বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : দেশে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে যাওয়ায় ডলারের দাম রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ছে। কার্ব বা খোলা মার্কেটে ডলারের দাম ১১২ টাকা পর্যন্ত উঠে গিয়েছিল। গতকালও সর্বোচ্চ ১১০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। খোলাবাজারের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্যাংকের নগদ ডলারের দাম। আমদানিকারদের পণ্য আমদানির ব্যয় মেটাতে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে প্রতি ডলারের জন্য ১০৫ টাকা থেকে ১০৮ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নানা পদক্ষেপ নেয়া সত্ত্বেও বৈদেশিক মুদ্রাবাজারের এ অস্থিরতা থামছে না। এমনি পরিস্থিতিতে ডলারের মূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে চতুর্মুখী পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই অংশ হিসেবে কৃত্রিমভাবে ডলারের দাম কেউ বাড়াচ্ছে কি না তা তদারকি করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১১টি টিম এক সাথে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে অভিযান শুরু করেছে। একই সাথে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে লাইসেন্স প্রাপ্ত দেশের মানিচেঞ্জারগুলোকেও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। গতকাল ১০টি টিম মানিচেঞ্জারগুলো পরিদর্শন করেছে। এমনকি কেউ অযৌক্তিকভাবে ডলারের দাম বাড়ালে লাইসেন্স বাতিলেরও হুমকি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে বাজার তদারকির পাশাপাশি আমদানি ব্যয়ের হ্রাস টানার চেষ্টা করা হচ্ছে। ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লাখ ডলারের ওপরে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করা হয়েছে। বলা হয়েছে এ ধরনের এলসি খোলার ২৪ ঘণ্টা আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। পাশাপাশি সরকারি জ্বালানি তেল, ভোগ্যপণ্যসহ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার রিজার্ভ থেকে সঙ্কটে পড়া ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র আশা করছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ উদ্যোগের ফলে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রিত হবে। কেউ কারসাজির মাধ্যমে বাজার ঘোলাটে করতে পারবে না।
অবশ্য ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর আগের মতো সব ব্যাংকে ডলার সরবরাহ করছে না। শুধু যারা সরকারি কেনাকাটা বিশেষ করে জ্বালানি তেল, সার, ভোগ্যপণ্য আমদানি করছে ওইসব ব্যাংকের চাহিদার একটি অংশ মেটাতে ডলার সরবরাহ করছে। কিন্তু অন্য সব এলসির ক্ষেত্রে ডলার সরবরাহ করছে না। এদিকে এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর কাছ থেকে চাহিদা অনুযায়ী রেমিট্যান্স পাওয়া যাচ্ছে না। তাহলে অতি প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে যে ডলার প্রয়োজন তা সংগ্রহ করবে কোথা থেকে। বাধ্য হয়েই যেসব ব্যাংকের কাছে ডলার আছে তাদের কাছ থেকে বাড়তি মূল্যে ডলার কিনে আমদানি দায় নিষ্পত্তি করতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর কারণীয় কী হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তা বলে দিচ্ছে না। একদিকে ডলার সরবরাহ করা হবে না, অপরদিকে প্রয়োজন মেটাতে বেশি দামে ডলার কেনায় কড়াকড়ি করা হবে, তাহলে ব্যাংকগুলোকে বৈদেশিক বাণিজ্য বন্ধ করে দেবে কি না এমন প্রশ্ন করেন এক ব্যাংকার।