বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : ১৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি এবং ১৫৩ কোটি ৬০ লাখ ৪৮ হাজার টাকা দিয়ে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানি করবে সরকার। এতে মোট ৩০৭ কোটি ৪৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকা খরচ হবে। অন্যদিকে তিন প্রকল্পে ১৬৮২ কোটি টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া টিসিবির জন্য কেনা হবে ২ কোটি ৯ লাখ লিটার সয়াবিন তেল। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এসব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সভার সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।
তিনি বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে মরক্কোর ওসিপি, এসএ থেকে ৩০ হাজার টন টিএসপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় এই সার আমদানি করা হবে। এর জন্য ব্যয় হবে ১৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের মাধ্যমে আরব আমিরাতের ফার্টিগেস্নাব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সারও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় আমদানি করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৫৩ কোটি ৬০ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। সাঈদ মাহবুব খান জানান, সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় মোট ৯টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এর সবকটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চারটি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের একটি, সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের একটি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি প্রস্তাবনা রয়েছে। অনুমোদন দেওয়া ৯টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ দুই হাজার ৪০৫ কোটি ৪৬ লাখ ৪৮ হাজার ৬৬৭ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে ৯৩২ কোটি ১৬ লাখ ৭৮ হাজার ৫১৬ টাকা এবং এডিবি, জাইকা ও দেশীয় ব্যাংক ঋণ এক হাজার ৪৭৩ কোটি ২৯ লাখ ৭০ হাজার ১৫১ টাকা।
টিসিবির জন্য কেনা হবে ২ কোটি ৯ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এদিকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য দুই কোটি ৯ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে খরচ হবে ৩৩৪ কোটি ৩৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা। সয়াবিন তেলের পাশাপাশি সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটির জন্য ৮১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা দিয়ে ৮ হাজার টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে সেনা এডিবল অয়েল ইন্ডাস্টির কাছ থেকে ৪৪ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৮১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি লিটারের দাম পড়বে ১৮৪ টাকা ৫০ পয়সা। একই সঙ্গে স্থানীয়ভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে শুন শিং এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা।
এজন্য ব্যয় হবে ১০১ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি লিটারের দাম পড়বে ১৮৪ টাকা ৫০ পয়সা। এছাড়া সভায় আন্তর্জাতিক সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ওমানের জাদ আল রাহিল ইন্টারন্যাশনাল এলএলসি সুলতানাত থেকে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫১ কোটি ৭৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি লিটারের জন্য খরচ হবে ১৩৭ টাকা ৯৪ পয়সা। অন্যদিকে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ভারতের আরবেল বাকলিয়াত হুবুবাত সান্তিক এএস থেকে ৮ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ৮১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। আরবেল বাকলিয়াত হুবুবাত সান্তিক এএস-এর লোকাল এজেন্ট বিআইএনকিউ। তিন প্রকল্পে ১৬৮২ কোটি টাকা ব্যয়ের অনুমোদন তিনটি প্রকল্পের জন্য এক হাজার ৬৮২ কোটি ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬৬৮ টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় ‘শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি’র প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের ৫টি প্যাকেজের জন্য ৪২৪ কোটি ৫৪ লাখ ৮৬ হাজার ৪৮৬ টাকা ব্যয় হবে। এছাড়াও ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের একটি প্যাকেজের জন্য ব্যয় হবে এক হাজার ২৩২ কোটি ৯৫ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮১ টাকা।
একই সঙ্গে চট্টগ্রামে ‘কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প (ফেজ-২)’-এর জন্য অতিরিক্ত ২৪ কোটি ৫২ লাখ ৪ হাজার ৬০১ টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান জানান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ‘শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজির প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ’ প্রকল্পের প্যাকেজ ডবিস্নউডি-৫, ১৬, ১৭, ২৭ এবং ২৭ পূর্ত কাজ ৪২৪ কোটি ৫৪ লাখ ৮৬ হাজার ৪৮৬ টাকায় কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি। ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এই সেবা নেওয়া হবে। সাঈদ মাহবুব খান বলেন, সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের একটি লটের পূর্ত কাজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ডবিস্নউপি-০৩ প্যাকেজের ডিএস-০৫ লটের পূর্ত কাজ এক হাজার ২৩২ কোটি ৯৫ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮১ টাকায় কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জয়েন্ট ভেঞ্চারে চীনের হিগো এবং বাংলাদেশের মীর আক্তার এই পূর্ত কাজ করবে। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃক ‘কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প (ফেজ-২)’-এর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এনআইজি কলসানট্যান্ট কোম্পানি লিমিটেডকে ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ২৪ কোটি ৫২ লাখ ৪ হাজার ৬০১ ব্যয় বৃদ্ধির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।