বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : সেচনির্ভর কৃষি খাত এবং মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা এক লাখ ৭০ হাজার দরিদ্র মানুষের আয় বাড়াতে সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশকে ১২ কোটি ডলার বা প্রায় ১ হাজার ২০ কোটি টাকা দিচ্ছে সংস্থাটি (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। ‘ক্লাইমেট-স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়নে এই অর্থ দেওয়া হবে। এক বিবৃতিতে বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
প্রকল্পটি খাদ্য ব্যবস্থাপনা, পানি নিষ্কাশন এবং সেচ অবকাঠামোর আধুনিকায়নের মাধ্যমে জলবায়ু সহিষ্ণুতা বাড়াবে বলে জানায় বিশ্বব্যাংক। বিবৃতিতে বাংলাদেশ ও ভুটানে বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যান ড্যান চেন খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের অর্জনের কথা উল্লেখ করে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কৃষি খাতে বাংলাদেশের সফলতার শেকড় অনেক গভীরে। বড় একটি জনসংখ্যা এবং আবাদি জমির স্বল্পতার মধ্যে দেশটির খাদ্য উৎপাদন এমন মাত্রায় রয়েছে, যা বড় একটি অর্জন। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে যাওয়ার কারণে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়েছে।
ড্যান ড্যান চেন বলেন, প্রকল্পটি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে উন্নত বন্যা ব্যবস্থাপনা, সেচ এবং নালা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খাদ্যশস্য এবং মৎস্যসম্পদের সুরক্ষা দিয়ে বাংলাদেশকে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে সহায়তা করবে। এক্ষেত্রে বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি এবং বর্ষা-পরবর্তী সময়ে পানিস্বল্পতা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দরিদ্র এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ১৯টি বন্যা ব্যবস্থাপনা, সেচ ও নিষ্কাশন পরিকল্পনাকে আবারও সচল করা হবে বলে বিবৃতিতে জানায় বিশ্বব্যাংক।
ক্লাইমেট-স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি, ফসলের বৈচিত্র্য এবং ফসল তোলার পর সেসবের ব্যবস্থাপনা নিয়ে এক লাখ কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এছাড়া ধান, মাছ ও চিংড়ি চাষ এবং সংরক্ষণের জন্য হিমাগার তৈরি করা হবে এবং স্থানীয় বাজারের উন্নয়নের চেষ্টা করা হবে। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে মাছের উৎপাদন প্রায় ৩৭ শতাংশ, সবজি ১০ শতাংশ এবং চালের উৎপাদন ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে। বিশ্বব্যাংকের ‘ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন’ থেকে নেওয়া এই ঋণ ৫ বছরের রেয়াতসহ ৩৫ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়। এজন্য রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে মঙ্গলবার চুক্তি সই হয়েছে। ইআরডি সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যান ড্যান চেন এতে সই করেন।