পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদী রেল জংশনে কর্মচারী জরিনা খাতুন ৪ বছর ধরে স্টেশনে কাজ না করেই বেতন ভাতা তুলছেন অনায়াসে। ঈশ্বরদী স্টেশনে ওয়েটিং রুম বেয়ারার কাজ না করে সে একজন উর্ধ্বতন রেল কর্মকর্তার ঢাকার বাসায় কাজ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি জংশনের সকল কর্মকর্তা জানলেও ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পান না কেউই!
দেশের বৃহৎ রেল জংশন হিসেবে পরিচিত পাবনার ঈশ্বরদী রেল জংশন। উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের সাথে রেল যোগাযোগের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী এই স্টেশন দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করেন। কিন্তু নানা অব্যবস্থাপনায় জংশনটি সেবার মান একেবারেই তলানিতে দাঁড়িয়েছে। এখানে নিয়মনীতির বালাই নাই বললেই চলে। কর্মচারী সংকটে যেখানে যাত্রীসেবা দিতে হিমশিম খেতে হয় কিন্তু জরিনা খাতুন স্টেশনে ওয়েটিং রুম বেয়ারার কাজ না করে সে রেলের ট্রাফিক বিভাগের পরিচালক শফিকুল ইসলামের ঢাকার বাসায় কাজ করেন ৪ বছর ধরে। তার হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন অন্যরা। বেতন তোলেন প্রায় ২৬ হাজার টাকা।
জরিনা খাতুনের প্রতিবেশি এরশাদুল ইসলাম জানান, গত এক বছর হলো তিনি ট্রলিম্যান হিসেবে এখানে যোগদান করেছি, তার বাসার সাথেই আমার বাসা। মনি ভাইয়ের আম্মা জরিনা খাতুনকে তিনি কখনই দেখেন নাই। শুনেছি ঢাকায় থাকেন। জয়ন্তী রানী নামের আরে প্রতিবেশি বলেন, ৪ বছর হলো তারা পাশাপাশি একই বাসায় আছি। মাঝে মধ্যে জরিনা খাতুনকে দেখি, তিনি স্থায়ীভাবে এখানে থাকেন না। আপনাদের মতো আমিও এটাই জানি।
জরিনা খাতুনের ছেলে ও ঈশ্বরদী রেলওয়ের কর্মচারী মনি হোসেন বলেন, শফিকুল স্যারের দুটি সন্তান। তারা দুজনই সরকারী চাকরী করেন। স্যারের ছেলেরা তার মাকে আম্মা ডাকেন। মাকে ঢাকার বাসায় রেখে তারা একটু নিশ্চিন্ত থাকেন। বিষয়টি সবাই জানেন। তারপরও আমার মা অসুস্থ থাকায় অফিস করতে পারেন না। বিষয়টি নিয়ে নাড়াচড়া না করার জন্য তিনি অনুরোধ করেন।
জরিনার বিষয় নিয়ে কথা বলতেই নাম প্রকাশ করার শর্তে রেলওয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্টেশনে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সুপারিনডেন্টেন সাহেব কি করে অন্যকে দিয়ে তার হাজিরা খাতায় সই করান এটা বোধগম্য নয়। একজন কাজ না করে ঢাকায় বসে বেতন নিবেন এটা কি করে হয় ? জরিনার অনুপস্থিতির বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে ঈশ্বরদী রেল স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক মহিউল ইসলাম জানান, বিষয়টি সত্য জরিনা কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন। কিন্তু তার কিছুই করার নাই।
জরিনার বিষয় নিয়ে কথা বলতে রেলের পরিচালক (ট্রাফিক) শফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে (০১৭১১-৬৯১৬১৩)বারবার ফোন দিলেও তার কোন মতামত নেয়া সম্ভব হয়নি। বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে কর্মকান্ডের সাথে জড়িত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবী জানান এলাকার সচেতন মহল।