বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সময় আবার কাছে এসেছে জানিয়ে দলের সময়োপযোগী ঘোষণাপত্র তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার বিকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি। দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
দলের আগামী সম্মেলন নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা সাধারণত নিয়মিত সম্মেলন করি। কাজেই আমাদের আবার সম্মেলনের সময় কাছে এসে গেছে।
“সম্মেলনের আগে আমরা কিছু উপ কমিটি করে দেই। সেখানে আমাদের সংবিধান অর্থাৎ গঠনতন্ত্র, এ গঠনতন্ত্র বিষয়ে কমিটি সেখানে কোনটি আমাদের সংশোধনী আনতে হবে কি না বা আমাদের ঘোষণাপত্রটা সেটাকেও সময়োপযোগী করতে হবে। কারণ এ ঘোষণাপত্রে আমরা যে সমস্ত ঘোষণা দিয়েছিলাম তার অনেকগুলো আমরা বাস্তবায়ন করে ফেলেছি।“
সরকারে আসার পর এগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কারণ এটা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারেও ছিল। আর তাছাড়া আমরা যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছিলাম প্রথমবার সরকারে এসে ২০১০ থেকে ২০২১ সেখানে যা যা আমরা বলেছিলাম সেগুলো আমরা কার্যকর করেছি। আমরা জাতিসংঘের এমডিজি সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছি। এসডিজি, সেটা আমরা সফলভাবে বাস্তবায়ন করছি।“
সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শেষ করে অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এই যে আমরা অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা করছি সেখানেও কিন্তু আমাদের প্রেক্ষিত পরিকল্পনার যে লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে, সেটা সেখানে দেওয়া আছে এবং সেটা অনুযায়ী আমরা চালাচ্ছি।“
করোনাভাইরাস মহামারী ও ইউক্রেইন যুদ্ধ না হলে বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা নিশ্চিত মনে অব্যাহত রাখা যেত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “এই দুটো কারণে আমাদের কিছুটা হয়তো গতি স্লথ। কারণ সবচেয়ে বড় কথা আমাদের মানুষকে বাঁচাতে হবে। এক হচ্ছে মানুষকে খাদ্য দিতে হবে। আর আরেক হচ্ছে তাদের ভ্যাকসিন দিতে হবে।“
দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে। আর নেতৃত্ব সেখানেই আপনারা বেছে দেবেন যাদের উপর সাধারণ মানুষের আস্থা থাকবে, বিশ্বাস থাকবে। এই কথাটা মনে রাখতে হবে। কারণ আমরা জনগণকেই বিশ্বাস করি। জনগণের উপরই আস্থা রাখি আর জনগণের ভোটেই নির্বাচিত হয়েই কিন্তু আমরা বারবার ক্ষমতায় এসেছি।
“গণতান্ত্রিক ধারাটা যাতে অব্যাহত থাকে। বারবার বাংলাদেশে অনেক ধাক্কা গেছে। বোধহয় এই প্রথম ২০০৯ সাল থেকে আমরা ২০২২ সাল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন গণতান্ত্র্রিক ধারা বজায় রাখতে পেরেছি বলেই দেশের আর্থ সামাজিক উন্নতি হয়েছে। এটা হলো বাস্তবতা।“
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে হওয়া নানা ষড়যন্ত্রের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
এবারের ঈদে মানুষ নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে ও ফিরতে পারায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে সভায় ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগ সরকার তৃণমূল থেকেই দেশের উন্নয়ন করতে চায় বলে গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করা, গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য বলেও সভায় জানান সরকারপ্রধান।
দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আপনাদেরও নিজ এলাকা তো বটেই এবং সংগঠনকেও এবং ভবিষ্যতে যারা সংগঠনের নেতৃত্ব দিতে যাবেন তাদেরকেও কিন্তু সেইভাবেই তৈরি হতে হবে।“ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দু:খী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন, যা আওয়ামী লীগ সরকারেরও লক্ষ্য উল্লেখ করে শেখ হাসিনা মুজিববর্ষে দেশের মানুষ যেন ভূমিহীন ও গৃহহীন না থাকে সেজন্য সরকারের নেওয়া নানামুখী উদ্যোগের কথা সভায় তুলে ধরেন।
তালিকার বাইরেও দেশের কোথাও কোনো ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষ ঘর না পেয়ে থাকলে তার খোঁজ রাখতে দলীয় নেতাকর্মীদেরও নির্দেশনা দেন তিনি।