বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : আগামী দুই বছরের জন্য জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলের (এপিআরসি) সভাপতি হয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত এফএওর চার দিনব্যাপী ৩৬ তম এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন শেষে শুক্রবার এ তথ্য জানায় কৃষি মন্ত্রণালয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত এ সম্মেলনে ডিজিটাল হাব স্থাপন, গবেষণার জন্য বিশেষ ফান্ড গঠন, সবুজায়ন বৃদ্ধি, জলবায়ু সহনশীল কৃষি, টেকসই কৃষিখাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং মানুষ, প্রাণি ও পরিবেশের স্বাস্থ্যকে সমান গুরুত্ব ও আন্তনির্ভরশীল হিসেবে বিবেচনা করে ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচকে অগ্রাধিকার দিয়ে চূড়ান্ত রিপোর্ট গ্রহণ করেছে এপিআরসির সদস্য ৪৬টি দেশ।
সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এসব তথ্য জানান। এসময় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম ও খাদ্যসচিব নাজমানারা খানুম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। দুই বছরের জন্য এপিআরসির সভাপতি বাংলাদেশ এফএওর চার দিনব্যাপী ৩৬ তম এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলনে অতিথিরা। কৃষিমন্ত্রী জানান, আগামী দুই বছরের জন্য এপিআরসির সভাপতি হয়েছে বাংলাদেশ। ৩৭তম এপিআরসি সম্মেলন হবে শ্রীলংকায়।
তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। আমরা যেরকমটা ভেবেছিলাম, তার চেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে। মানবজীবনের সবকিছুকেই এটি প্রভাবিত করবে, তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষি। ‘কোভিডের প্রভাবে এ অঞ্চলের কৃষি, খাদ্য ও অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। সারের উৎপাদন কমে গেছে। এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো এ ব্যাপারে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মালদ্বীপ তাদের অস্থিত্ব বিলীন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।’
জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব ও কোভিড মোকাবিলা করে টেকসই কৃষিখাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে বলে জানান তিনি। এজন্য গবেষণার মাধ্যমে ফসলের নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং তা সম্প্রসারণে একসঙ্গে কাজ করার উপরে জোর দেন তিনি। কৃষিতে গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য একটি ‘বিশেষ ফান্ড’ গঠনের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে এটিকে চূড়ান্ত রিপোর্টের মধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে বলে কৃষিমন্ত্রী জানান।
তিনি বলেন, ‘এ সম্মেলনে ডিজিটালাইজড কৃষি গুরুত্ব পাচ্ছে। বাংলাদেশ এ অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য এফএওকে একটি ডিজিটাল হাব স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছিল। সব দেশ এটি গ্রহণ করেছে। ডিজিটাল হাবে ৪৬টি দেশের কৃষিপ্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী তথ্যসমৃদ্ধ থাকবে, যাতে সব দেশ উপকৃত হতে পারে।’ মানুষ, প্রাণি ও পরিবেশের স্বাস্থ্য রক্ষায় ‘ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচ’ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। বলেন, ‘ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচ গড়ে তুলতে অগ্রাধিকার চিহ্নিত করে রিপোর্ট চূড়ান্ত করা হয়। প্রাণি থেকে মানুষে সংক্রমিত রোগের প্রকোপ দিন দিন বেড়ে চলেছে। চলমান কোভিড সংক্রমণ এর অন্যতম উদাহরণ। এ অবস্থায় এ অঞ্চলে ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচ গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছে দেশগুলো।’
ভালো পরিবেশেই শুধু ভালো জীবনযাপন করা সম্ভব উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘এশিয়া প্যাসিফিকে যে খাদ্য যতটা পাওয়া যাচ্ছে সেটা যেন নিরাপদ ও পুষ্টিকর হয় তা নিশ্চিত করতে সব দেশ একমত রয়েছে।’