নিজস্ব প্রতিনিধি : স্বাধীনতার ৫১ বছর পর মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ শিউলীর কবর খুঁজে বের করেছেন স্মরণে ৭১ প্রজন্ম, পাবনার সদস্যরা। শনিবার ১০ ডিসেম্বর, শহীদ শিউলীর পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ী কেন্দ্রীয় কবরস্থানে শহীদ সমাধিতে নাম ফলক স্থাপন করেন তারা। এসময় সেখানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
শহীদ শিউলীর বোন এডভোকেট মোমেনা খানম জানান, ১৯৭১ সালে আমার বাবা আরেজ খান ডাক বিভাগে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে চাকরি করতেন। স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেয়ায় তাকে পরিবারসহ আত্মগোপনে যেতে হয়। আমরা গোদাগাড়ীর রামনগরে আশ্রয় নিলে, ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বোমারু বিমান সেখানে শেল নিক্ষেপ করে। শেলের আঘাতে আমার বোন মারা যায়। পরে, রামনগর গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। স্বাধীনতার পর আমরা গোদাগাড়ী ছেড়ে চলে আসলে শহীদ শিউলী চলে যায় বিস্মৃতির অতলে।
তিনি আরও বলেন, স্মরণে ৭১ প্রজন্ম ফোরাম আমার মা সহ পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে শহীদ শিউলির সমাধি খুঁজে বের করে, সেখানে নামফলক স্থাপন করেছে। কবর খুঁজে পেতে সহযোগিতা করেছে। আমরা তাদের নিকট চিরকৃতজ্ঞ।
স্মরণে ৭১ প্রজন্ম পাবনার চেয়ারম্যান হাসান জাহিদ কমল জানান, মুক্তিযুদ্ধের ৫১ বছর পার হলেও স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগকারী শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা আজও তৈরি হয়নি। গণকবর গুলো অরক্ষিত, গণহত্যার অনেক ইতিহাস আজ বিস্মৃতপ্রায়। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মত্যাগের ইতিহাস তুলে ধরতে, গণকবর ও শহীদ স্মৃতি সংরক্ষণে কাজ করছে স্মরণে ৭১ প্রজন্ম ফোরাম। ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শহীদ শিউলির কবর খুঁজে বের করে স্মৃতি সংরক্ষণে নামফলক স্থাপন করেছে স্মরণে ৭১ প্রজন্ম ফোরাম। আমরা চাই মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদের সমাধি রাষ্ট্রীয় ভাবে সংরক্ষণে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।
নামফলক স্থাপনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, স্মরণে ৭১ প্রজন্ম ফোরাম পাবনার ভারপ্রাপ্ত প্রধান সমন্বয়কারী তোফাজ্জ্বল হোসেন মামুন, সদস্য মাহফুজ আহমেদ সোহেল, সাইফুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম মিন্টু, মাসুদ, শহীদ শিউলীর মা আনোয়ারা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা।