বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটার তালিকায় যুক্ত হচ্ছে প্রায় ৩০ লাখ নতুন ভোটার। তারা প্রথমবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। এবারের ভোটার তালিকা হালনাগাদে তারা ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন। আগামী বছরের ২ মার্চ তাদের নাম যুক্ত করে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। সেই তালিকা দিয়েই অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নতুনদের যুক্ত করে ও মৃতদের বাদ দিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটার দাঁড়াবে প্রায় ১১ কোটি ৬০ লাখের মতো; তবে তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রকৃত ভোটার সংখ্যা জানা যাবে।
আগামী বছরের শেষে কিংবা ২০২৪ সালের শুরুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে আগামী বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝিতে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী বছরের ২ জানুয়ারি নতুন ভোটারদের যুক্ত করে খসড়া তালিকা প্রকাশ করবে ইসি। ২ থেকে ১৭ জানুয়ারি সংশোধনীর সময় দেওয়া হবে। পরে ২০২৩ সালের ২ মার্চ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে; তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সংসদীয় আসন অনুযায়ী ৩০০ এলাকার তালিকা প্রস্তুত করছে কমিশন।
এবার ভোটার তালিকা হালনাগাদে ১৫-১৭ বছর বয়সী এবং ভোটারযোগ্য বাদ পড়া মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে ২০২৩ সালে প্রায় ৩০ লাখের মতো নতুন যারা ভোটার তালিকাভুক্ত হবেন; তারা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। বাকিরা ২০২৪ ও ২০২৫ সালে আঠার বছর বা তার বেশি বয়সী হওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৭০ লাখের মতো ভোটার যুক্ত হবে। গত ২০ মে থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত দেশজুড়ে চার ধাপে ভোটারযোগ্য ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করে নির্বাচন কমিশন। এ সময় বর্তমান ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে মৃতদের তথ্য সংগ্রহও করা হয়েছে; এবার মৃত ভোটারের সংখ্য প্রায় ২০ লাখের মতো। মধ্য ডিসেম্বরে হালনাগাদের নতুন ভোটারদের ছবি তোলা, ১০ আঙুলের ছাপ, আইরিশসহ বায়োমেট্রিক নিবন্ধন শেষ হবে। এদিকে হালনাগাদ চলাকালে রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার অভিযোগে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ পাঁচটি এলাকায় মামলা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান ইসি কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘মাঠ পযায়ে একীভূত তথ্য অনলাইনে সব সময় আপডেট করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১ কোটির মতো ভোটারযোগ্য নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ছবিসহ সবাইকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। এরপর খসড়া তালিকা ও চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রকৃত ভোটার নিশ্চিত হবে। তিনি জানান, প্রতিবছর ২.৫% হারে নতুন ভোটার যুক্ত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও তিন বছর মিলিয়ে এবার তথ্য সংগ্রহ ‘টার্গেট’ ছাড়িয়েছে। প্রায় ৮ ভাগের এর উপরে হতে পারে। তিন বছরের (১৫-১৭ বছর) অনেকের তথ্য নেওয়া হলেও ২ মার্চ চূড়ান্ত তালিকায় যারা যুক্ত হবে তারাই আগামী দ্বাদশ সংসদ ভোট দিতে পারবেন।
সর্বশেষ ২০২২ সালের ২ মার্চ দেশের মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন। ভোটার হওয়া চলমান প্রক্রিয়া থাকায় বর্তমানে এখন ভোটার সংখ্যা আরও কয়েক লাখ বেশি রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, নতুনদের যুক্ত করে ও মৃতদের বাদ দিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটার দাঁড়াবে প্রায় ১১ কোটি ৬০ লাখের মতো হতে পারে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, তথ্য সংগ্রহ হয়েছে ১,০২,১৪,৩০৪ নাগরিকের (৮.৮৯%)। এর মধ্যে পুরুষ ৫ কোটি ২৮ লাখের মতো এবং নারী ৪ কোটি ৯৩ লাখের বেশি। আর হিজড়া দুই সহস্রাধিক নাগরিক। মৃত ভোটারের তথ্য সংগ্রহ হয়েছে ২০ লাখের মতো। যার মধ্যে পুরুষ ১১,৮২,০২৩ এবং নারী ৮,৩৫,৪৭৩।