পাবনা প্রতিনিধি : আজ ১৯ এপ্রিল, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ঐতিহাসিক শহীদ নগর (ডাব বাগান ) যুদ্ধ দিবস । আজ ১৯ এপ্রিল সকালে পাবনা সাঁথিয়া উপজেলায় ঐতিহাসিক শহীদ নগর (ডাব বাগান) দিবস পালিত হয়েছে। সকালে দিবসটি উপলক্ষে পাইকরহাটী (ডাব বাগান শহীদ নগরে) শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ প্রাঙ্গনে সাঁথিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আয়োজনে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের স্মরণে “স্মরণ সভা” ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে শহীদদের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করা হয়। স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও পাবনা -১ (সাঁথিয়া-বেড়া ) আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডঃ শামসুল হক টুকু । এমপি শামসুল হক টুকু বলেন, যারা নিজের জীবন বাজি রেখে এ দেশ স্বাধীন করেছে, তারা হলো দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। আর এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শেখ হাসিনা সরকার সর্বোচ্চ সন্মান দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সাঁথিয়া উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল লতিফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোন্তাজ আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আজম ,দৌলত আলী মোল্লা,বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলম সহ মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সহ স্কুল-কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের বিদেহী আত্মার প্রতি মাগফিরাত কামনায় আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৭১ সালের এই দিনে ডাববাগান (বর্তমান শহীদ নগর) যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে বীরত্বের সাথে লড়াই করে শহীদ হয় ১৭ জন মুক্তিযোদ্ধ।
একাত্তরের এই দিনে পাক হানাদার বাহীনির সাথে মুক্তিযোদ্ধা ও ইপিআর বাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ সংঘঠিত হয়। একাত্তরের ১৯ এপ্রিল দুপুরে নগরবাড়ী ঘাট হয়ে পাকসেনারা বগুড়া যাবার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও ইপিআর বাহিনীর সদস্যরা সাঁথিয়া উপজেলার ডাববাগান বর্তমানে শহীদ নগর নামক স্থানে অবস্থান নেন। প্রথমত পাকসেনারা সম্মুখ যুদ্ধে টিকতে না পেরে ব্যাপক ক্ষতি স্বীকার ও হতাহতের পর পিছু হটে নগরবাড়ী ফিরে যায়। যুদ্ধে প্রায় ৫০ জন পাকসেনা নিহত হয়। এদিকে ওই সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন ইপিআর হাবিলদার মমতাজ আলী, হাবিলদার আব্দুর রাজ্জাক, নায়েক হাবিবুর রহমান, সিপাহী এমদাদুল হক সহ আরও অনেক ইপিআর সদস্য।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিকে ধরে রাখতে ২০০১ সালে ডাববাগানে বর্তমান শহীদনগরে ‘বীরবাঙ্গালি’ নামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। ওই বছরের ১৯ এপ্রিল স্মৃতিসৌধটি উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ।