বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : নতুন বছরে নতুন ঘরের চাবি হাতে পেয়ে আবেগে আপ্লুত মুন্না বলেন, ‘মাঠে কৃষিকাজ করি, পরের জমিতে। দিনের হাজিরা তিনশ’ টাকা। তাও সবসময় কাজ থাকে না। অভাব-অনটনের সংসারে ঘরের চালা, বেড়া মেরামত করার মতো অবস্থা কখনোই ছিল না। আর কখনও হবে কিনা জানি না। এমনও রাত গেছে, বৃষ্টি-বাদলার কারণে অন্যদের বারান্দায় গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছে। একটা পাকা বাড়ির স্বপ্ন কখনও দেখিইনি। কিন্তু বিপুল ভাইয়ের কারণে সেসব না দেখা স্বপ্ন আজ সত্যি হয়ে এসেছে। বিপুল ভাই আমাদের জায়গায় দুই রুমের বাড়ি তৈরি করে দিয়েছেন। বাড়ির সঙ্গে লাগোয়া রান্নাঘর এবং একটি টয়লেটও রয়েছে। খুব খুশি হয়েছি, যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না! আল্লাহ যেন তাকে মানুষের আরও সেবা করার সুযোগ দেন।’
মুন্নার স্ত্রী মৌসুমি খাতুন বলেন, ‘নতুন ঘর পেয়ে আমরা খুব খুশি হয়েছি। রঙ করা হয়ে গেলে খুব শিগগিরই আমরা ঘরে উঠবো। ঘরে ওঠার পর একটা টিউবওয়েল আর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা লাগবে। বাড়ির বাইরে যেটুকু ফাঁকা জায়গা রয়েছে, সেখানে শাকসবজি, হাঁস-মুরগি পালন করতে পারবো।’ তিনি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বিপুলের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
মুন্না-মৌসুমি দম্পতির আজকের এই আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মূলে রয়েছেন যশোর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল। এই দম্পতির জন্যে একটি সুন্দর বাড়ি তৈরি করে দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় যুবলীগের নির্দেশনা পেয়ে নিজ অর্থায়নে ঘরটি তাদের উপহার হিসেবে দিয়েছি। আর বছরের প্রথম দিন (১ জানুয়ারি) ওই বাড়ির চাবি তাদের হাতে দিয়েছি।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১ ডিসেম্বর যশোর জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভা থেকে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা মানবিক যুবলীগের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ঘরহীনদের বাড়ি করে দেওয়ার জন্য জেলা যুবলীগ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আনোয়ার হোসেন বিপুল নতুন বছরের প্রথম দিন মুন্না হোসেনের হাতে উপহার হিসেবে ঘরের চাবি তুলে দেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন বলেন, ‘মুন্না অত্যন্ত অভাবী মানুষ। তবে নীতিতে সে সৎ। এমন একজন মানুষকে স্বপ্নের মতো একটি বাড়ি উপহার দিয়ে যুবলীগ নেতা বিপুল একটি মানবিক কাজ করেছেন।’
জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন বিপুল বলেন, ‘মুজিববর্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের একটি মানবিক উদ্যোগ গৃহহীনদের ঘর করে দেওয়া। আমি সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থাকাকালে চার পরিবারকে চারটি ঘর করে দিয়েছি। আর যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ভাই এবং সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল ভাইয়ের নির্দেশনা পেয়ে ব্যক্তিগত অর্থায়নে মুন্নাকে নববর্ষের উপহার হিসেবে ঘর দিয়েছি। যুবলীগের এই মানবিক তৎপরতায় অংশীদার হতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে বিপুল বলেন, ‘বাড়িটির পলেস্তরা এখনও কাঁচা রয়েছে। চার-পাঁচ দিন লাগবে শুকাতে; তারপর রঙ করে দেওয়া হবে। আর পানীয় জলের জন্যে একটি টিউবওয়েল দেওয়ার চিন্তা রয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ তো একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়; তারা আবেদন করলে পরবর্তী সহযোগিতা করা হবে।’