২১ জেলার ভাগ্যের দুয়ার খুলছে পদ্মা সেতু

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : আগামী ২৩ জুন দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। যার ফলে ভাগ্যের দুয়ার খুলছে শরীয়তপুরসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার। এসব জেলার সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের দুয়ার খুলে দিয়েছে স্বপ্নের এই সেতু। প্রায় সাত কোটি মানুষের প্রাণের দাবি বাস্তবায়ন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

শরীয়তপুরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে গোটা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের নতুনমাত্রা যোগ হলো। ইতিমধ্যেই পর্যটন কেন্দ্রে রুপ নিয়েছে সেতুর দুইপাড়। শরীয়তপুর প্রান্তের জাজিরায় গড়ে উঠছে রেষ্টুরেন্ট, রিসোর্ট, হোটেল, মোটেলসহ বিলাশবহুল বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।

সরেজমিন গিয়ে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদ্ম সেতুর কারণেই একসময়ের অবহেলিত সোনালী সেতুর শ্যামল ভূমি শরীয়তপুর এখন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির মহাসড়কে এগিয়ে যাচ্ছে। চলছে মহাকর্মযজ্ঞ। সেতুর ল্যান্ডিং পয়েন্ট জাজিরার নাওডোবাতে শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী প্রতিষ্ঠার কাজও চলমান রয়েছে। দেশের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান এসব এলাকায় বিনিয়োগ করছে। শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে। সর্বক্ষেত্রে ব্যবসা বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে বলে আশা পদ্মা পাড়ের মানুষের।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৯৭ শতাংশ। বর্তমানে সেতুতে কার্পেটিং তথা এজফল্ট কাজের অগ্রগতি হয়েছে ২৭ দশমিক ৯৭ ভাগ, ভায়াডাক্টে কার্পেটিং ৫৬ দশমিক ২২ শতাংশ, ওয়াটার প্রুফিং ওয়ার্কের অগ্রগতি হয়েছে ৩৯ দশমিক ৮৪ ভাগ, গ্যাসের পাইপলাইনের অগ্রগতি হয়েছে ৯৮ দশমিক ৯৮ ভাগ, ৪০০ কেভি টিএল প্লাটফর্ম ৭৬ শতাংশ। মার্চ থেকেই সেতুজুড়ে স্থাপন করা হবে ল্যাম্প পোস্ট এবং দুই পাড়ে দুটি বিদ্যুৎ সাবস্টেশন। রেলওয়ে ভায়াডাক্টে প্যারাপেটের অগ্রগতি হয়েছে ৯৮ শতাংশ।

তিনি আরও জানান, মার্চ ও আগামী এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে পদ্মা সেতুতে কার্পেটিংয়ের কাজ সম্পন্ন হবে। এপ্রিলে মেমব্রেন ও অ্যালুমিনিয়াম রেলিংয়ের সব কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২৩ জুন পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান জানান, পদ্মা সেতুর কারণে শুধু শরীয়তপুর, দক্ষিণাঞ্চলই নয় বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। এক পদ্মাসেতুর ওপর ভিত্তি করে এসব এলাকায় চলছে নানামুখী উন্নয়ন। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে শরীয়তপুরসহ দক্ষিণাঞ্চল হবে বিশ্বে মডেল।

এ ব্যাপারে শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন অপু বলেন, পদ্মা সেতুর সঙ্গে শরীয়তপুরবাসীর সড়ক পথে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ইতোমধ্যে এক হাজার ৬০০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস হতে কাজিরহাট পর্যন্ত ফোরলেন সড়ক নির্মাণ, কাজিরহাট ব্রিজ ও কোটাপাড়া নদীর ওপর ব্রিজের কাজ চলমান রয়েছে। শরীয়তপুর জেলা শহরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণকাজ চলমান আছে। এই জেলায় প্রথম শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরঙ্গীর মোড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নির্মাণ হয়েছে।

২১ জেলার ভাগ্যের দুয়ার খুলছে পদ্মা সেতু
Comments (0)
Add Comment