বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : এটি স্পষ্ট করা হচ্ছে যে ভারত থেকে গমের বাণিজ্যিক রপ্তানির উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশাবলী রপ্তানির জন্য ইতিমধ্যে চুক্তিবদ্ধ গমের চালানের উপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। এই নির্দেশাবলী ভারতের প্রতিবেশী এবং অন্যান্য দেশগুলোতে গম রপ্তানি বন্ধ করবে না।’
ভারত গম রপ্তানিতে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তা নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের কারণ নেই বলে জানিয়েছে দেশটি।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভারতের ঢাকা দূতাবাস জানিয়েছে, সম্প্রতি ভারত থেকে গম রপ্তানিতে দেয়া নয়াদিল্লির নিষেধাজ্ঞা প্রতিবেশীদের জন্য নয়।
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এরই মধ্যে গম ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত যে চুক্তিগুলো হয়েছে, সেটিও এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে রয়েছে।
ইউক্রেনে রুশ হামলার পর আন্তর্জাতিক খাদ্যপণ্যের বাজারে গমের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দামে অস্থিরতা দেখা গিয়েছে। দেশ দুটি রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় বাংলাদেশের জন্যও বিপাকের কারণ হয়েছে এ কারণে যে, বাংলাদেশ তার আমদানির সিংগভাগই এই দুই দেশ থেকেই আনে।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর বাংলাদেশে গম আমদানির সবচেয়ে বড় উৎস হয়ে উঠেছিল ভারত। তবে দেশটি থেকে গত শুক্রবার গম রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। এতে দেশে গমের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে।
এমনিতে খাদ্যপণ্যে ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ভারতের এই খবর ভোক্তাদের খরচ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ভাত দেশের প্রধান খাবার হলেও গত কয়েক দশকে আটা-ময়দাতেও বেশ নির্ভরতা তৈরি হয়েছে। ময়দা নিয়ে বানানো খাবারের চলও এখন কম নয়।
দেশে বছরে চালের চাহিদা আড়াই কোটি টনের কিছু বেশি। উৎপাদন এর চেয়ে বেশিই হয় বলে তথ্য নিয়ে থাকে কৃষি বিভাগ।
অন্যদিকে গমের চাহিদা ৮৪-৮৫ লাখ টনের মতো। এর মধ্যে নিজস্ব উৎপাদন ১০ লাখ টনের বেশি নয়। বাকি ৭৪ থেকে ৮৫ লাখ মেট্রিক টন আমদানি করা হয়।
২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশে আমদানি হওয়া মোট গমের ৪৫ শতাংশ রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে, ২৩ শতাংশ কানাডা থেকে, ১৭ শতাংশ ভারত থেকে এবং বাকিটা অন্য কয়েকটি দেশ থেকে এসেছে।
ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে গম আসা বন্ধের পর বাংলাদেশের এই খাদ্যপণ্যের প্রধান উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছিল ভারত।
এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার রোববার সিলেট গিয়ে বলেন ভারত সরকার বাংলাদেশে গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। তিনি বলেন, ‘গম আমদানি করা হতো ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে। কিন্তু এ দুই দেশের যুদ্ধের সময়ে আমরা সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে তিন লাখ মেট্রিক টন গম আমদানি করেছি। পরবর্তী সময়ে যা দরকার তাও ভারত থেকে আমদানি করা হবে।’
পরদিন ঢাকায় ভারত দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়, তার দেশের অভ্যন্তরীণ খাদ্যের চাহিদা পূরণ, খাদ্য মূল্যস্ফীতি রোধের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশের খাদ্য নিরাপত্তার উদ্বেগ বিবেচনায় নিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এটি স্পষ্ট করা হচ্ছে যে ভারত থেকে গমের বাণিজ্যিক রপ্তানির উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশাবলী রপ্তানির জন্য ইতিমধ্যে চুক্তিবদ্ধ গমের চালানের উপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। এই নির্দেশাবলী ভারতের প্রতিবেশী এবং অন্যান্য দেশগুলোতে গম রপ্তানি বন্ধ করবে না।’