বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : মেট্রো রেল সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গঠন হচ্ছে পুলিশের স্বতন্ত্র বিশেষ ইউনিট। বিশেষায়িত এই ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট বা এমআরটি পুলিশ ইউনিট পরিচালনায় থাকবেন ৩৫৭ জন পুলিশ সদস্য। এর মধ্যে তিনজন ক্যাডার ও ৩৫৪ জন নন-ক্যাডার কর্মকর্তা থাকবেন। এসব কর্মকর্তার মধ্যে কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক কাজে ৬০ জন এবং এমআরটি লাইন-৬ বা উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে কাজ করবেন ২৯৭ জন পুলিশ সদস্য।
মেট্রো রেলের নিরাপত্তায় পুলিশের ৩৫৭টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব আগামী সোমবার প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে উঠতে যাচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদসচিব কবির বিন আনোয়ারের সভাপতিত্বে সোমবার সচিবালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমান মন্ত্রিপরিষদসচিবের সভাপতিত্বে এটি হবে প্রথম বৈঠক। সচিব কমিটির অনুমোদন পাওয়ার পর প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন পাওয়ার পরই এই ইউনিট চালু হবে।
সচিব কমিটির স্থায়ী সদস্য হলেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ১৪ জন জ্যেষ্ঠ সচিব ও সচিব। এবারের বৈঠকে ২১টি আলোচ্যসূচির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরো আটজন সচিব উপস্থিত থাকবেন। মন্ত্রিপরিষদসচিবের পূর্বানুমতি ব্যতীত বৈঠকে কোনো প্রতিনিধি পাঠাতে নিষেধ করা হয়েছে। সচিব কমিটির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মেট্রো রেলের নতুন লাইন স্থাপিত হলে পুলিশের আরো পদ সৃষ্টি করা হবে। তবে কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক কাজের জন্য ভবিষ্যতে নতুন পদ সৃষ্টি করা হবে না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মেট্রো রেল বড় একটি প্রকল্প, আর এই ইউনিট গঠন হলেও ঢাকা মহানগর পুলিশের বড় একটা অংশ নিরাপত্তায় কাজ করছে। এই ইউনিটের সদর দপ্তর থাকবে পূর্বাচলে। মেট্রো রেল বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিটের (ডিএমটিসিএল) চাহিদা অনুযায়ীই এমআরটি পুলিশ গঠন করা হচ্ছে। এই ইউনিটের প্রধান থাকবেন একজন ডিআইজি। এ ছাড়া একজন এসপি (পুলিশ সুপার) ও একজন অতিরিক্ত এসপি থাকবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, এমআরটি পুলিশের পদ সৃষ্টি হলেই পুলিশ নিরাপত্তার কাজ শুরু করবে। পদ সৃষ্টি হলে নিয়োগপ্রক্রিয়া কবে শুরু হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তবে এ জন্য কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। সেটা শেষ হওয়ার পর নিশ্চয়ই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। ’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামী ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রো রেল উদ্বোধন করবেন। এর পর প্রতিটি স্টেশনে একটি কন্ট্রোল রুম থাকবে। মেট্রো রেলের পক্ষ থেকে থাকবেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও। মেট্রো রেলে প্রতিদিন যাতায়াত করবে হাজারো যাত্রী। প্রতিটি স্টেশনে এটিএম বুথ, ইলেকট্রিক সরঞ্জাম ও দোকান থাকবে; যে কারণে প্রতিটি স্টেশনে পুলিশ ফাঁড়ির প্রস্তাব করেছে ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ সদর দপ্তর ও ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, শুরুর দিকে রেলওয়ে পুলিশের অধীনে মেট্রো রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার বিষয়ে পরিকল্পনা হয়। তবে ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি সভায় প্রধানমন্ত্রী মেট্রো রেলের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য স্বতন্ত্র বিশেষায়িত এমআরটি পুলিশ ফোর্স দ্রুত গঠনের অনুশাসন দেন। এমআরটি পুলিশ ইউনিট গঠনে ২০২১ সালের মাঝামাঝিতে পুলিশ সদর দপ্তর ৮০৯ জন সদস্যের জনবলের একটি কাঠামো গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায়। তবে ৩৫৭ পদ সৃষ্টি অনুমোদন দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগ। এরপর গত এপ্রিলে সচিব কমিটির বৈঠকে পাঠানো হলে বিষয়টি আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক পুনরায় উপস্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়।