বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : দফায় দফায় বাড়তে থাকা ডিমের দাম অবশেষে কমতে শুরু করেছে। রাজধানীর পাইকারি বাজারে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা কমেছে। বাজারে সরবরাহও বেড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় এখন প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫/১৫০ টাকায়। গত মঙ্গলবারও ডিমের ডজন ছিল ১৬০ টাকা। খুচরা বাজারে ডিমের হালি ৫০ টাকা। অস্বাভাবিক দামের কারণে চাহিদা কমে যাওয়ায় দাম বুধবার থেকে নিম্নমুখী বলে জানান ব্যবসায়ীরা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ডিমের দাম কমার এমন চিত্র দেখা যায়। যাত্রাবাড়ী, কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে দাম বাড়তে শুরু করার পর থেকেই ডিম বিক্রি কমে গেছে। তবে এখন বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডিম না খাওয়ার প্রচারণা চালাচ্ছেন অনেকেই। এতে অনেকেই সাড়া দিয়েছেন বলে মনে হয়। কারণ, বিক্রি কমেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বাজারে হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা ডজন। দেশি মুরগির ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকায়।
চলছে অভিযান : কারসাজি করে ডিম ও মুরগির দাম বাড়ানোয় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের সদস্যরা। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অভিযান পরিচালনা করে চারটি আড়তকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেন অধিদফতরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের প্রধান মো. আবদুল জাব্বার মন্ডল। এ ছাড়া বরিশালে পাঁচটি দোকানকে ১৫ হাজার এবং কুমিল্লায় পাঁচটি দোকানকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে জানা গেছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায়ের পর আবদুল জাব্বার মন্ডল সাংবাদিকদের বলেন, দেশব্যাপী ডিম ও মুরগির দাম নিয়ে কারসাজি রোধকল্পে অভিযানের অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগরীর কারওয়ান বাজার ডিম ও মুরগির পাইকারি ও খুচরা দোকানে অভিযান চালানো হয়েছে। আড়তে ডিম কেনার ক্যাশ মেমো সংরক্ষণ না করে কারসাজির মাধ্যমে ডিম ও মুরগির দাম বাড়ানো হয়। এ কারণে হিমালয় ট্রেডার্স ও জনতা মা মণি ডিমের আড়ত থেকে ২০ হাজার করে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। একই অপরাধে সততা মুরগির আড়তকে ২০ হাজার ও আলহাজ এন্টারপ্রাইজকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল জানান, বরিশালে মুরগি ও ডিম বিক্রির পাঁচটি দোকানে অভিযান চালিয়ে ১৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। গতকাল দুপুরে নগরের বাজার রোড ও নতুন বাজার এলাকায় অধিদফতরের উপপরিচালক অপূর্ব অধিকারীর নেতৃত্বে অভিযান চলাকালে কেনাবেচায় মেমো ও মূল্য তালিকা না থাকা এবং অতি মুনাফা করার অপরাধে মদিনা ডিম বিক্রেতাকে ৫ হাজার, শেখ স্টোরকে দেড় হাজার, শেখ পোলট্রিকে ৪ হাজার, কালাম মিট হাউসকে ২ হাজার ও বণিক স্টোরকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, কুমিল্লায় ই?চ্ছামতো দামে ডিম বিক্রির দায়ে পাঁচ দোকানকে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। গতকাল কুমিল্লার নিউমার্কেট ও রাজগঞ্জ বাজার এলাকার ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দোকানকে এ জরিমানা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন অধিদফতরের কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আছাদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা এবং ক্রয় ভাউচার না রেখে ইচ্ছামতো দামে ডিম বিক্রির খবর পাই। আমরা ছদ্মবেশে নিউমার্কেট ও রাজগঞ্জের কিছু দোকানে ডিম কিনতে যাই। সেখানে ইচ্ছামতো দাম রাখার অভিযোগে রফিক স্টোরকে ৫ হাজার, বাবুল স্টোরকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া মুরগির দোকানেও একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে নিউমার্কেট এলাকার ভাই ভাই ব্রয়লার হাউসকে ৫ হাজার, রাজগঞ্জের রেজ্জাক ব্রয়লার হাউসকে ৩ হাজার ও হাশেম পোলট্রিকে ৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।