‘ওয়ান সিটি টু টাউনে’ পরিণত হচ্ছে চট্টগ্রাম

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : সমুদ্র তলদেশ দিয়ে দেশে তথা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম টানেল। চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’-এ পরিণত হচ্ছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। এ বছরের ডিসেম্বর মাস টার্গেট। কিন্তু তার আগেই দেশের প্রথম সুড়ঙ্গপথ অর্থাৎ ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার জোর তৎপরতা চলছে। কর্ণফুলী নদীর বুক চিরে উত্তর পাড়ে চট্টগ্রাম শহর আর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারা উপজেলা। শহর এলাকায় বাণিজ্যিক জোন গড়ে তোলার সুযোগ সুবিধা আর তেমন নেই। এ কারণে ওপাড় অর্থাৎ দক্ষিণ পাড়কে ঘিরে পরিকল্পনা। এরই জের হিসেবে দুপাড়কে সংযুক্ত করার জন্য বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয়ে নদীর তলদেশ দিয়ে সুড়ঙ্গপথ অর্থাৎ টানেল নির্মাণ কাজের মহাযজ্ঞ। এটি একটি মেগা প্রকল্প।

খনন কাজ শেষে দ্বিতীয় টিউব থেকে টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) পরিপূর্ণভাবে বের করে আনার পর এখন লেনস্লাব স্থাপনের কাজ চলছে। সোমবার সেতু বিভাগের সচিব মঞ্জুর হোসেন প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। করোনার প্রাদুর্ভাব আবারও বেড়ে গেলেও প্রকল্প কাজ যাতে বিঘিœত না হয় সে ব্যাপারে সচেতন থাকার জন্য প্রকল্প কর্মকর্তা, কর্মচারী ও দেশী বিদেশী কনসালটেন্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন।

দেশে বর্তমানে চলমান বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্বপ্নের পদ্মা সেতুর কাজ কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই যেভাবে এগিয়ে গিয়ে একেবারে শেষপর্যায়ে রয়েছে, অনুরূপভাবে বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজও এগিয়ে চলেছে। প্রকল্প কর্মকর্তারা তাদের টার্গেট অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বর মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা বলে আসছেন ঠিকই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রের আশা এর আগেই এই টানেলের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।

চীনা এক্সিম ব্যাংকের ঋণ ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থে স্বপ্নের এই বঙ্গবন্ধু টানেল কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত হচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা পয়েন্ট হয়ে নদীর তলদেশ দিয়ে ওপাড়ে আনোয়ারা পয়েন্টের সঙ্গে দুই টিউবে চার লেনের এ টানেলের সংযুক্তি ইতোমধ্যে ঘটেছে। প্রথম টিউবের লেনস্লাব স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় টিউবের টিবিএম বের করে আনার পর এখন সেখানে শুরু হয়েছে অনুরূপ লেনস্লাব স্থাপনের কাজ। সঙ্গে চলছে অন্যান্য আনুষঙ্গিক কার্যাদি।

প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ চৌধুরী জানিয়েছেন, সোমবার পর্যন্ত পুরো প্রকল্পের ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অবশিষ্ট ২০ শতাংশ কাজ টার্গেট অনুযায়ী সম্পন্ন করার তৎপরতা নিয়ে তারা এগিয়ে যাচ্ছেন। তবে নতুন করে ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব প্রতিদিন যেভাবে বাড়ছে তাতে প্রকল্প কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, সে ব্যাপারে সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। প্রকল্প এলাকায় সব পর্যায়ের বহিরাগতদের প্রবেশাধিকার সোমবার থেকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

নদীর তলদেশ দিয়ে টানেলটি ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে। দুই টিউব ও চারলেন বিশিষ্ট এ টানেলের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার এপ্রোচ রোড এবং ৭২৭ মিটার ওভারব্রিজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

‘ওয়ান সিটি টু টাউনে’ পরিণত হচ্ছে চট্টগ্রামবঙ্গবন্ধু টানেল
Comments (0)
Add Comment