প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে ফরেন অফিস কনসালটেশন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও উজবেকিস্তানের পক্ষে সে দেশের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুরকাত আহমেদোভিচ সিদ্দিকভ নেতৃত্ব দেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার এবং অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে বর্তমান আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে যৌথ ও অংশীদারিত্বমূলক বিনিয়োগের উপর জোর দেন। উজবেকিস্তানের গ্যাস ব্যবহার করে টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যাল, আরএমজি প্রভৃতি ক্ষেত্রে যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে শিল্প ও কারখানা স্থাপনের উপরও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।
এছাড়াও তিনি দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল, দ্বৈতকর পরিহার, সাংস্কৃতিক বিনিময়, ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের ৩০ দিনের ফ্রি ভিসা চালু, দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের ভিসা ওয়েভার চুক্তি, উভয় দেশের মধ্যে শিক্ষা ও কারিগরি ক্ষেত্রে সফর বিনিময়সহ নিয়মিত ফরেন অফিস কনসালটেশন বৈঠক আয়োজন এবং প্রস্তাবিত খসড়া চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো দ্রুত স্বাক্ষরের জন্য উজবেক পক্ষকে তাগিদ দেন।
পররাষ্ট্র সচিব তার প্রতিপক্ষকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় উজবেকিস্তানের দূতাবাস স্থাপনের বিষয়েও অনুরোধ করেন। বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে ২০২২-২০২৩ বছরের Programme of Cooperation স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব ও উজবেকিস্তানের পক্ষে উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী এতে স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমি ও উজবেকিস্তানের University of World Economy and Diplomacy এর মধ্যে পারস্পরিক প্রশিক্ষণ সহযোগিতা, অভিজ্ঞতা ও প্রকাশনা বিনিময়, উভয় দেশের মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, কনস্যুলার কনসালটেশন প্রভৃতি ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়সমূহ এ সমঝোতা চুক্তির অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থাপিত ছিলেন উজবেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জাহাঙ্গীর আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ইউরোপ ও সিআইএস অনুবিভাগের মহাপরিচালক শিকদার বদিরুজ্জামান, দূতাবাসের মিনিস্টার নৃপেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়েদ হোসেন প্রমুখ।
উজবেকিস্তানের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন উজবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা বিভাগের মহাপরিচালক ওইবেক ইসানভ, চুক্তি ও আইন বিভাগের মহাপরিচালক জে. রাজাবভ। উভয় পক্ষের সম্মতিতে পরবর্তী ফরেন অফিস কনসালটেশন এর বৈঠক ২০২৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।