ডলারের একক রেট: রেমিট্যান্সে ১০৮, রপ্তানিতে ৯৯

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : এবিবি ও বাফেদার বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সোমবার থেকে ব্যাংকগুলোতে ডলারের একক রেট কার্যকর হচ্ছে। পাঁচদিন পর পর্যালোচনা করে প্রয়োজনে তাতে পরিবর্তন আনা হবে।

সব ব্যাংকে ডলারের একক রেট কার্যকর হচ্ছে সোমবার থেকে। রেমিট্যান্স আনতে প্রতি ডলারের সর্বোচ্চ দর হবে ১০৮ টাকা ও রপ্তানি বিল নগদায়ন হবে ৯৯ টাকায়। অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) রোববার বৈঠকে বসে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে একইসঙ্গে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পাঁচদিন পর এই রেট পর্যালোচনা করে প্রয়োজনে তাতে পরিবর্তন আনা হবে।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বাফেদা চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম এবং এবিবি চেয়ারম্যান ও ব্র‍্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন। এ সময় এই দুই সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার ডলারের বাজারে করণীয় নির্ধারণে এবিবি ও বাফেদার সঙ্গে আলোচনায় বসে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই বৈঠকে ডলারের বাজার পর্যবেক্ষণ ও আমদানি-রপ্তানি পরিস্থিতি বুঝতে সময় নেয় ব্যাংক নির্বাহী ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর এই দুই সংগঠন।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রেমিট্যান্স আহরণ ও রপ্তানি বিল নগদায়নে ব্যাংকগুলোর গড় খরচের সঙ্গে এক টাকা যোগ করে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রি করবে ব্যাংকগুলো। সেক্ষেত্রে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বিল নগদায়নে ব্যাংকগুলোর গড় খরচ হবে ১০৩ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে এক টাকা যোগ করে এলসি বা ঋণপত্র নিষ্পত্তির জন্য ডলার বিক্রি হবে ১০৪ টাকা ৫০ পয়সায়। এতে আমদানিকারকের খরচ কমবে বলে মনে করছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।

বাফেদা চেয়ারম্যান আফজাল করিম বলেন, ‘বাজারে যেন অসম প্রতিযোগিতা না থাকে সে জন্য আমরা সব ক্ষেত্রে ডলারের একক রেট নির্ধারণ করে দিয়েছি। আমরা পর্যালোচনা করে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের এক্সচেঞ্জ হাউজসহ সমগোত্রীয় সব প্রবাসীর পাঠানো রেমিট্যান্সে বিনিময় হার হবে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা। সব অথরাইজড ডিলার ব্যাংককে এটা মেনে চলতে হবে। রপ্তানি নগদায়ন হবে ৯৯ টাকায়। সোমবার থেকে এই রেট কার্যকর করা হবে।’

এবিবি চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ‘গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বাফেদা থেকে ডলারের রেট নির্ধারণ করা হবে। বাজারের ওপর ভিত্তি করে এ দর সময়ে সময়ে পরিবর্তন করা হবে। এজন্য এটাই যে সব সময়ের জন্য ফিক্সড বিষয়টি তেমন নয়। ‘বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে এটিই সবচেয়ে ভালো দর। আর দর বাস্তবায়নের বিষয়ে অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি ও হস্তক্ষেপ করার সুযোগ থাকবে।’

সভায় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয় কোনো ব্যাংক এই দর না মানলে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার এখতিয়ার আছে কি-না।
জবাবে আফজাল করিম বলেন, ‘এটি সম্মিলিত সিদ্ধান্ত। আমরা আশা করছি এটা সবাই মেনে নেবে। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকও সহযোগিতা করবে। আমাদের লক্ষ্য একটি স্থিতিশীল বৈদেশিক মুদ্রা বাজার তৈরি করা।’

বাফেদা ও এবিবির এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘চাহিদা ও যোগানের ওপর নির্ভর করেই ডলারের দর নির্ধারণ হবে। বাফেদার ঘোষণা করা দর বাংলাদেশ ব্যাংককে জানালে তা গ্রহণ করা হবে এবং ব্যাংকগুলো তা অনুসরণ করছে কি-না তা পর্যবেক্ষণ করা হবে।’

ডলার বাজারে অস্থিরতা নিরাসনে করণীয় নিয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করে এবিবি ও বাফেদা। সিদ্ধান্ত হয়, বাজার পর্যালোচনা করে ডলারের দাম ঠিক করবে সংগঠন দুটি। ব্যাংকগুলো নিজেরাই এ দাম নির্ধারণ করবে। তারই অংশ হিসেবে রোববার নিজেরা সভা করে ডলারের দাম ঠিক করেন বাফেদা ও এবিবির নেতারা।

আগেও ডলারের একক দর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ব্যাংকগুলো তা কার্যকর করেনি। আমদানি বিল নগদায়ন ও রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে একেক ব্যাংক ভিন্ন ভিন্ন রেট দিয়েছে। তবে এবার সব ব্যাংকের মতামত নিয়েই ডলারের রেট ঠিক করা হয়েছে। তাই এটি সবাই বাস্তবায়ন করবে বলে প্রত্যাশা করছে এবিবি ও বাফেদা।

ডলার
Comments (0)
Add Comment