বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : পুলিশের সরঞ্জাম বিক্রিতে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে। যথাযথ আইন মেনে পুলিশের সরঞ্জাম বিক্রি করতে হবে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিবি পুলিশ পরিচয় দিলেই গাড়িতে উঠবেন না। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে ডিবি পুলিশ পরিচয়দান কারীদের পরিচয় নিশ্চিত হবেন।’ ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতিতে জড়িত ৫ ডাকাত গ্রেপ্তারের পর এমনটাই জানালেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ। সোমবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান আরও জানান, ১ জানুয়ারি ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন, পীযূষ সুর, হারুন, জোবায়ের হোসেন পারভেজ, আরিফ হোসেন ও খোকন চন্দ্র দেবনাথ। তাদের কাছে ডাকাতিতে ব্যবহৃত ২টি মাইক্রোবাস, একটি প্রাইভেটকার, দুটি পুলিশের রিফ্লেক্টিং ভেস্ট (নকল) ও এক জোড়া হ্যান্ডকাফ পাওয়া গেছে। ডিআইজি হারুন অর রশীদ বলেন, বিদায়ী বছরের ১৩ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে মতিঝিলের সিটি সেন্টার এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করে গ্রেপ্তাররা। তারা কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে করে ডাকাতি করে। গাড়ির সামনের কাঁচে ডিবি পুলিশ লেখা ছিল। গাড়ি থেকে নেমে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়। যাত্রীর কাছে অবৈধ জিনিস থাকার অভিযোগ এনে তাকে গাড়িতে তোলে। গাড়িতে উঠতে না চাইলে তাকে মারধর করে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নেয় এবং হাতে হ্যান্ডকাফ পরায়। এরপর যাত্রীর সঙ্গে থাকা ৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকার সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা, একটি মোবাইল ফোন ও কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। যাত্রীকে মতিঝিল শাপলা চত্বর, দোলাইরপাড় টোলপস্নাজা, ধলেশ্বরী টোলপস্নাজা ও কুচিয়ামারা ব্রিজ হয়ে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেস সড়কের নির্জন জায়গায় রাত পৌনে ৯টার দিকে হ্যান্ডকাফসহ নামিয়ে দেয়। পরে গাড়িটি মাওয়ার দিকে চলে যায়। ডিবিপ্রধান বলেন, বিদায়ী বছরের ২৬ ডিসেম্বর এ ঘটনায় মতিঝিল থানায় মামলা হয়। মামলাটির ছায়াতদন্ত করার সময় ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস ঢাকার পশ্চিম নাখালপাড়া থেকে উদ্ধার হয়। পরে মাইক্রোবাসের সূত্র ধরেই গ্রেপ্তার করা হয় ওই ৫ জনকে। ডাকাতিতে ব্যবহৃত গাড়িগুলোও জব্দ করা হয়। ডিআইজি হারুন অর রশীদ জানান, তাদের মূল টার্গেট ব্যাংকে মোটা অঙ্কের টাকা জমাদানকারী ও উত্তোলনকারীরা। এ ছাড়া মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবসায়ীরাও তাদের টার্গেট। তারা দুই ভাগে ভাগ হয়ে ডাকাতি করত। এক ভাগ তথ্য সংগ্রহ করত। অপর দল তথ্য মোতাবেক ডাকাতি করত। গ্রেপ্তারদের দলনেতা শহীদুল ইসলাম মাঝি পলাতক। তার সারা দেশে ১৬টি মামলা আছে। শহীদুল ডিবি পুলিশের হাতে একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছিল। ডিবিপ্রধান সবাইকে অনুরোধ করে বলেন, এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে ডিবি পুলিশ কিনা সেটা নিশ্চিত হতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করবেন। ডিবি পুলিশ বললেই গাড়িতে উঠবেন না। এমন ঘটনার শিকার হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ করবেন। যায়যায়দিনের এক প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি হারুন অর রশীদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরঞ্জাম বিক্রির ক্ষেত্রে যথাযথ আইন মানতে হবে। অন্যথায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সরঞ্জাম বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হ্যান্ডকাফের মতো সরঞ্জাম কিভাবে প্রতারক চক্রের হাতে যায়, সে বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।