বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : পদ্মা সেতুর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বিশ্বব্যাংকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে। রাজধানী ঢাকায় মেট্রোরেল চালু হওয়ার পথে। এখন স্বপ্ন মাটির নীচের ‘পাতাল রেল’। পাশের দেশ ভারতের কোলকাতাসহ বিশ্বের বহু মহানগরীতে যানজট কমানো এবং নাগরিকদের নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিতে মাটির নীচ দিয়ে পাতাল রেল লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশও সেই পাতাল রেলের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। নিত্য যানজট থেকে মুক্তি পেতে রাজধানীর ঢাকার মানুষের এটাই এখন স্বপ্ন। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) রাজধানী ঢাকায় ৬টি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ৩৩.৫৭ কিলোমিটার হবে পাতাল রেল। সাভারের হেমায়েতপুর থেকে ঢাকার গাবতলী ১৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটার ও বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার পাতাল রেল নির্মাণ করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে ঢাকা ম্যাস ট্র্যানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের মধ্যে পাতাল রেলের ডিপোর ভূমি উন্নয়নের মধ্য দিয়ে নির্মাণকাজ শুরু হবে। প্রাথমিক কাজের অংশ হিসেবে কর্তৃপক্ষ ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে লাইসেন্স হস্তান্তর করেছে। ইতোমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পাতাল রেল মাটির কমবেশি ৩০ মিটার নিচ দিয়ে যাবে। টানেল বোরিং মেশিন দিয়ে এর নির্মাণকাজ চালানো হবে।
যানজটের নগরী ঢাকাকে একটু স্বস্তি দিতে ইতোমধ্যেই নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। কিন্তু পূর্বের নেয় উদ্যোগগুলোতে তেমন কাজের কাজ কিছুই হয়নি। রাজধানীর যানজট নিরসন করে নগরবাসীকে একটু সাচ্ছন্দ্যে চলাচলের জন্য একাধিক ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হলেও শতভাগ উপকার পাননি সাধারণ মানুষ। বরং এখন যানজট নিরসনের জন্য নির্মিত ফ্লাইওভারের কয়েকটিতে নিয়মিতই যানজট লেগে থাকে। এছাড়ার এসব ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তাতেও যানজট এখন নিত্যসঙ্গী। আবার এসব ফ্লাইওভারের নিচে নির্মাণ করা হয়েছে সিটি করপোরেশনের ডাম্পিং স্টেশন। আর এসব ডাম্পিং স্টেশনের ময়লার কারণে পথচারীরা পড়ছেন দুর্ভোগে। ফ্লাইওভারের নিচে ময়লার স্তুপ থাকার কারণে সৌর্ন্দয্যহীণ হয়ে পড়ছে রাজধানীর সড়কগুলো।
তবে যানজট থেকে স্থায়ী স্বস্তি দিতে পাতাল রেলের নতুন যুগে প্রবেশ করছে যানজটের নগরী ঢাকা। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর মধ্যে পাতাল রেলের নতুন যুগে প্রবেশ করবে। রাজধানী ঢাকায় ছয়টি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করবে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল)। বিমানবন্দর-বাড্ডা-কমলাপুর রুটে সড়কের নিচ দিয়ে চলবে দ্রুতগতির এ ট্রেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ মেট্রো লাইন নির্মাণে মাঠ পর্যায়ের কাজ শুরু হবে। প্রথমপর্যায়ের নির্মাণকাজ কমলাপুর থেকেই শুরু হবে বলে জানান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক। ডিএমটিসিএল ঢাকা মহানগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসন, পরিবেশ উন্নয়নে অত্যাধুনিক গণপরিবহন হিসেবে ছয়টি মেট্রোরেলের সমন্বয়ে গঠিত। ২০৩০ সালের মধ্যে ১২৯ কিলোমিটারের ৬টি এমআরটি (মেট্রোরেল) লাইনের কাজ শেষ করা হবে। এই ৬টি লাইনের কাজ শেষ হলে মেট্রোরেলে প্রায় সাড়ে ৫০ লাখ যাত্রী পরিবহন করা যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মেট্রোরেল লাইন-৫ প্রকল্পের আওতায় ১৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটার পাতাল মেট্রোরেল এবং ৬ দশমিক ৫০ কিলোমিটার উড়াল মেট্রোরেল নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ৪১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এবার জাপানের সঙ্গে ১১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ঋণচুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সরকার ও জাপানের মধ্যে চলমান মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পে বিনিময় নোট ঋণচুক্তি সই হয়। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত আইটিও নাওকির মধ্যে এই চুক্তি সম্পন্ন হয়। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউহো হায়াকাওয়া নিজ দেশের পক্ষে এ ঋণচুক্তিতে সই করেন।
