সেই লিতুনকে ৫ লাখ টাকার চেক দিলেন প্রধানমন্ত্রী

বিডি২৪ভিইজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তার পাঁচ লাখ টাকার চেক পেয়েছে যশোরের অদম্য মেধাবী লিতুন জিরা। রবিবার (৩ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লিতুন জিরার হাতে ওই চেক তুলে দেওয়া হয়। লিতুনের বাবা হাবিবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে লিতুন জিরা এ চেক গ্রহণ করে। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তার কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া চেকটি তুলে দেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ওই সময় ভিডিও কলে কথা বলেছেন। তিনি লিতুনের পড়াশোনার বিষয়ে সহায়তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। তিনি আমাদের বলেছেন, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টে একটা আবেদন করতে। লিতুনের পড়াশুনার জন্যে সব ব্যয় বহনের আশ্বাসও তিনি দেন।’

চেক গ্রহণের সময় যশোরের মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম, লিতুন জিরার বাবা প্রভাষক হাবিবুর রহমান, মা জাহানারা খাতুনসহ মণিরামপুর থেকে যাওয়া তাদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। জানতে চাইলে মণিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম চেক গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘লেখাপড়ার খরচের পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাদের যেকোনও বিষয়ে যোগাযোগ রাখার কথা বলেছেন।’

উল্লেখ্য, যশোরের অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী তামান্না নূরার পরে এবার আরেক অদম্য শিক্ষার্থী লিতুন জিরার পাশে দাঁড়ালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লিতুন জিরার বাড়ি যশোরের মণিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামে। প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এগিয়ে যাওয়া লিতুনের জন্ম থেকেই দুটি পা নেই। দুই হাতও নেই কনুইয়ের নিচ থেকে। তবু লেখাপড়ার অদম্য চেষ্টা মেয়েটির। লেখার জন্য ডান হাতের বাহুর অগ্রভাগ দিয়ে চোয়ালে কলম চেপে ধরে। এভাবে লিখেই ২০১৯ সালে স্থানীয় খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সে পিইসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ এবং বৃত্তি পায়। বর্তমানে সে গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। সেখানকার ফার্স্ট গার্ল লিতুন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে গত ১০ মার্চ একটি চিঠিতে জানানো হয়, লিতুন জিরার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে এককালীন পাঁচ লাখ টাকা আর্থিক সাহায্য মঞ্জুর হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার আফরোজা বিনতে মনসুর গাজী লিপির স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে ওই কার্যালয় থেকে চেক সংগ্রহের অনুরোধ করা হয়।

এর আগে ৩ মার্চ শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা পোষণ করে চিঠি লেখে লিতুন। সেই চিঠি পেয়েই প্রধানমন্ত্রী তার খোঁজ নেন। গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশের অনুমতি এবং পাঁচ লাখ টাকা অর্থ সহায়তা পাওয়ার বিষয়ে একটি চিঠি বাড়িতে আসে। লিতুন শুধু পড়াশোনাতে নয়, সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলেও বেশ ভালো। সে টানা দ্বিতীয়বারের মতো রচনা প্রতিযোগিতায় জেলা পর্যায়ে প্রথম পুরস্কার লাভ করেছে। এ ছাড়াও আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং খুলনা বেতারেও নিয়মিত গান ও কবিতা আবৃত্তি করে যাচ্ছে সে।

সেই লিতুনকে ৫ লাখ টাকার চেক দিলেন প্রধানমন্ত্রী
Comments (0)
Add Comment