বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : রাশিয়া থেকে গম ও সার আমদানির চেষ্টা করছে সরকার। সাড়ে ৩ লাখ টন গম এবং ১ লাখ ২০ হাজার টন এমওপি বা পটাশ সার আমদানি নিয়ে দুই দেশের সংশ্নিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা কাজ করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ সম্প্রতি জানিয়েছে, রাশিয়া থেকে কৃষিপণ্য ও চিকিৎসাসামগ্রী আমদানিতে কোনো বাধা নেই। এরপর সরকার সে দেশ থেকে সার ও গম আমদানির বিষয়ে তৎপর হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক সমকালকে বলেন, রাশিয়া থেকে সার ও গম আমদানির বিষয়ে আলোচনা চলছে। মস্কোতে অবস্থিত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত এ নিয়ে সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে বুধবার (আজ) বৈঠক করবেন। আশা করা যায়, এ বিষয়ে শিগগিরই ইতিবাচক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর ব্যাংকিং লেনদেনসহ বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এ কারণে যেমন এলসি খোলা, কনফার্মেশন পাওয়া এবং মূল্য পরিশোধ করা যাচ্ছে না; অন্যদিকে কৃষ্ণসাগরে জাহাজ চলাচল এখনও নিরাপদ নয়। সম্প্রতি রাশিয়ার কৃষি ও খাদ্যপণ্য আমদানি থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে।
রাশিয়া ও ইউক্রেন ছিল বাংলাদেশের গম আমদানির অন্যতম উৎস। এ দুটি দেশ থেকে মোট গম আমদানির ২৫ ভাগ আসত। সার আমদানির ক্ষেত্রেও রাশিয়া বাংলাদেশের অন্যতম উৎস ছিল। দেশটির সঙ্গে সার আমদানির বিষয়ে বাংলাদেশের এমইইউ আছে। চুক্তি অনুযায়ী গত অর্থবছরে রাশিয়ার ১ লাখ ৮০ হাজার টন এমওপি সার সরবরাহ করার কথা ছিল। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর আগ পর্যন্ত মাত্র ৬০ হাজার টন সার আমদানি করা হয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়া থেকে সার আমদানি নিয়ে আলোচনা চলছে। গত বছরের চুক্তির অবশিষ্ট ১ লাখ ২০ হাজার টন এমওপি সার আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। তবে মূল্য পরিশোধের লেনদেন ব্যবস্থা, পরিবহন, জাহাজের বীমা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা চলছে। যতটুকু জানা গেছে, রাশিয়া অন্য কোনো দেশ থেকে বাংলাদেশকে এ সার সরবরাহ করবে। ওই কর্মকর্তা বলেন, দেশে বছরে সাড়ে ৭ লাখ টন এমওপি সারের চাহিদা রয়েছে। কানাডা থেকে সাড়ে ৫ লাখ টন আমদানির বিষয়ে এরই মধ্যে চুক্তি হয়েছে। দেশে অক্টোবর থেকে এমওপির চাহিদা বাড়বে। আমদানিও শিগগির শুরু হবে। এ ছাড়া টিএসপি সারের চাহিদা ৪ লাখ টন। চাহিদার বেশি এরই মধ্যে মজুত আছে।
গম আমদানির বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। রাশিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশের খাদ্য সচিব ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনলাইনে এ নিয়ে আলোচনা করেছেন। রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশকে গম সরবরাহ করতে আগ্রহী। এ বিষয়ে খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন সমকালকে বলেন, গম আমদানির বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। আশা করা যায়, রাশিয়া থেকে গম পাওয়া যাবে।