বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : রেলওয়ের কাছে পদ্মা সেতু আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে আগামীকাল রবিবার। এরপর সেতুর নিচ তলায় রেললাইন স্থাপনের কাজ এ মাসের শেষ নাগাদ শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন।
যদিও গতকাল শুক্রবার রেল সংযোগ প্রকল্প পরিদর্শনে গিয়ে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে রেললাইনের কাজ শুরু হবে। আর আগামী বছরের জুনে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত চলবে ট্রেন। পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, আজ শনিবার সমন্বয় সভা হবে। চার শর্তে রেল সংযোগের ঠিকাদার
সিআরইসিকে রবিবার পদ্মা সেতু হস্তান্তর করা হবে। কাজ শেষে তারা আবার সেতুর ঠিকাদারের কাছে পদ্মা সেতু বুঝিয়ে দেবে।
পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেন চালাতে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ সিঙ্গেল লাইন রেললাইন নির্মাণকাজ চলছে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর ২১ মিটার প্রশস্ত ওপর তলায় (আপার ডেক) গত ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যান চলাচল উদ্বোধন করেন। সরকারের ঘোষণা ছিল উদ্বোধনের দিন থেকেই পদ্মা সেতুতে গাড়ি ও ট্রেন চলবে। কিন্তু রেল সংযোগ প্রকল্প পিছিয়ে থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেতুতে ব্যালাস্টলেস রেলট্র্র্যাক স্থাপনে ছয় মাস লাগবে। রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন বলেছেন, এ বছরের মধ্যেই রেললাইন স্থাপনের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা ছিল। ৩০ জুলাই কাজ শুরু হলে বাধা-বিপত্তি না এলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি নাগাদ কাজ শেষ হবে। রেললাইন স্থাপনের প্রয়োজনীয় মালামাল ইতোমধ্যে বিদেশ থেকে এসেছে বলে জানান তিনি।
সেতুতে যান চলাচলের কারণে সৃষ্ট কম্পনে রেললাইন স্থাপনে সমস্যা হবে কিনা- এ প্রশ্নের এখনো সমাধান হয়নি। গতকাল রেলমন্ত্রীর পরিদর্শনের সময় রেল সংযোগ প্রকল্পের পরামর্শক কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালট্যান্টের প্রধান সমন্বয়ক মেজর জেনারেল এফএম জাহিদ হোসেন বলেন, সেতুতে যান চলাচলের ফলে সৃষ্ট কম্পনের প্রভাব দেখতে বিশেষজ্ঞ প্যানেল রয়েছে। সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে নকশা অনুযায়ী কম্পনের কারণে সমস্যা হবে না।
রেলের কাজ চলাকালে সেতুতে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা নেই। যদি কম্পন বেশি হয় প্রয়োজনে গাড়ির গতি কম করা যেতে পারে। বিষয়টি পরামর্শক দলের সঙ্গে কথা বলে নির্ধারণ করা হবে।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে সবকটি স্প্যান স্থাপনের মাধ্যমে পূর্ণ আকার পায় পদ্মা সেতু। তখন থেকেই সেতুতে রেললাইন স্থাপনের কাজ শুরুর অনুমতি চাইছে রেলওয়ে। কিন্তু ওপরতলায় সড়ক নির্মাণ ও নিচে গ্যাস পাইপলাইনের নির্মাণকাজ চলায় রেলট্র্যাক বসানোর অনুমতি দেয়নি সেতু বিভাগ।
৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকার পদ্মা সেতু এবং ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকার রেল সংযোগ- দুটি প্রকল্পই সরকারের অগ্রাধিকারের। পদ্মা সেতু চালু হলেও রেল সংযোগ প্রকল্পের অগ্রগতি ৬১ শতাংশ। গতকাল পরিদর্শনে গিয়ে রেলমন্ত্রী জানান, ২০২৪ সালের জুনে যশোর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ সম্পন্ন হবে। ঢাকা-মাওয়া অংশের কাজ এগিয়েছে ৬৪ শতাংশ, মাওয়া-ভাঙ্গা অংশে অগ্রগতি ৮০ শতাংশ।