বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও বিকশিত করার চেষ্টায় সক্রিয় রয়েছে সরকার। রোববার একুশে পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কুতি যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও বিকশিত হয়, সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে। সেই প্রচেষ্টায়ও আমরা সাফল্য অর্জন করব বলে আমি বিশ্বাস করি।”
বাঙালির ভাষার অধিকা্র আদায়ের দিন একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে আমরা স্বীকৃতি পেয়েছি। এটা আমাদের সকলকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।“একুশে ফেব্রুয়ারি শুধু আমাদের না। যারা মাতৃভাষা ভালোবাসে এবং মাতৃভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছে এবং মাতৃভাষাকে সংরক্ষণ করা, হারিয়ে যাওয়া মাতৃভাষা খুঁজে বের করা এবং সেগুলো সংরক্ষিত করা, সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা। সেই প্রচেষ্টায় আমরা সফলকাম হয়েছি।” বাহান্নর ভাষা শহীদদের স্মরণ করে তিনি বলেন, “শহীদের রক্ত বৃথা যায় না,বৃথা যেতে আমরা দেইনি,বৃথা যেতে আমরা দেব না।
“যা কিছু অর্জন আমরা করতে পেরেছি, মহান আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই কিন্তু তা করতে পেরেছি। যেটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সব সময় বলতেন এবং তার লেখায়ও আছে যে মহান অর্জনের জন্য মহান আত্মত্যাগ দরকার।”ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাস তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাকে সমুন্নত রেখেই এগিয়ে যেতে হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালে হত্যার পর ইতিহাস বিকৃতির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান সেটা মুছে ফেলা হয়েছিল। আসলে সত্যকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না। ইতিহাস ঠিকই ফিরে আসে। আজকে আমাদের সেই দিন।”
ইতিহাসের বিকৃতি ঠেকাতে আওয়ামী লীগের ভূমিকা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণা এটাও কিন্তু ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখনই প্রথম ঘোষণা দেওয়া হয়। “এমনকি শহীদ মিনার নির্মাণ করার যে প্রকল্প এবং সেখানে বাজেট বরাদ্দ, সেটাও করা হয়েছিল। ভাষা শহীদদের প্রতিসম্মান দেখানো সেটাও ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারই করেছিল।” ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মূল অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী এবার একুষে পদকজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে। আমাদের এই গুনীজনরাই তো পথ দেখান। তাদের অবদান বিভিন্ন ক্ষেত্রে, যার কারণে আমাদের এই অগ্রযাত্রা।” করোনাভাইরাস মহামারীকালে অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারায় আক্ষেপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার সব থেকে কষ্ট লাগছে আমি নিজে উপস্থিত থাকতে পারলাম না। অনেক পুরনো মানুষের সাথে দেখা হত আজকে থাকতে পারলে।” মহামারী প্রতিরোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন সরকার প্রধান। সবাইকে টিকা নিতেও আহ্বান জানান তিনি।