প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের গুজরাটের জামনগরে গ্লোবাল সেন্টার ফর ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসাসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসেবাতে স্থায়িত্ব, সমতা এবং উদ্ভাবনে তাদের উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আস্থা প্রকাশ করেছেন, ভারতে স্থাপিত এই কেন্দ্র গ্লোবাল ট্র্যাডিশনাল হেলথ কেয়ার-এর জন্য একটি নির্ভরযোগ্য কেন্দ্রস্থল হিসাবে কাজ করবে। এবং ভারত-বাংলাদেশ যৌথ চিকিৎসা গবেষণার পথ উন্মুক্ত করবে।
প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল সেন্টার ফর ট্রাডিশনাল মেডিসিন (জিসিটিএম) এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি এক ভিডিও বার্তায় একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, যদি আধুনিক ওষুধের সঙ্গে সনাতনী ওষুধ ব্যবহার করা হয়, তবে আমরা এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ৩-এ উল্লিখিত সকলের জন্য মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে আরও ভালো ফল আশা করতে পারি।’
ভারতের গুজরাটে এই প্রথম এ ধরনের গ্লোবাল সেন্টার ফর ট্রাডিশনাল মেডিসিন উদ্বোধন হলো। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস গেব্রেইয়েসুস যৌথভাবে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন। সনাতনী ওষুধের সঙ্গে প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটিয়ে ও প্রমাণ নির্ভর গবেষণার মাধ্যমে সম্ভাবনার ক্ষেত্র তৈরি করাই এই সেন্টারের লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা মান নিয়ন্ত্রণ ও কারিকুলাম উন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোর ব্যাপারে গ্লোবাল সেন্টারের সঙ্গে অংশীদারিত্বে আগ্রহী। তিনি বলেন, ‘আমাদের পারস্পরিক স্বার্থেই আমরা যৌথ মেডিকেল গবেষণা প্রকল্পের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করব।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, সনাতনী ওষুধ সব সময়ই বাংলাদেশের ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হয়ে আছে। আমাদের সরকার ২০১১ সালে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতিতে সনাতনী ওষুধকে সন্নিবেশিত করেছে। আমরা এসডিজি-৩ অভীষ্ট অর্জনে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনানী, আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সেবার সম্ভাবনা ও অবদানকে স্বীকৃতি দিয়েছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সনাতনী চিকিৎসার ওপর ৭৩টি প্রতিষ্ঠান চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স করাচ্ছে এবং চারটি কলেজ এই চিকিৎসার ওপর স্নাতক ডিগ্রি দিচ্ছে। সনাতনী ওষুধ বিশেষজ্ঞ দ্বারা আউটপেশেন্টদের চিকিৎসাসেবা প্রদান ছাড়াও আমাদের অধিকাংশ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ঔষধি গাছের বাগান রয়েছে। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি সুস্বাস্থ্য ও মানব কল্যাণ নিশ্চিতে সনাতনী চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। শেখ হাসিনা ভারতে কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যাপক টিকাদানের জন্য নরেন্দ্র মোদির গতিশীল নেতৃত্বে ভারত সরকারের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশও সফলভাবে এই মহামারি নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং দেশের শতভাগ মানুষকে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দিয়েছে। দেশের ৯৭ শতাংশ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। মহামারিকালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী বিনিময় ‘ভালো প্রতিবেশীসুলভ আচরণ’ ও কূটনীতির রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত। গোটা বিশ্ব দেখেছে কিভাবে ওই সংকটকালীন সময়ে দুই প্রতিবেশী পরস্পরকে সহায়তা এবং একসঙ্গে কাজ করেছে।