বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : একযোগে শত সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার ঘটনাকে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটি দেশের সার্বিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে। যে কোনো দুর্যোগে মানুষকে সাহায্য করা সহজ হবে, পণ্য পরিবহন এবং বিপণন দ্রুততর ও সহজ হবে।
গতকাল সোমবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ২৫টি জেলায় নবনির্মিত ১০০টি সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ৮৭৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৬টি, সিলেট বিভাগে ১৭, বরিশাল বিভাগে ১৪, ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগে ৭, ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ এবং রংপুর বিভাগে ৩টি রয়েছে।
সেতুগুলো রাজধানীর সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এগুলো ৩৩টি রুটকে ফেরি পরিষেবা থেকে মুক্ত করেছে, যা সড়ক যোগাযোগকে অবাধ, দ্রুত, সহজ এবং নিরাপদ করবে। সেতুগুলো জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, বিগত প্রায় ১৪ বছরে মহাসড়কে ১ লাখ ১৩ হাজার ৩০৩ মিটার সেতু নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণ এবং ২১ হাজার ২৬৭ মিটার কালভার্ট নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণ করেছি। তা ছাড়া, বহু সড়ককে মহাসড়কে উন্নীত করেছি, যাতে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়।
চলমান করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সৃষ্ট বৈশ্বিক মন্দা এবং খাদ্য সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা থেকে পরিত্রাণ পেতে সবাইকে সাশ্রয়ী এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার পাশাপাশি সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিচ্ছে, তার ধাক্কা যেন বাংলাদেশকে খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ আঘাতটা আসবেই। কারণ, বিশ্ব এখন একটি গ্লোবাল ভিলেজ। কাজেই, কোনো জায়গায় সমস্যা দেখা দিলে, এর অভিঘাতটা বাংলাদেশেও এসে পড়ে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশে আর কোনো অভাব হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের ফলে পার্বত্য অঞ্চলেও উন্নয়ন হচ্ছে। সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নয়ন হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। তিনি বলেন, সরকার এমনভাবে সেতু সড়ক ও মহাসড়কগুলো নির্মাণ করছে, যেন শুধু দেশের অভ্যন্তরেই নয়, আমরা এশিয়ান হাইওয়ে এবং এশিয়ান রেলের সঙ্গে যুক্ত হতে পারি। কারণ, ট্রান্স এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমাদের যোগাযোগ যাতে আরও এগিয়ে যেতে পারে, সেদিকে আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়েছি।
উন্নয়নের জন্য রূপকল্প-২০২১ অনুযায়ীই কাজ হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক ছিল না, সেখানে সেটা করেছি। কেননা, দুর্গম এলাকায় পর্যন্ত আমরা ব্রডব্যান্ড এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। এ কারণেই আজ বিভিন্ন জেলা যুক্ত করে একযোগে ১০০টি সেতুর উদ্বোধন করতে পারছি।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গণভবনের সঙ্গে ভার্চুয়ালি সুনামগঞ্জ, বরিশাল, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম জেলা প্রান্ত যুক্ত ছিল। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।