নতুন এই মেট্রোরেলের অ্যালাইনমেন্ট হলো হেমায়েতপুর-বলিয়ারপুর-মধুমতি-আমিনবাজার-গাবতলী-দারুসসালাম-মিরপুর ১-মিরপুর ১০-মিরপুর ১৪-কচুক্ষেত-বনানী-গুলশান ২-নতুনবাজার থেকে ভাটারা পর্যন্ত। প্রকল্পটিতে মোট ব্যয়ের মধ্যে জাইকা দেবে ৩০ হাজার ৭৫৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২৮-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন হবে। হেমায়েতপুর থেকে গাবতলী হয়ে ভাটারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ লাইনটির ১৪ কিলোমিটার হবে পাতাল রুট। বাকি ছয় কিলোমিটার হবে অ্যালিভেটেড (উড়াল) রুট। ফলে একই রুটে পাতাল ও উড়াল ব্যবস্থার সমন্বয়ে মেট্রোরেল স্থাপিত হবে। প্রস্তাবিত এমআরটি রুট-৫ (নর্দার্ন রুট) এ ১৪টি স্টেশন থাকবে। এর মধ্যে নয়টি স্টেশন হবে আন্ডারগ্রাউন্ডে অর্থাৎ মাটির নিচে। আর বাকি পাঁচটি স্টেশন থাকবে মাটির ওপরে। প্রস্তাবিত পাতাল স্টেশনগুলো হচ্ছে- হেমায়েতপুর, বলিয়ারপুর, মধুমতি, আমিনবাজার, গাবতলী, দারুসসালাম, মিরপুর-১, মিরপুর-১০, মিরপুর-১৪। অন্যদিকে, কচুক্ষেত, বনানী, গুলশান-২, নতুনবাজার ও ভাটারায় হবে উড়াল স্টেশন।
ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-৫) নর্দার্ন রুট প্রকল্পের পরিচালক মো. আফতাব হোসেন খান জানান, প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ ও জাপান সরকারের মধ্যে ঋণচুক্তি সই হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় ২০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে ১৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটার হবে পাতাল।
জানা যায়, দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল হচ্ছে ঢাকার বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত। উত্তরা-মতিঝিল-কমলাপুরের মধ্যে তৈরি হচ্ছে এমআরটি লাইন-৬। এর পাতাল অংশের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। এ অংশে থাকবে ১২টি পাতাল স্টেশন। পাতাল অংশ ছাড়াও নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত তৈরি করা হবে আরো ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার উড়াল মেট্রো। বিমানবন্দর-কমলাপুর ও নতুনবাজার-পূর্বাচলের মধ্যে নির্মিত মেট্রোরেলটি চিহ্নিত করা হয়েছে এমআরটি-১ নামে। লাইনটি তৈরি করতে খরচ হবে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা।
নতুনবাজার স্টেশনে ইন্টারচেঞ্জ থাকবে। এই ইন্টারচেঞ্জ ব্যবহার করে বিমানবন্দর রুট থেকে পূর্বাচল রুটে এবং পূর্বাচল রুট থেকে বিমানবন্দর রুটে যাওয়া যাবে। উভয় রুটের বিস্তারিত স্ট্যাডি সার্ভে ও বেসিক নকশা সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ডিটেইলড নকশার কাজ চলমান। ডিটেইল্ড নকশা অগ্রগতি শতভাগ। নির্মাণকাজের সব দরপত্র দলিল প্রস্তুত কার্যক্রমের অগ্রগতি ৮৬ শতাংশ। এমআরটি-১ এর ডিপো ও ডিপো অ্যাক্সেস করিডোর নির্মাণের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার পিতলগঞ্জ ও ব্রাহ্মণখালী মৌজায় ৯২ দশমিক ৯৭২৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ২০২৬ সালে কাজ শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে যানজট এবং এর প্রভাবে বার্ষিক প্রায় ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা বর্তমান রেটে প্রায় ৩৩ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এমআরটি লাইন-৬ চালু হওয়ার পর মেট্রোরেল পরিচালনাকালে দৈনিক ভ্রমণ খরচ বাবদ প্রায় ৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা এবং যানবাহন পরিচালনা খরচ বাবদ প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে। এ সাশ্রয়কৃত অর্থ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে, জিডিপি বাড়বে।