বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেছেন, ২০০ বছর ব্রিটিশ শাসন গেলো, ২৩ বছরের পাকিস্তান শাসন গেলো, অনেক সরকার এলো গেলো, এর আগে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তির পরিবেশ কোনো সরকারই করে যায়নি। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই পেরেছিলেন অশান্ত পার্বত্য অঞ্চলকে শান্ত করতে। কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি চুক্তির মাধ্যমে শান্ত পরিবেশ ফিরিয়ে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি থানার পূজগাংপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম উদ্বোধন শেষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এসব কথা বলেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা), পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, পার্বত্য জেলার সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি বাসন্তী চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুই প্রু চৌধুরী, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যেন্দ্র কুমার সরকার বক্তব্য রাখেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. নুরুল আলম চৌধুরী পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (অতিরিক্ত সচিব) ইফতেখার আহমেদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. হুজুর আলী এসময় উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বীর বাহাদুর আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে ও দেশের উন্নয়নে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমাদের প্রেরণার উৎস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের উন্নয়নে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নাই। আজ পার্বত্য জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে স্কুল কলেজ নির্মাণ করা হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে, শিক্ষা ক্ষেত্রে, যোগাযোগ ক্ষেত্রে প্রত্যেক জায়গায় উন্নয়ন হয়েছে। পাকা রাস্তা, ড্রেন, ব্রীজ, কালভার্ট, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, খিয়াম, গির্জা এমনকিছু বাদ নেই যেখানে উন্নয়ন হয়নি। একটি বাড়ি একটি খামার, মাতৃত্বকালীন ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্কভাতা সকল নাগরিক সুযোগ সুবিধা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেয়া হচ্ছে। আধুনিক শিক্ষা প্রযুক্তির ব্যবহার পার্বত্য ছেলে মেয়েরা অনায়াশেই করতে পারছে। ছেলেমেয়েরা ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোঁয়া পাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষরা কোনোদিনই এতো উন্নয়ন দেখে নাই। দুঃখ কষ্ট মানুষের মনে থাকতে পারে। যারা আমাদের দেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল না, তারাই ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। তারা প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করতে চায়। সংঘাত, অশান্তি কখনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। অহিংস বাণী নিয়ে আমাদের এগুতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। পদ্মা সেতু, কর্ণফুলি টানেল, রাস্তাঘাট, সেতু, কালভার্ট শেখ হাসিনা সরকারই করেছে। বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষ একসাথে মিলেমিশে কাজ করছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষিত হচ্ছে। নিজেদের প্রতিভা বিকশিত করতে পারছে। তিনি বলেন, পার্বত্য এলাকার মানুষ কখনো কারো বোঝা নয়। দেশের কল্যাণে, পার্বত্যবাসীর কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী আছেন এবং সবসময় থাকবেন। তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের উন্নয়ন কাজে সকলকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, ছাত্রছাত্রীদের বিনামূলে বই বিতরণ, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা অব্যাহত রেখেছেন। মন্ত্রী বলেন, আগে পার্বত্য এলাকায় কোনো মেডিকেল কলেজ ছিল না, বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না, বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার পার্বত্য জেলাগুলোতে থানা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠাসহ সকল নাগরিক সুযোগ সুবিধা প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছে।
এর আগে মন্ত্রী খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ির পূজগাংপাড়া গ্রামে কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পের আওতায় এসআইডি, সিএইচটি, ইউএনডিপি এবং জেলা পরিষদের যৌথ বাস্তবায়নাধীন কৃষি পর্ণ সংগ্রহ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য এখানে জমা করা হয়। ব্যবসায়ী আড়তদারদের মাধ্যমে পরে তা বিক্রয় করা হয়। কৃষকরা এ সুবিধা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাচ্ছেন। এর আগে মন্ত্রী খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাটিরাঙ্গা থানার গুগড়াছড়ি ইউনিয়নের মংগারামপাড়া গ্রামে মসলা চাষ পরিদর্শন করেন মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
মো. রেজুয়ান খান, জনসংযোগ কর্মকর্তা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ০১৭৯৮৭৯২২৯