বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় মধুমতি নদীর কালনা পয়েন্টে নির্মাণাধীন সেতুর কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। দৃষ্টিনন্দন এ সেতু হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। পদ্মা সেতুর সাথে চালু করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলছে সেতুটির কাজ। এ সেতুর পূর্ব পাড়ে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা এবং পশ্চিম পাড়ে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা। এ সেতু চালু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কমপক্ষে ১০ জেলার মানুষের দীর্ঘ দিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে। এখানে সেতুর দাবিতে বহু আন্দোলন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে এ সেতু নির্মিত হচ্ছে। জাপানের টেককেন করপোরেশন ও ওয়াইবিসি এবং বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড যৌথভাবে এ সেতুর ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে। সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও সওজ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, সেতুর সার্বিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৬৫ শতাংশ। সংযোগ সড়কের কাজও শেষের পথে। মূল সেতুর দু’টি স্প্যান বসানোর কাজ বাকি আছে। এ স্প্যান দু’টি বসানো হলে সেতুর উপর দিয়ে গাড়ি চালানো যাবে। সওজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রত্যাশা, আগামী ৩০ জুন থেকে এ সেতুতে গাড়ি চলবে। কারণ জুনেই পদ্মা সেতু চালু হবে। এ সেতুর কাজে দীর্ঘ দিন ধরে উপপ্রকল্প ব্যবস্থাপক ছিলেন সওজের প্রকৌশলী সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু চার লেনের আর মধুমতি সেতু দেশের প্রথম ছয় লেনের। এটি দেশের সবচেয়ে বড় নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) সেতু। পদ্মা সেতুর পাইল ক্যাপ পানির উপর পর্যন্ত। কিন্তু এ সেতুর পাইল ক্যাপ পানির নিচের মাটির ভেতরে। তাই নৌযান চলাচল সমস্যা হবে না, পলি জমবে না।
সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, প্রথমে সেতুর নকশা ছিল চার লেনের, পরে তা করা হয়েছে ছয় লেনের। সংযোগ সড়কের ভূমি অধিগ্রহণে দেরি হয়েছে। করোনার জন্য প্রায় ছয় মাস কাজ বন্ধ ছিল। এসব কারণে নির্ধারিত মেয়াদে কাজ শেষ হয়নি। মূল প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সওজ ও পরিবহন সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ সেতু চালু হলে নড়াইল, যশোর, বেনাপোল স্থলবন্দর ও খুলনা থেকে ঢাকায় যাতায়াতকারী পরিবহন মাগুরা-ফরিদপুর হয়ে যাতায়াতের পরিবর্তে কালনা হয়ে যাতায়াত করতে পারবে। এতে বেনাপোল ও যশোর থেকে ঢাকার দূরত্ব ১১৩ কিলোমিটার, খুলনা-ঢাকার দূরত্ব ১২১ কিলোমিটার এবং নড়াইল-ঢাকার দূরত্ব ১৮১ কিলোমিটার কমবে।