দেশের প্রথম গ্রিন ইকোনমিক জোন সিরাজগঞ্জে, কাজ পাবে ৫ লাখ মানুষ

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : যমুনা নদীর কোলঘেঁষে সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে এক হাজার ৮১ একর জায়গায় গড়ে উঠছে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত দেশের প্রথম সবুজ অর্থনৈতিক অঞ্চল। নির্মাণাধীন এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভূমি উন্নয়নের ৬০ শতাংশ কাজ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশি ও বিদেশি ১৪টি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে যৌথভাবে ১১০ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে। বাকি জমির জন্য সৌদি আরব, জাপান, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নরওয়েসহ কয়েকটি দেশের বিনিয়োগকারীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে কর্তৃপক্ষ। অর্থনৈতিক অঞ্চলটিতে ভূমি উন্নয়নের কাজে প্রকৌশলগত সহায়তা দিচ্ছে জাপান ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (জেডিআই)।

সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিচালক শেখ মনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে জানান, এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে মোট ৪০০টি প্লট হবে। প্লটগুলোতে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে পর্যায়ক্রমে পাঁচ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সেইসঙ্গে এ অঞ্চলে কারখানা স্থাপন, পণ্য পরিবহন, শিল্প-সংশ্লিষ্ট কর্মীদের শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানসহ সব স্তরেই সবুজ পরিবেশ বজায় রাখা হবে।

পুরো প্রকল্পটি সবুজ রাখতে মোট জমির ৬০ শতাংশ কারখানার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বাকি জমিতে খেলার মাঠ, জলাধার, বন, বিনোদন কেন্দ্র, হাসপাতাল, কারিগরি ইনস্টিটিউট, কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি), রেইন আটার হার্ভেস্ট্রিং সিস্টেম, সোলার প্যানেল পার্কসহ নানা অবকাঠামো গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।

শেখ মনোয়ার হোসেন বলেন, এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থাপিত সব প্রতিষ্ঠান শতভাগ সারফেস ওয়াটার বা ভূমির উপরিভাগের পানি ব্যবহার করবে। যমুনা নদী থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি তুলে কারখানায় নেওয়া হবে। কারখানায় ব্যবহৃত ওই পানি এবং সিইটিপির মাধ্যমে পুনরায় ব্যবহারোপযোগী করে তোলা হবে। বৃষ্টির পানি ধারণ করে রেখে তা সারা বছর ব্যবহারের জন্য রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং সিস্টেম স্থাপন করা হবে। বায়ু ও শব্দদূষণ থেকে রক্ষার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের চেয়ারম্যান মতিন চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, এ অঞ্চলে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের পণ্য উৎপাদনের জন্য অনেকে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। তাদের জন্য বিদ্যুৎ, পানিসহ অন্যান্য সেবা নিশ্চিত করা হবে। সবমিলিয়ে এটি হবে একটি বাণিজ্যিক এলাকা।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন জাগো নিউজকে বলেন, যমুনার পাড়ে প্লাটিনাম গ্লিন কনসেপ্টে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠবে। এতে গ্রামীণ জীবনের স্বকীয়তা বজায় রেখে উন্নয়নের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে শিল্পকর্ম।

সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু ইউসুফ সূর্য জাগো নিউজকে বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু চালুর পর উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলায় মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা যে হারে উন্নতি হওয়ার কথা ছিল, সেভাবে হয়ে ওঠেনি। তবে এটি সম্পন্ন হলে এ অঞ্চলের বেকার সমস্যা অনেকাংশেই দূর হবে। সেইসঙ্গে সড়ক, রেল এবং নৌপথের সরাসরি যোগাযোগ থাকায় কাঁচামাল আনা ও উৎপাদিত পণ্য পরিবহনে বাড়তি সুবিধা পাবেন বিনিয়োগকারীরা।

গ্রিন ইকোনমিক জোনগ্রিন ইকোনমিক জোন সিরাজগঞ্জ
Comments (0)
Add Comment