংলাদেশে অবস্থান ভালো ছিল। পণ্য চলাচলে তুলনামূলকভাবে কম বাধা থাকায় দেশটিতে রপ্তানি বেড়েছে। এছাড়া কূটনৈতিক প্রচেষ্টা, রেল ও নৌ-পথে সহজ সরবরাহ ও কৃষিপণ্যের চাহিদা- এই তিন কারণেও রপ্তানি বেড়েছে।
তথ্য বলছে, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ২০২০ সালে ভারতের অর্থনীতি ৮ শতাংশ সংকুচিত হলেও বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে ১১ শতাংশ।
এদিকে সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের জন্যই সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সিইপিএ) একটি ‘উইন-উইন’ পরিস্থিতি হবে।