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের তথ্য বলছে, পাতাল রেল যা মেট্রোরেলের লাইন বা এমআরটি-১ নামেও পরিচিত, সেটি বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত যাবে। মেট্রোরেলের মতো এটিও হবে বিদ্যুৎ-চালিত রেল। এবং এটি হবে দূর নিয়ন্ত্রিত ট্রেন। দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে মেট্রোরেল পরিচালনার জন্য থাকবে অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টারও। এর দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ২০ কিলোমিটার। শুরুতে এমআরটি-১ এর কাজ ২০২০ সালের ডিসেম্বরে শুরু করার কথা বল হয়েছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির কারণে কাজটি পিছিয়ে যায়। এমআরটি-১ এর রেললাইনে দুটি অংশ থাকবে, প্রথম অংশটি পুরোপুরি পাতালপথে, দ্বিতীয়টি উড়ালপথ। এই দুই পথের জন্য মোট ১৯টি স্টেশন চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে পাতালপথে স্টেশন হবে ১২টি। প্রতিটি স্টেশনে ট্রেন থামবে প্রতি আড়াই থেকে সাড়ে তিন মিনিট পরপর। এই রুটে চলাচল করবে মোট ২৫টি ট্রেন, যার প্রতিটি একবারে তিন হাজারের বেশি যাত্রী বহন করবে। পাতালপথে যেসব স্টেশন থাকবে তার মধ্যে রয়েছে কমলাপুর, রাজারবাগ, মালিবাগ, রামপুরা, পূর্ব হাতিরঝিল, বাড্ডা, উত্তর বাড্ডা, নতুন বাজার, নর্দা, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩, বিমানবন্দর। প্ল্যাটফর্মে ওঠানামার জন্য উভয় পথের স্টেশনে থাকবে লিফট, সিঁড়ি ও এস্কেলেটর।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল সচল ঢাকা। সচল ঢাকা গড়ার লক্ষ্যে এমআরটি লাইন সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করবে। এমআরটি লাইনের কারণে ঢাকার যানজট অনেকটাই কমে যাবে, তবে পুরোপুরি নিরসন হবে না। বিশেষজ্ঞরা এটা উপলব্ধি করেন। মেট্রোরেলের ১৭টি স্টেশন হবে। এসব স্টেশনে বিপুল সংখ্যক মানুষ ওঠানামা করবে। অংশীজনদের সঙ্গে যদি একটু আগে সমন্বয় করা যেত, তাহলে আমরা সহযোগিতা করতে পারতাম, সমস্যা সমাধান করতে পারতাম।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, পরিকল্পনার সময় মেট্রো স্টেশন থেকে নামা-ওঠার জায়গার জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। এখন করা হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধান করতে দরকার সমন্বয়। মেট্রোরেল ফুটওভার ব্রিজ নয় যে, এটা যখন তখন ভেঙে ফেলা যাবে। এটা ১০০ বছরের জন্য করা হচ্ছে। যত বেশি সমন্বয় হবে, তত বেশি সমস্যার সমাধান করা যাবে।
বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত (এমআরটি-১) মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক সাইদুল হক জানান, পরিকল্পনায় দীর্ঘসময় লাগলেও বাস্তবায়ন দ্রুত হবে। তিনটি টানেল বোরিং মেশিনে (টিবিএম) প্রতিদিন ৩০ মিটার করে পাতাল রেলপথ নির্মাণ সম্পন্ন হবে। স্টেশন নির্মাণ হবে ওপেন কাট পদ্ধতিতে। এমআরটি-১ মাটির ৩০ মিটার গভীরে নির্মিত হওয়ায় জনদুর্ভোগ হবে না। প্রতিটি স্টেশন নির্মাণে ছয় মাস করে সময় লাগবে। যেসব প্রতিষ্ঠান ঠিকাদারি কাজ পাবে, তারাই টিবিএম আনবে। এমআরটি-১ বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর এবং নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল এই রুটে বিভক্ত। ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার দীর্ঘ বিমানবন্দর-কমলাপুর অংশের ১২টি স্টেশনই মাটির নিচে হবে।
ডিএমটিসিএল সরকারি রাস্তার ওপরে বা নিচে রেলপথ তৈরি করছে। সেতু বিভাগের পরিকল্পনায় অনেক ক্রস কাটিং রয়েছে। তারা সাধারণ মানুষের জমির নিচে রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। ফলে মাটির ৭০ মিটার গভীরে নির্মাণকাজ করতে হবে। এতে ব্যয় বেশি। ৬টি এমআরটি লাইন বাস্তবায়নে ২০৩০ সাল পর্যন্ত নির্ধারিত আছে সেভাবে কাজ চলছে। এমআরটি লাইন যখন বাস্তবায়ন শেষ হলে যানজট নিরসনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রফেসর ড. শামছুল হক বলেন, আমাদের বিজ্ঞান ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে হবে। যানজট নিয়ন্ত্রণে রাজউকসহ অন্যদের নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা করা উচিত। পাতাল রেল পরিবহন ব্যবস্থার পুর্ণঙ্গ রূপ না। ঢাকায় গণপরিবহনে সমন্বয় নেই। সেই সমন্বয় আনতে হবে। পাতাল রেলে ব্যয় বেশি, আলো সমস্যাসহ নানা সমস্যা থাকে। ঢাকার যানজট থেকে মুক্তির জন্য সাবওয়ে বা পাতালরেল হলো খন্ডিত উন্নয়ন। এককভাবে শুধু পাতাল রেল হলেই যানজট নিরসন হবে না। এই শহরের যানজট মুক্ত করতে হলে গণপরিবহন, সিগন্যালসহ সামগ্রিকভাবে উন্নয়ন করতে হবে। কারো কারো চোখে হয়ত এমন দেখেন যে, পাতাল রেল হলেই ঢাকার যানজট মুক্ত হয়ে যাবে। কোন কোন প্রতিষ্ঠান হয়তো এতে লাভবান হবে। তবে এগুলো যেন বৃত্তাকার রেলপথ, মেট্রোরেলসহ অন্য প্রকল্পের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়, সেদিকে বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষকে নজর রাখতে হবে।