নিজস্ব প্রতিনিধি : দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক সংকট দেশের একমাত্র বিশেষায়িত পাবনা মানসিক হাসপাতাল। ফলে কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত মানসিক রোগীরা।
দেশের একমাত্র বিশেষায়িত মানসিক রোগ নিরাময় কেন্দ্র ‘পাবনা মানসিক হাসপাতাল’। পাবনা শহর থেকে তিন কি: মি: দূরে পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নে ১৯৫৭ সালে পাবনা শহরের শীতলাই জমিদার বাড়িতে তৎকালীন পাবনা জেলার সিভিল সার্জন ডা : মোহাম্মদ হোসেন গাংগুলী এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করেন । প্রতিষ্ঠার বছরেই হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে রয়েছে ১৫০ টি কেবিন যার প্রতি মাসের ভাড়া ৮,৫০০ টাকা । বাঁকি ৩৫০ টি রয়েছে সাধারণ শয্যা । কেবিনে প্রতি রুমে থাকতে পারে দুইজন করে রোগী । সকল রোগীর বেলায়ই ভর্তি ফি সরকার নির্ধারিত ১৫ টাকা । নানা চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে কালের স্বাক্ষী হয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে এই বিশেষায়িত হাসপাতালটি। প্রতিষ্ঠার পর ভিন্নভিন্ন পরিবর্তনের ছোঁয়া আসলেও নানা সমস্যার কারণে কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত ভূক্তভোগীরা। চিকিৎসক সংকট দুর হরচ্ছ না কোন সময় ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে মোট চিকিৎসকের পদ ৩১ টি সেখানে বর্তমানে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে ১০ জন । চিকিৎসকের ২১ টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে ।
মানসিক রোগীদের চিকিৎসার সাথে জড়িত একাধিক চিকিৎসকের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, আউটডোরে জরুরী বিভাগে রোগী দেখার সময়ে খবর আসে ইনডোরে রোগীর খারাপ অবস্থা। তখন আউটডোরের রোগী দেখা বাদ দিয়ে ইনডোরে আসলে অনেকটা চাপের মধ্যেই পড়ে থাকতে হয়। অল্প সংখ্যক চিকিৎসকের কারণে সন্তোষজনক চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হয়ে উঠেনা।
মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ আবাসিক সাইকিয়াট্রিস্ট মোঃ মাসুদ রানা সরকার জানান, পর্যাপ্ত চিকিৎসক প্রয়োজন। অথচ ৩ জন সাইকিয়াট্রিস্ট দিয়ে এই হাসপাতালের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তন্মধ্যে একজন চিকিৎসক পাবনা মেডিকেল কলেজের। চিকিৎস সংকট দুর হলে অবশ্যই রোগীকে কাঙ্খিত চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ মোঃ শাহীন রেজা বলেন, ৫০০ শয্যার বিশেষায়িত হাসপাতাল দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক সংকট রয়েছে । এই সংকটের মধ্যেই আমরা সমস্যা নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে সংকট নিরসন হলে অবশ্যই পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব বলে তিনি দাবী করেন।
হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ রতন কুমার রায় বললেন, যতটুকু আছে সেইটুকু দিয়েই চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। সংকট নিরসনে ডিসি অফিসের মিটিং এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। আশা করছি সরকার এই প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক মানের করার উদ্যোগ গ্রহণ করেবেন। সেটি বাস্তবায়ন হলে চিকিৎসা সেবার মান আরও বৃদ্ধি পাবে।