বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাসের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মাঝে মাঝে বিপত্তি আসে। এটা হচ্ছে সব থেকে দুঃখজনক। যখন আমরা নতুন কোচ কিনলাম, নতুন নতুন লোকোমোটিভ করলাম, সেই সময় বিএনপি শুরু করল অগ্নিসন্ত্রাস। নতুন রেলগুলো যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে, সেই রেলে আগুন দেয়া হল। আগুন দিয়ে রেল লাইনসহ ইঞ্জিন পুড়িয়ে দিয়েছিল বিএনপি। এটা নাকি তাদের আন্দোলন? মানুষকে পুড়িয়ে মারা বা চলন্ত বাস, গাড়ি, লঞ্চ বা রেলে আগুন- এটা কোন ধরনের আন্দোলন? এটা তো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।
তিনি আরও বলেন, তারা তো ক্ষমতা দখলকারীদের হাতে ক্ষমতায় বসে প্রতিষ্ঠিত দল। যে দলটি জনগণের মধ্যে থেকে উঠে আসেনি। কাজেই জনগণের কল্যাণের দিকে তাদের দৃষ্টি থাকে না। ক্ষমতার লোভটাই তাদের বড়। তারা তো দেশের মানুষের কল্যাণে কিছু করে নাই।
আজ বুধবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর এবং উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সংগৃতি ৩০টি মিটার গেজ ও ১৬টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে একথা বলেন সরকার প্রধান। গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব লোকোমোটিভ উদ্বোধন করেন।
বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর এবং উন্নয়ন প্রকল্পের ৩০টি মিটার গেজ ও ১৬টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান কতটুকু লাভ করল বা লাভ করল না সেটার থেকে বড় কথা মানুষের সেবা কতটুকু দিতে পারল। মানুষ কতটুকু সেবা পেল, মানুষের জীবনমান কতটা সহজ হল সেটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। সব জায়গায় সবকিছু লাভবান হবে সেটা না। কিন্তু লাভবান করা যায় সেটা হল বড় কথা। আমরা বিআরটিসিকে লাভবান করেছি, রেলকেও যে লাভবান করা যায় সেটা আমরা দেখিয়েছি। রেল এখন লাভবান প্রতিষ্টানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। লোকবল আরও ভালোভাবে দিতে পারলে আরও লাভবান হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আর কয়েক দিন পরই ঈদ। ঈদে লোক চলাচল বৃদ্ধি পাবে। সেই ক্ষেত্রে নতুন চালু হওয়া লোকোমোটিভে দেশের মানুষ আরও ভালোভাবে ঈদের উৎসবে যোগ দিতে পারবে, নিজের আপন ঘরে ফিরতে পারবে, সেই সুবিধাটা হবে। দেশের মানুষের সেবা করাটাই হচ্ছে আমাদের কাজ।
তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় এসে রেল সম্প্রসারণ করা, রেলকে আরও উন্নত করা, মান সম্পন্ন করা এবং দেশের মানুষ যাতে রেলে যাতায়ত করতে পারে পণ্য পরিবহন করতে পারে সেই ব্যবস্থাটা নিই। যমুনা সেতুতে রেলসংযোগ ছিল না। ৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসি তখন রেল সংযোগের উদ্যোগ নিই। তখন অনেক উন্নয়ন সহযোগি প্রতিষ্ঠানেরও কিছুটা বাধা ছিল। বিশ্ব ব্যাংক আমাকে বলেছিল এখানে রেলসেতু করলে সেটা ভায়াবল হবে না, লাভজনক হবে না। আমি বলেছিলাম এটাই সব থেকে বেশি লাভজনক হবে। সরকার আসার সাথে সাথে বললাম যেহেতু পরিকল্পনা হয়ে গেছিল পরে আমি উদ্যোগ নিলাম সেখানে কিভাবে রেল সংযোগ করা যায়। সেখানে আমরা রেল সংযোগ করি এবং দেখা গেল আমাদের কথাটাই ঠিক। রেল সংযোগের ফলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা সুগম হয় এবং রেলই সব থেকে বেশি লাভজনক হয়।
সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য সারাদেশে রেল সেবা বর্ধিত করা। যেসমস্ত অঞ্চলে রেল নাই সেসমস্ত অঞ্চলে রেল লাইন নিয়ে যাওয়া। এবং রেলের ব্যাপক সম্প্রসারণের পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। নতুন নতুন রেল লাইন করছি, ডুয়েল গেজ রেললাইন করে দিচ্ছি। মিটারগেজগুলোকে ডুয়েল গেজ করে দিচ্ছি। এভাবে সম্প্রসারণ করে দিচ্ছি যেন রেল যোগাযোগটা আরও বাড়ে। সেই সাথে নতুন নতুন লোকোমোটিভ নিয়ে আসা। আমাদের দেশের মানুষের যাতায়াত সাথে সাথে পণ্য পরিবহন। আমাদের এক এক অঞ্চলে অনেক পণ্য উৎপাদন হয়, সেগুলো সহজলভ্য করে দেওয়া, বাজারজাত করার সুযোগ করে দেওয়া যাতে আমাদের উপাদিত পণ্য বাজারজাত হবে মানুষের লাভজনক হবে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই পদক্ষেপ নিয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী ব্রডগেজ ও মিটারগেজ লোকোমোটিভগুলোর মধ্যে ২০২০ ও ২০২১ সালে মোট ৪৬টি লোকোমোটিভ দেশে আসে রেলওয়ের বহরে যুক্ত হয়। এরমধ্যে মিটারগেজ লোকোমোটিভের সংখ্যা হচ্ছে ৩০টি এবং ব্রডগেজের সংখ্যা হচ্ছে ১৬টি। বাকিগুলো আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে রেলওয়েতে যুক্ত হবে।