বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : সদ্য সমাপ্ত ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে শুধু পণ্য রপ্তানি বাবদ ৫২ দশমিক ০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় এসেছে, যা সর্বকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। কোনো এক অর্থবছরে এর চেয়ে বেশি আয় আর আসেনি। এই আয় আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৩৪ শতাংশ বেশি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) গতকাল এ তথ্য প্রকাশ করেছে। ইপিবি সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, সেবা খাতের আয়ের হিসাব যুক্ত হলে সদ্য শেষ হওয়া এই অর্থবছরেই দেশের নিট রপ্তানি আয় ৬০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেটি হবে দেশের রপ্তানি আয়ে একটি নতুন মাইলফলক। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রপ্তানি আয় রেকর্ড হয়েছিল। ওই অর্থবছরে ৪০ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয়েছিল। তবে করোনা মহামারির কারণে পরের অর্থবছরে রপ্তানি আয়ে ধস নামে। এক ধাক্কায় আয় কমে যায় প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৮ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় এসেছিল। এর সঙ্গে ৫ বিলিয়ন বাড়তি আয় ধরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য পণ্য খাতে রপ্তানির টার্গেট নির্ধারণ করে ৪৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। সেই টার্গেট অতিক্রম করে রেকর্ড পরিমাণ আয় এলো এবার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, করোনা মহামারির ও ইউক্রেন যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সর্বকালের সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের রেকর্ড একটি বড় অর্জন। তিনি বলেন, সরকার রপ্তানি বাড়াতে বিভিন্ন নীতি ও আর্থিক প্রণোদনা অব্যাহত রেখেছে।
দেশের উদ্যোক্তারাও সেই সুযোগ গ্রহণ করে রপ্তানি আয় বাড়াতে সহায়তা করছেন। ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও এইচ এম আহসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শুধু পণ্য রপ্তানি করে ৫২ বিলিয়ন ডলারের বেশি আয় এসেছে। এর সঙ্গে সেবা খাতের আয় ধরলে সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে মোট রপ্তানি আয় আরও বাড়বে। তিনি বলেন, গত এপ্রিল পর্যন্ত সেবা খাতের রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। এর সঙ্গে মে ও জুন এই দুই মাসের আয় যোগ করলে তা ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি হবে। তাতে পণ্য ও সেবা এই দুই খাত মিলিয়ে নিট রপ্তানি আয় ৬০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। তার মতে এটি ঘটলে, সেটি হবে দেশের ইতিহাসে রপ্তানি আয়ের একটি নতুন মাইলফলক। ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আরও জানান, করোনা মহামারির পর এটি ছিল রিকভারির বছর। মহামারির কারণে রপ্তানি খাতের যে সুযোগ নষ্ট হয়েছিল, তারা দেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের নিয়ে সেই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে চেষ্টা করেছেন। এ কারণে সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ প্রায় ৩৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে শুধু পণ্য রপ্তানি করে। তবে এখন সামনের দিনগুলোতে এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করেন ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান।