বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেছেন, খালেদা জিয়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বাতিলসহ বাংলাদেশের ওপর পশ্চিমাদের স্যাংশন আরোপের অনুরোধ করেছিলেন। ২০১৩ সালের ৩০ জানুয়ারি ওয়াশিংটন টাইমসে ‘দ্য থ্যাঙ্কসলেস রোল ইন সেভিং ডেমোক্রেসি ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে এক প্রবন্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের এ অনুরোধ করেন তিনি।
শুক্রবার সকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ডাটাবেস টিমের এক সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বিএনপি এবং তার দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া দেশের সার্বভৌমত্ব ও অস্তিত্ব বিদেশিদের কাছে বিকিয়ে দিতে মোটেও কুণ্ঠিত নন। ওয়াশিংটন টাইমসের প্রবন্ধে খালেদা জিয়া সে বিষয়টিই পরিষ্কারভাবে বলেছেন ।
‘ওই প্রবন্ধে খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উদাসীন থাকলে তাকেও এর দায় দায়িত্ব বহন করতে হবে। কারণ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক আনুগত্য অন্যান্য উদীয়মান পরাশক্তির দিকে ধাবিত হচ্ছে। তারপর তিনি লিখেছেন, তার মানে এই নয় যে, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য এজেন্সি কিছুই করছে না। ছয় মাস পূর্বে বিশ্ব ব্যাঙ্ক বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রকল্প পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন প্রত্যাহার করেছে এবং এই প্রকল্পে দুর্নীতি ও অর্থ তসরুপের তদন্ত করার পরামর্শ দিয়েছে। খালেদা জিয়ার এই মন্তব্যে বুঝা যায়, বাংলাদেশের পদ্মা ব্রিজে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বাতিল হওয়ার বিষয়টি তার কাছে অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক বিষয় ছিল।’
‘যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জিএসপি সুবিধা বাতিলের পেছনে যে লবিস্টের মাধ্যমে বিএনপি এবং তাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রত্যক্ষ ষড়যন্ত্র ছিল, এটি খালেদা জিয়ার লেখাতেই পরিষ্কার ভাবে উঠে এসেছে l খালেদা জিয়া লিখেছেন, “তাদের (যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের) অবশ্যই শেখ হাসিনাকে বুঝাতে হবে যে, বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বাতিল করা হবে যদি তার রাজনৈতিক মতাদর্শের বিরোধী ও শ্রমিক অধিকার নিয়ে সচেষ্ট ব্যক্তিদের মতামত প্রকাশের সুযোগ দেয়া না হয়।’
‘খালেদা জিয়া তার লেখায় বাংলাদেশের উপর বিভিন্ন পর্যায়ের স্যাংশন আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্রদের অনুরোধ জানান।পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের করা সমালোচনা করেন।’
ড۔ সেলিম মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়া লেখেন, “তাদের (যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের) এসব পদক্ষপকে হতে হবে অবশ্যই শক্তিশালী ও দৃশ্যমান, যেন আমাদের জনগণ তা দেখতে এবং শুনতে পারে। এর মাধ্যমেই সারাবিশ্বকে গণতান্ত্রয়নে যুক্তরাষ্ট্রের নিজের মিশন অব্যাহত রাখার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারবে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র ও সারা বিশ্বের কোনো কিছু করার এখনই উপযুক্ত সময়।
বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বাতিল হওয়ার পর অর্থাৎ প্রবন্ধটি প্রকাশিত হওয়ার ছয় মাস পর বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে, লেখাটি খালেদা জিয়ার নয় l ওয়াশিংটন টাইমস এ ২০১৩ সালের ৩০ জানুয়ারি প্রকাশিত নিবন্ধটি খালেদা জিয়ার-এটা নিশ্চিত হয়েই তা ছাপানো হয়েছে বলে মার্কিন দৈনিকটির নির্বাহী সম্পাদক ডেভিড এস জ্যাকসন বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, নিবন্ধটি খালেদা জিয়ার-এমনটা নিশ্চিত হওয়ার পরই তা প্রকাশ করা হয়েছে। মার্ক পার্সি নামে লন্ডনভিত্তিক একজন এজেন্টের মাধ্যমে ওয়াশিংটন টাইমস নিবন্ধটি পেয়েছে।