বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেলের কাজ ২ বছর দেরিতে আগামী ডিসেম্বরে শুরু হতে যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জে ডিপোর জন্য ভূমি উন্নয়নের মাধ্যমে পরিবহন খাতের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
প্রকল্পের নথি অনুযায়ী, এর কাজ শেষ করার সময়সীমা ২০২৬ সালের ডিসেম্বর। মেট্রোরেল প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) পরিচালনা পর্ষদ গত ৭ সেপ্টেম্বর ডিপোর উন্নয়নে একটি জাপানি কোম্পানির নেতৃত্বে যৌথ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে (প্যাকেজ-১)।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক বলেন, নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ফার্মের সঙ্গে একটি চুক্তি সই হবে এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রকল্পের সিভিল কাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি গতকাল রোববার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘(প্যাকেজ-১ এর জন্য) চুক্তির পর আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেলের গ্রাউন্ড ব্রেকিং অনুষ্ঠানের জন্য সময় চাইব।’ মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ নির্মাণ তত্ত্বাবধানের জন্য আগামী ২৩ অক্টোবর আরেকটি জাপানি কোম্পানির নেতৃত্বে যৌথ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই করবে।
আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন-১ বা এমআরটি-১ নামে পরিচিত এই লাইনটির কাজ শেষ হলে, দৈনিক ৮ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে সক্ষম হবে। ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার লাইনটির ২টি অংশ থাকবে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর (বিমানবন্দর রুট) পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার অংশ ভূগর্ভস্থ হবে এবং নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল (পূর্বাচল রুট) পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার হবে উড়াল।
বিমানবন্দর রুটে ১২টি স্টেশন থাকবে এবং পূর্বাচল রুটে ৯টি স্টেশন থাকবে। পূর্বাচল রুটের নর্দা ও নতুনবাজার স্টেশন থাকবে ভূগর্ভে এবং এই দুটি স্টেশন যাত্রীদের রুট পরিবর্তনের জন্য একটি ইন্টারচেঞ্জ হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
প্রকল্প নথি অনুযায়ী, হেমায়েতপুর ও ভাটারার মধ্যে চলাচলকারী মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট) নতুনবাজার স্টেশনে ইন্টারচেঞ্জ করবে। যানজট ও দূষণ নিরসনে রাজধানী ও সংলগ্ন এলাকায় নির্মাতব্য ৬টি লাইনের মধ্যে দ্বিতীয় হবে এমআরটি-১।
সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক তৈরির পরিকল্পনা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে উড়াল ও ভূগর্ভস্থ লাইন।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে এমআরটি-১ প্রকল্পের ভৌত কাজ শুরু করার পরিকল্পনা ছিল কর্তৃপক্ষের। দেরির বিষয়ে এমএএন সিদ্দিক জানান, মূলত করোনা মহামারির কারণে ভৌত কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। কারণ, অনেক বিদেশি বিশেষজ্ঞ সেই সময়ে কাজে যোগ দিতে পারেননি।
সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো আশাবাদী।’প্রকল্পের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে এমএন সিদ্দিক গত বছরের জুনে বলেছিলেন, এই লাইনে প্রতিদিন ২৫টি ট্রেন চলাচল করবে। প্রতিটি ট্রেনে প্রতিবারে ৩ হাজার যাত্রী বহন করতে পারবে। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর যেতে সময় লাগবে প্রায় ২৫ মিনিট, নতুনবাজার থেকে পূর্বাচলে ২০ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড এবং কমলাপুর থেকে পূর্বাচলে ৪০ মিনিট।