বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : প্রায় ১৫ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের এক বিশাল জনসভায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তা আজ আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের কাজ প্রায় ৮১.৫০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।
২০০৮ সালে চট্টগ্রামের লালদীঘির ময়দানে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের মধ্যদিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ দেশের উন্নয়নের কথা বলেছিলেন। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে মাল্টি লেন রোড টানেল নামে প্রত্যাশিত প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এতে প্রকল্প সহায়তা রয়েছে পাঁচ হাজার ৯০০ কোটি ১৯ লাখ টাকা এবং সরকারের রয়েছে চার হাজার ৪৬১ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
আনোয়ারা ও চট্টগ্রাম প্রান্তে জমি অধিগ্রণ করা হয়েছে ৩৮৩ একর। যৌথভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেতু ও সড়ক মন্ত্রণালয় (ইইঅ) চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (ঈঈঈ)।
২.৪৫ কিলোমিটার ও দুই প্রান্তের তীরসহ টানেলের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৩.৪ কিলোমিটার আর নদীর পূর্ব ও পশ্চিম উভয় পাশের সংযোগ সড়কসহ এই প্রকল্পের সর্বমোট দৈর্ঘ্য হবে ৯.৩৩ কিলোমিটার। আর প্রতিটি টিউবের ভেতরের অংশে প্রশস্ত হচ্ছে প্রতিটি ১০.৮ মিটার করে।
আনোয়োরা প্রান্তে ৭০০ মিটারের একটি উড়াল সড়ক বা ফাইওভারসহ ৫.৪৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে চার লেন সড়ক নির্মিত হবে, যা আনোয়ারা চাতুরী চৌমুহনীতে এসে চট্টগ্রাম আনোয়ারা বাঁশখালী পিএবি সড়কের সাথে মিলিত হবে অপর প্রান্তে .৫৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক মিলিত হচ্ছে নগরীর পতেঙ্গা নেভাল একাডেমি পয়েন্ট দিয়ে মূল সড়কের সাথে।
জানা গেছে, ২০০৮ সালে লালদীঘির ওই জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির পর ৯ম জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পরপরই শুরু হয়েছিল নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের সম্ভাব্য সমীক্ষাসহ সবধরণের প্রস্তুতি। এ ধারাবাহিকতার মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এর পরেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত ওই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পেতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে ২০১৭ সালের ৬ নভেম্বর এই প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি কার্যত সম্পন্ন হয় এবং একই বছরের ৫ ডিসেম্বর থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন বা সম্পাদনের সময় ধরা হয়েছে ৫ বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বহুল প্রত্যাশিত কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণ প্রকল্পের মূল কাজ দুটি টিউব খনন সম্পন্নসহ টানেল প্রকল্প অগ্রগতি ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮১.৫ ভাগ ছাড়িয়ে গেল। গতকাল ১ মার্চ বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রকল্পের পরিচালক হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্প কাজের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হওয়ার প্রত্যাশা করছেন তিনি।
প্রকল্প পরিচালক গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, প্রকল্প কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রকোপের কারণে প্রায় দুই বছর ধরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করতে হয়েছে এ কারণে সময় প্রচুর লেগেছে। তার পরেও প্রত্যাশিতভাবে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে এবং প্রকল্প কাজ সম্পন্নের মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার প্রত্যাশা করছেন তিনি।